বিষ্ণোইয়ের কাছে ক্ষমা চাইবেন না সালমান খান
ভারতীয় রাজনীতিক বাবা সিদ্দিকির ওপর গুলি চলার পর থেকে বেশ ভয়ে ভয়ে আছে বলিউডের খান পরিবার। এমনকি, সালমানের নিরাপত্তার জন্য বিগ বসের সেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ভাইজানকে বলতে শোনা গিয়েছে, তাঁর চিন্তায় শরীর খারাপ তাঁর মা-বাবার।
এদিকে, সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে সালমানের বাবা সেলিম খান জানিয়েছেন, বিষ্ণোইদের কাছে তাঁর ছেলের ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ এরকম কোনো অপরাধ সালমান করেননি।
সেলিম খান বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া মানে তো অপরাধ স্বীকার করা। সালমান কখনো কোনো প্রাণীকে হত্যা করেননি। এমনকি আমরা কোনো আরশোলাও মারিনি। আমরা এসবে (প্রাণী হত্যায়) বিশ্বাস করি না।’
এখানে থেমে না থেকে সেলিম আরও বললেন, ‘সালমানকে কার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে? আপনি কত মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, কত পশুর জীবন বাঁচিয়েছেন?’
সেলিম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর ছেলে কোনো অপরাধই করেনি। তিনি বলেন, ‘ও কি কোনো অপরাধ করেছে? আপনি কি তাকে দেখেছেন করতে? আপনি কি বিষয়টি তদন্ত করেছেন? এমনকি আমরা কোনোদিন কোনো বন্দুকও ব্যবহার করিনি। ও তো ওখানে ছিল না (যখন কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করা হয়)। ও পশুদের ভালোবাসে।’
সেলিম আরও জানান, সালমানকে ভয় দেখাতে বিষ্ণোইরা খুন করেছে বাবা সিদ্দিকিকে, একথা মানতে মোটেও রাজি নন তিনি। বললেন, ‘না, আমার মনে হয় না এর মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে। এর সঙ্গে বাবা সিদ্দিকের কী সম্পর্ক? এরকম যে কোনো গল্প আমরা বানাতে পারি। তুমি আমাকে সালাম দাওনি, আমি তোমাকে মেরে ফেলব?’
গত ১২ অক্টোবর রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের বিধায়ক ছেলে জিশান সিদ্দিকির অফিসের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয় ভারতের এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে। পরে দুই বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করা হয় এই ঘটনায়। বাবা সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডে বন্দুকবাজদের আগ্নেয়াস্ত্র ও লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুম্বাই পুলিশের এক কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সাল থেকে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হিট তালিকায় রয়েছেন সালমান। ওই বছর ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ে গিয়ে রাজস্থানে একটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করেন সালমান। আর এই বিষ্ণোই গ্যাং কৃষ্ণসার হরিণকে মাতৃরূপে পূজা করে। সেই সময় লরেন্সের বয়স ছিল ৫ বছর। কিন্তু তখন থেকেই সালমানকে খুন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন লরেন্স। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের প্রধান লরেন্স এক পুরনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘সালমানকে হত্যা করাই লক্ষ্য। আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই।’
কিন্তু সালমান যদি একটি কাজ করেন, তাহলে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সেই সাক্ষাৎকারে লরেন্সকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কী করলে সালমানকে তাঁরা ক্ষমা করবেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের, বিষ্ণোইদের একটা মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরের নাম মুকাম (মুকাম মুক্তিধাম মন্দির)। এই মন্দিরে গিয়ে সালমান যদি ক্ষমা চান এবং বলেন, যা করেছেন, তা ভুল করে করেছেন। মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। এক কথায়, সালমানকে মুকাম মন্দিরে এসে ক্ষমা চাইতে হবে।’ সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস