০৯:১২ অপরাহ্ন, রোববার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাটারিচালিত রিকশা বাড়ায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন টানা রিকশার চালকরা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক

এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে হাতে টানা রিকশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই রিকশা ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেলেও কলকাতার রাস্তায় দেখা মেলে হাতে টানা রিকশা। যদিও ব্যাটারিচালিত ও প্যাডেল রিকশা প্রচলন বাড়ায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন টানা রিকশার চালকরা।

কলকাতার নিউ মার্কেট বা মারক্যুইস স্ট্রিটে গেলে হরহামেশাই চোখে পড়ে হাতে টানা রিকশা। ১৮৯০ সালে জাপান থেকে টানা রিকশার কাঠের সংস্করণ তৎকালীন ভারতের রাজধানী কলকাতায় আনেন ইহুদি এক ব্যবসায়ী। ১৯৩৩ সালে একসাথে ৬ হাজার চালককে দেয়া হয় লাইসেন্স।

যদিও ২০০৬ সালে টানা রিকশা নিষিদ্ধের প্রস্তাব করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ সংক্রান্ত আইন পাস হলেও চলছে এই বাহন।

বংশ পরম্পরায় টানা রিকশার হাত বলদ হলেও বদলায়নি চালকের ভাগ্য। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, টোটো, ভ্যান ইত্যাদি আধুনিক যানবাহন বাড়তে থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না টানা রিকশা। চালকরা বলছেন, আগে যেখানে দিনে ১ হাজার রুপি আয় হতো, এখন তা অর্ধেকেরও অর্ধেকে নেমে এসেছে।

রিকশা চালকদের একজন বলেন, ‘রোজগারের কথা আর কী বলবো। কখনও ভালো আবার কখনও হয় না। সবাই তো সাইকেল রিকশা ব্যবহার করে। আগে পাঁচ-সাতশ রুপি আয় হতো। সরকার আমাদের কথা ভাবলে এই পেশা ছেড়ে দিতাম।’

অমানবিক দৈহিক পরিশ্রম হয় বলে টানা রিকশা বন্ধের দাবি উঠেছে অনেকবার। পাশাপাশি, চালকদের পুনর্বাসনের দাবিও জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

ঐতিহ্য ধরে রাখার চেয়ে পেট চালানোকেই বড় করে দেখতে বাধ্য হচ্ছেন এই রিকশাচালকরা। তারা বলছেন, সহজ কিস্তিতে বা যে কোনো উপায়ে সরকার অটোরিকশার ব্যবস্থা করে দিলে কোনোরকমে টিকে থাকতে পারবেন তারা।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:৪৬:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
৪৬ জন দেখেছেন

ব্যাটারিচালিত রিকশা বাড়ায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন টানা রিকশার চালকরা

আপডেট : ০৭:৪৬:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে হাতে টানা রিকশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই রিকশা ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেলেও কলকাতার রাস্তায় দেখা মেলে হাতে টানা রিকশা। যদিও ব্যাটারিচালিত ও প্যাডেল রিকশা প্রচলন বাড়ায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন টানা রিকশার চালকরা।

কলকাতার নিউ মার্কেট বা মারক্যুইস স্ট্রিটে গেলে হরহামেশাই চোখে পড়ে হাতে টানা রিকশা। ১৮৯০ সালে জাপান থেকে টানা রিকশার কাঠের সংস্করণ তৎকালীন ভারতের রাজধানী কলকাতায় আনেন ইহুদি এক ব্যবসায়ী। ১৯৩৩ সালে একসাথে ৬ হাজার চালককে দেয়া হয় লাইসেন্স।

যদিও ২০০৬ সালে টানা রিকশা নিষিদ্ধের প্রস্তাব করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ সংক্রান্ত আইন পাস হলেও চলছে এই বাহন।

বংশ পরম্পরায় টানা রিকশার হাত বলদ হলেও বদলায়নি চালকের ভাগ্য। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, টোটো, ভ্যান ইত্যাদি আধুনিক যানবাহন বাড়তে থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না টানা রিকশা। চালকরা বলছেন, আগে যেখানে দিনে ১ হাজার রুপি আয় হতো, এখন তা অর্ধেকেরও অর্ধেকে নেমে এসেছে।

রিকশা চালকদের একজন বলেন, ‘রোজগারের কথা আর কী বলবো। কখনও ভালো আবার কখনও হয় না। সবাই তো সাইকেল রিকশা ব্যবহার করে। আগে পাঁচ-সাতশ রুপি আয় হতো। সরকার আমাদের কথা ভাবলে এই পেশা ছেড়ে দিতাম।’

অমানবিক দৈহিক পরিশ্রম হয় বলে টানা রিকশা বন্ধের দাবি উঠেছে অনেকবার। পাশাপাশি, চালকদের পুনর্বাসনের দাবিও জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

ঐতিহ্য ধরে রাখার চেয়ে পেট চালানোকেই বড় করে দেখতে বাধ্য হচ্ছেন এই রিকশাচালকরা। তারা বলছেন, সহজ কিস্তিতে বা যে কোনো উপায়ে সরকার অটোরিকশার ব্যবস্থা করে দিলে কোনোরকমে টিকে থাকতে পারবেন তারা।