০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর অবস্থানে গলাচিপা উপজেলা প্রশাসন

প্রতিনিধির নাম

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আগুনমুখা, দাড়চিড়া, তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ এর যৌথ অভিযানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার সময় ৩০ কেজি মা ইলিশ ও ১০ হাজার মিটার জাল (যার আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা) জব্দ করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১০ টা- সকাল ৮টা পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী আগুনমুখা, দাড়চিড়া ও তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী ।

জানা যায়, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ পরিচালনার সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরার সময় ৩০ কেজি মা ইলিশের সাথে ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাছ দুটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয় এবং জালগুলো পানপট্টি লঞ্চঘাটে নদীর তীরে বসে পোড়ানো হয়।

গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার আজ ৭ম দিন। ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ আছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে এ অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং জব্দকৃত ৩০কেজি ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। পরে ১০হাজার মিটার কারেন্ট উদ্ধার জালগুলি জনগনের সামনে বিনষ্ট করা হয়। জনস্বার্থে আমাদের মৎস্য বিভাগের সাথে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সহযোগিতায় এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। ”

সারারাত মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ছিলেন গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, “একটি মা ইলিশের পেটে ২৫ লাখ ডিম থাকে। নিষেধাজ্ঞার যে ২২ দিন সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে সে সময়টুকুতে প্রায় ৮০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। মা ইলিশ বা জাটকা ধরে ফেললে পরবর্তী বছর ইলিশের উৎপাদন কমে যাবে। ইলিশের উৎপাদন কমে গেলে যারা ইলিশ আহরণ করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

প্রকৌশলী এমএম আসাদুজ্জামান আরিফ বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জন-সাধারণদের বিশেষ করে জেলে সম্প্রদায়কে মা ইলিশ সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে।”

উল্লেখ্য ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এর মৎস্য-২ অধিশাখা কর্তৃক ২ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখ জারীকৃত প্রজ্ঞাপন মোতাবেক Protection and Conservation of Fish Act 1950 (E.B Act No.XVIII of 1950) এর অধীন প্রণীত Protection and Conservation of Fish Rules 1985 এর Rule 13 মোতাবেক এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১৩ অক্টোবর হতে ০৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ (২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ হতে ১৮ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
২৯ জন দেখেছেন

মা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর অবস্থানে গলাচিপা উপজেলা প্রশাসন

আপডেট : ০৭:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আগুনমুখা, দাড়চিড়া, তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ এর যৌথ অভিযানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার সময় ৩০ কেজি মা ইলিশ ও ১০ হাজার মিটার জাল (যার আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা) জব্দ করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১০ টা- সকাল ৮টা পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী আগুনমুখা, দাড়চিড়া ও তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী ।

জানা যায়, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ পরিচালনার সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরার সময় ৩০ কেজি মা ইলিশের সাথে ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাছ দুটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয় এবং জালগুলো পানপট্টি লঞ্চঘাটে নদীর তীরে বসে পোড়ানো হয়।

গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার আজ ৭ম দিন। ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ আছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে এ অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং জব্দকৃত ৩০কেজি ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। পরে ১০হাজার মিটার কারেন্ট উদ্ধার জালগুলি জনগনের সামনে বিনষ্ট করা হয়। জনস্বার্থে আমাদের মৎস্য বিভাগের সাথে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সহযোগিতায় এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। ”

সারারাত মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ছিলেন গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, “একটি মা ইলিশের পেটে ২৫ লাখ ডিম থাকে। নিষেধাজ্ঞার যে ২২ দিন সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে সে সময়টুকুতে প্রায় ৮০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। মা ইলিশ বা জাটকা ধরে ফেললে পরবর্তী বছর ইলিশের উৎপাদন কমে যাবে। ইলিশের উৎপাদন কমে গেলে যারা ইলিশ আহরণ করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

প্রকৌশলী এমএম আসাদুজ্জামান আরিফ বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জন-সাধারণদের বিশেষ করে জেলে সম্প্রদায়কে মা ইলিশ সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে।”

উল্লেখ্য ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এর মৎস্য-২ অধিশাখা কর্তৃক ২ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখ জারীকৃত প্রজ্ঞাপন মোতাবেক Protection and Conservation of Fish Act 1950 (E.B Act No.XVIII of 1950) এর অধীন প্রণীত Protection and Conservation of Fish Rules 1985 এর Rule 13 মোতাবেক এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১৩ অক্টোবর হতে ০৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ (২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ হতে ১৮ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বাখ//এস