০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবার ভিটায় যেতে পারছেন না হুসনা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
বাবার দেওয়া সম্পত্তি নিয়ে আপন দুই বোনের মধ্যে পাঁচ বছর ধরে চলছে বিরোধ। বড় বোন ও তার লোকজনের ভয়ে বাবার ভিটায় ফিরতে পারছেন না হুসনা ভানু। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এমন ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিঙ্গলিয়া গ্রামে। ভূক্তভোগী হুসনা ওই গ্রামের মৃত আব্দুল হক মাস্টারের মেয়ে ও ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত কার্জন শেখের স্ত্রী। ৮ বছর আগে তাঁর স্বামী আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।
ভূক্তভোগী হুসনা বলেন, ‘আমার স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। অবসর গ্রহণ করে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা করতেন। ২০১৬ সালে ওই দেশে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা তিনি। অনেক কষ্টে ৬ লাখ টাকা খরচ করে লাশ দেশে আনি। দু’টি ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে চলি এবং তাদের লেখাপড়ার জন্য ঢাকায় থাকি। ২০১৮ সালে আমার বাবা আমাকে ও আমার ছোট বোন সাজিয়াকে বাড়ির পাশে ৩০ শতাংশ জমি লিখে দেন। জমির সীমানা নির্ধারণ করে দু’বোনকে দখল বুঝে দেন এবং বাঁশের বেড়াও দিয়ে দেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ছোট সাজিয়া তাঁর অংশের ১৫ শতাংশ বড় বোন হাসিনা বানু মুক্তার কাছে বিক্রি করে দেন। মুক্তা আবার সেখান থেকে ৮ শতাংশ জমি প্রতিবেশি মেহেদীর কাছে বিক্রি করে দেন। কিছুদিন পর আমার বড় বোন মুক্তা রাস্তার পাশ দিয়ে জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক আমার জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এক পর্যায় আমার জমিতে লাগানো গাছপালা কেটে এবং বাঁশের বেড়া ভেঙে ফেলেন তিনি।
হুসনা আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে নেয়নি পুলিশ। মুক্তা নিজেকে খুলনা সরকারি এম এম কলেজের সাবেক ছাত্রী সম্পাদিকা দাবি করেন এবং আ’লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে গ্রামের এসে বাবার ভিটায় যেতে পারছি না। পাশের এক আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। বাবার ভিটায় গেলে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। জীবনের নিরাপত্তাসহ প্রতিকারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
হাসিনা বানু মুক্তার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি তাকে বাবার ভিটায় উঠতে দেওয়া, না দেওয়ার কে? আর জমি কে কোন পাশ দিয়ে ভোগদখল করবে সেটা দলিলে উল্লেখ নেই। শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. শফিউদ্দিন খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৪:৩৮:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
৫৬ জন দেখেছেন

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবার ভিটায় যেতে পারছেন না হুসনা

আপডেট : ০৪:৩৮:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
বাবার দেওয়া সম্পত্তি নিয়ে আপন দুই বোনের মধ্যে পাঁচ বছর ধরে চলছে বিরোধ। বড় বোন ও তার লোকজনের ভয়ে বাবার ভিটায় ফিরতে পারছেন না হুসনা ভানু। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এমন ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিঙ্গলিয়া গ্রামে। ভূক্তভোগী হুসনা ওই গ্রামের মৃত আব্দুল হক মাস্টারের মেয়ে ও ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত কার্জন শেখের স্ত্রী। ৮ বছর আগে তাঁর স্বামী আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।
ভূক্তভোগী হুসনা বলেন, ‘আমার স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। অবসর গ্রহণ করে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা করতেন। ২০১৬ সালে ওই দেশে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা তিনি। অনেক কষ্টে ৬ লাখ টাকা খরচ করে লাশ দেশে আনি। দু’টি ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে চলি এবং তাদের লেখাপড়ার জন্য ঢাকায় থাকি। ২০১৮ সালে আমার বাবা আমাকে ও আমার ছোট বোন সাজিয়াকে বাড়ির পাশে ৩০ শতাংশ জমি লিখে দেন। জমির সীমানা নির্ধারণ করে দু’বোনকে দখল বুঝে দেন এবং বাঁশের বেড়াও দিয়ে দেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ছোট সাজিয়া তাঁর অংশের ১৫ শতাংশ বড় বোন হাসিনা বানু মুক্তার কাছে বিক্রি করে দেন। মুক্তা আবার সেখান থেকে ৮ শতাংশ জমি প্রতিবেশি মেহেদীর কাছে বিক্রি করে দেন। কিছুদিন পর আমার বড় বোন মুক্তা রাস্তার পাশ দিয়ে জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক আমার জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এক পর্যায় আমার জমিতে লাগানো গাছপালা কেটে এবং বাঁশের বেড়া ভেঙে ফেলেন তিনি।
হুসনা আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে নেয়নি পুলিশ। মুক্তা নিজেকে খুলনা সরকারি এম এম কলেজের সাবেক ছাত্রী সম্পাদিকা দাবি করেন এবং আ’লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে গ্রামের এসে বাবার ভিটায় যেতে পারছি না। পাশের এক আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। বাবার ভিটায় গেলে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। জীবনের নিরাপত্তাসহ প্রতিকারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
হাসিনা বানু মুক্তার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি তাকে বাবার ভিটায় উঠতে দেওয়া, না দেওয়ার কে? আর জমি কে কোন পাশ দিয়ে ভোগদখল করবে সেটা দলিলে উল্লেখ নেই। শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. শফিউদ্দিন খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাখ//আর