০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরের সাবেক দুই ডিসির দুর্নীতি তদন্তের দাবি জনগণের

প্রতিনিধির নাম
ফরিদপুরের সাবেক দুই জেলা প্রশাসক হেলাল উদ্দীন ও উম্মে তানজিয়া সালমা। বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ফরিদপুর কর্মরত অবস্থায় সাবেক মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বিয়াই খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর সাথে সু সম্পর্ক রেখে সকল প্রকার নৈতিক ও অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। নির্যাতন করেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। কাজ করেছে এজেন্ডা বাস্তবায়নের। হেলাল উদ্দীন ফরিদপুরে জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদান করে ২৫/৩/০৯ ইং সালে এবং ১৭/১২/১২ ইং সাল পযর্ন্ত জেলা প্রশাসক থাকে। তারপর ফরিদপুরে জেলা প্রশাসক হিসাবে ১৫/৯/১৬ সালে যোগদান করে উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি কর্মরত ছিলেন ২০/৬/১৯ ইং পযর্ন্ত।
হেলাল উদ্দীন ও উম্মে  সালমা তানজিয়ার কিছু অপকর্ম ও দুর্নীতি পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো – হেলাল উদ্দিন নামা :
প্রথমে তার ছেলে ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এস এস সি পরীক্ষা দেয় এবং তার পরীক্ষা কেন্দ্র পরে ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ‍্যালয়ে। জেলা স্কুলের এক শিক্ষকের মাধ্যমে কিছু পরীক্ষায় খাতা সহযোগিতা করার এ দৃশ্য দেখে শিক্ষককে আটক করে ফরিদপুরের ডি বি পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশ বিভাগের সাথে বিতর্কে পরে যান হেলাল। তখন ফরিদপুর পুলিশ সুপার ছিলেন আওলাদ হোসেন ফকির এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন বিজয় বসাক।
ডিসির ছেলে নকল করেছে এ নিয়ে ফরিদপুরে তোলপার। এ নিয়ে খবরের কাগজে নিউজ করে স্হানীয় দৈনিক পত্রিকা, দৈনিক গনসংহতি। ডি সি হেলাল উদ্দীন রেগে খেপে উঠেন। বিভিন্ন কৌশলে দৈনিক গনসংহতি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয় এবং লোক নিয়োজিত করে রাজবাড়ী, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলা মামলা দেওয়া হয় সম্পাদক আশিষ পোদ্দার বিমানের নামে ও তার স্ত্রী সরকারি কর্মকর্তার নামে ও প্রথমে আশিষ পোদ্দার বিমান হেলাল উদ্দীন এর পত্রিকা বাতিলের আদেশ চ‍্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। মাননীয় হাইকোর্ট জেলা প্রশাসক হেলাল উদ্দীনের আদেশ বাতিল করে দৈনিক গনসংহতি পত্রিকা নিয়মিত বাহির করার আদেশ দেন। হেলাল উদ্দীন ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার এক অসহায় কৃষকের জমি তার ক্ষমতা বলে স্হানীয় এক জুট মিলকে অধিগ্রহণ করে দখল করে দেয়। সরকারি আইন আছে একজন জেলা প্রশাসক যদি সরকারের নিজস্ব প্রয়োজনে কারো জমি অধিগ্রহণ করতে পারবেন ) কিন্তু বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের জন‍্য নয়। এ ধরনের অনেক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং  সাবেক মন্ত্রী খন্দকার
মোশাররফ হোসেনকে ব‍্যবহার করে ভালো ভালো দপ্তরে পোস্টিং নিয়েছে যা গোপনীয় ভাবে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।
উম্মে সালমা তানজিয়া নামা :
অপর দিকে ফরিদপুরের সাবেক ডি সি উম্মে সালমা তানজিয়া ততকালীন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কে ব‍্যবহার করে বিভিন্নভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দায়িত্বশীল ব‍্যক্তিরা জানান, উম্মে সালমা তানজিয়া মন্ত্রীকে খুশী রাখার জন‍্য ফরিদপুর মহাবিদ্যালয় কে নাম পরিবর্তন করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন মহাবিদ্যালয় নামকরন করে। এতে তাকে সহযোগিতা করে ততকালীন শিক্ষা বোর্ডের মহা পরিচালক মাহাবুবুর রহমান। শুধু তাই না, মন্ত্রীর কয়েক অনুসারীরা তাকে ঢাকায় ফ্লাট ও কিনে দেয়। উম্মে সালমা তানজিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ভাংগা উপজেলার একাধিক ভূমি মালিকেদের। পদ্মা সেতুর সাথে রেলওয়ে সংযুক্ত হবে কিন্তু সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণ পৃর্বেই এলাকার যারা গরীব মানুষ  তাদের কে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিছু নিজস্ব ব‍্যক্তির নামে জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে ঐ জমি রেলওয়ের নামে অধিগ্রহণ শুরু করলে উম্মে সালমা কম দামে কেনা ঐ সকল জমি অধিক দামে অধিগ্রহণ করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নীল নকশার একজন কারিগর এই উম্মে সালমা তানজিয়া। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ভালো ভালো অনেক সাংবাদিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন‍্য অনুমতি (কার্ড) দেয়নি তিনি। বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের শতাধিক ব‍্যক্তিদের পর্যবেক্ষণের কার্ড দিয়ে ছিল যা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
উপরোক্ত অভিযোগ গুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে সাবেক দুই জেলা প্রশাসকের অনেক দুর্নীতি বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন সচেতন ফরিদপুর বাসীরা।
উল্লেখ্য, ফরিদপুরের সাবেক  দুই ডিসি এখনো অন্তর্বর্তী সরকার আমলে ও ভালো জায়গায় কর্মরত। বর্তমানে উম্মে সালমা তানজিয়া ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার আর হেলালউদ্দীন পিএসসির সদস্য হিসাবে আছে বলে জানা যায়। এসব আওয়ামী পান্ডাদের  গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে অপসারণ না করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমুর্তিক্ষন্নসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করে সচেতন মহলের  জনগণেরা। তারা আরো জানান, এই নতুন বাংলাদেশে এসব ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের নিরেপক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমুলক শান্তি প্রদানের জোড়ালো দাবি জানান।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০১:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
১৮৫ জন দেখেছেন

ফরিদপুরের সাবেক দুই ডিসির দুর্নীতি তদন্তের দাবি জনগণের

আপডেট : ০১:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
ফরিদপুরের সাবেক দুই জেলা প্রশাসক হেলাল উদ্দীন ও উম্মে তানজিয়া সালমা। বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ফরিদপুর কর্মরত অবস্থায় সাবেক মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বিয়াই খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর সাথে সু সম্পর্ক রেখে সকল প্রকার নৈতিক ও অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। নির্যাতন করেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। কাজ করেছে এজেন্ডা বাস্তবায়নের। হেলাল উদ্দীন ফরিদপুরে জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদান করে ২৫/৩/০৯ ইং সালে এবং ১৭/১২/১২ ইং সাল পযর্ন্ত জেলা প্রশাসক থাকে। তারপর ফরিদপুরে জেলা প্রশাসক হিসাবে ১৫/৯/১৬ সালে যোগদান করে উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি কর্মরত ছিলেন ২০/৬/১৯ ইং পযর্ন্ত।
হেলাল উদ্দীন ও উম্মে  সালমা তানজিয়ার কিছু অপকর্ম ও দুর্নীতি পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো – হেলাল উদ্দিন নামা :
প্রথমে তার ছেলে ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এস এস সি পরীক্ষা দেয় এবং তার পরীক্ষা কেন্দ্র পরে ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ‍্যালয়ে। জেলা স্কুলের এক শিক্ষকের মাধ্যমে কিছু পরীক্ষায় খাতা সহযোগিতা করার এ দৃশ্য দেখে শিক্ষককে আটক করে ফরিদপুরের ডি বি পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশ বিভাগের সাথে বিতর্কে পরে যান হেলাল। তখন ফরিদপুর পুলিশ সুপার ছিলেন আওলাদ হোসেন ফকির এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন বিজয় বসাক।
ডিসির ছেলে নকল করেছে এ নিয়ে ফরিদপুরে তোলপার। এ নিয়ে খবরের কাগজে নিউজ করে স্হানীয় দৈনিক পত্রিকা, দৈনিক গনসংহতি। ডি সি হেলাল উদ্দীন রেগে খেপে উঠেন। বিভিন্ন কৌশলে দৈনিক গনসংহতি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয় এবং লোক নিয়োজিত করে রাজবাড়ী, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলা মামলা দেওয়া হয় সম্পাদক আশিষ পোদ্দার বিমানের নামে ও তার স্ত্রী সরকারি কর্মকর্তার নামে ও প্রথমে আশিষ পোদ্দার বিমান হেলাল উদ্দীন এর পত্রিকা বাতিলের আদেশ চ‍্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। মাননীয় হাইকোর্ট জেলা প্রশাসক হেলাল উদ্দীনের আদেশ বাতিল করে দৈনিক গনসংহতি পত্রিকা নিয়মিত বাহির করার আদেশ দেন। হেলাল উদ্দীন ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার এক অসহায় কৃষকের জমি তার ক্ষমতা বলে স্হানীয় এক জুট মিলকে অধিগ্রহণ করে দখল করে দেয়। সরকারি আইন আছে একজন জেলা প্রশাসক যদি সরকারের নিজস্ব প্রয়োজনে কারো জমি অধিগ্রহণ করতে পারবেন ) কিন্তু বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের জন‍্য নয়। এ ধরনের অনেক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং  সাবেক মন্ত্রী খন্দকার
মোশাররফ হোসেনকে ব‍্যবহার করে ভালো ভালো দপ্তরে পোস্টিং নিয়েছে যা গোপনীয় ভাবে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।
উম্মে সালমা তানজিয়া নামা :
অপর দিকে ফরিদপুরের সাবেক ডি সি উম্মে সালমা তানজিয়া ততকালীন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কে ব‍্যবহার করে বিভিন্নভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দায়িত্বশীল ব‍্যক্তিরা জানান, উম্মে সালমা তানজিয়া মন্ত্রীকে খুশী রাখার জন‍্য ফরিদপুর মহাবিদ্যালয় কে নাম পরিবর্তন করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন মহাবিদ্যালয় নামকরন করে। এতে তাকে সহযোগিতা করে ততকালীন শিক্ষা বোর্ডের মহা পরিচালক মাহাবুবুর রহমান। শুধু তাই না, মন্ত্রীর কয়েক অনুসারীরা তাকে ঢাকায় ফ্লাট ও কিনে দেয়। উম্মে সালমা তানজিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ভাংগা উপজেলার একাধিক ভূমি মালিকেদের। পদ্মা সেতুর সাথে রেলওয়ে সংযুক্ত হবে কিন্তু সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণ পৃর্বেই এলাকার যারা গরীব মানুষ  তাদের কে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিছু নিজস্ব ব‍্যক্তির নামে জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে ঐ জমি রেলওয়ের নামে অধিগ্রহণ শুরু করলে উম্মে সালমা কম দামে কেনা ঐ সকল জমি অধিক দামে অধিগ্রহণ করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নীল নকশার একজন কারিগর এই উম্মে সালমা তানজিয়া। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ভালো ভালো অনেক সাংবাদিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন‍্য অনুমতি (কার্ড) দেয়নি তিনি। বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের শতাধিক ব‍্যক্তিদের পর্যবেক্ষণের কার্ড দিয়ে ছিল যা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
উপরোক্ত অভিযোগ গুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে সাবেক দুই জেলা প্রশাসকের অনেক দুর্নীতি বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন সচেতন ফরিদপুর বাসীরা।
উল্লেখ্য, ফরিদপুরের সাবেক  দুই ডিসি এখনো অন্তর্বর্তী সরকার আমলে ও ভালো জায়গায় কর্মরত। বর্তমানে উম্মে সালমা তানজিয়া ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার আর হেলালউদ্দীন পিএসসির সদস্য হিসাবে আছে বলে জানা যায়। এসব আওয়ামী পান্ডাদের  গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে অপসারণ না করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমুর্তিক্ষন্নসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করে সচেতন মহলের  জনগণেরা। তারা আরো জানান, এই নতুন বাংলাদেশে এসব ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের নিরেপক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমুলক শান্তি প্রদানের জোড়ালো দাবি জানান।
বাখ//আর