০৯:২৪ অপরাহ্ন, রোববার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

সাঁথিয়ায় গৃহবধুকে স্বামী ও তার পরিবার দ্বারা নির্যাতন, মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার সাঁথিয়ায় গৃহবধুকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্য দ্বারা নির্যাতন করায় আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। মামলার পর থেকে তাকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন আসামীরা। ভূক্তভোগী নারী বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। স্বামী ও তার শশুর বাড়ীর লোকজনের শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন তিনি। মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) দুপুরে সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আইরিন খাতুন(৩৮)।তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এলোঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হকের মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই ভূক্তভোগী নারী বলেন, গত ২০১৫ সালে সাঁথিয়া উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত উসমান গণির ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। যৌতুক হিসেবে তার পরিবার আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল শহিদুলকে প্রদান করেন। স্কয়ার ফার্মাসিটিকেলসে স্বামীর চাকরির সুবাদে তিনি টাঙ্গাইলে বসবাস করেন। বিয়ের পর তাদের সন্তান না হওয়ায় ভারতে গিয়ে প্রায় ২৫লক্ষ টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ করেন যা ওই নারীর পরিবার বহন করেন।

এরপর তার স্বামী ও শাশুড়ীসহ পরিবারের লোকজন তাকে শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করেন। তিনি একটি চাকরি করতেন সে চাকরি ছেড়ে দিতেও তাকে বাধ্য করেন তার স্বামী। এক পর্যায়ে তার স্বামী জুয়া ও পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি আইরিন খাতুন জানার পর তার ওপড় নেমে আসে অমানষিক নির্যাতন।

এ ঘটনায় তিনি স্বামী শহদিুল ইসলাম, তার বড় ভাই কামাল হোসেন,শাশুড়ী মমতাজ বেগম, ননদ আফরোজা পারভীন মুক্তিসহ ছয়জনকে আসামি করে এ বছর ৮ এপ্রিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন। যার মামলা নং-০৭। কামাল হোসেন বর্তমানে গাজীপুর ‘বিএসটিআই’তে উপ-পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। তার নেত্বত্বেই ওই নারীকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে আর নির্যাতন করবেনা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিবে মর্মে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে টাঙ্গাইল আদালত থেকে স্বামীকে তিনি জামিন করান। কিন্ত জামিনে বের হয়ে তার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন তাকে আবারো নির্যাতন শুরু করেন এবং নগদ এক লাখ ৫০ হাজার এবং ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ১০ভরি স্বর্ণ,মোবাইল ফোন,ল্যাপটপ,ই-পাসপোর্ট,ব্যাংকের এটিএমকার্ডসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ ছিনিয়ে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

এ ঘটনায় আইরিন খাতুন আবারো গত ২০ সেপ্টেম্বর সাভার মডেল থানায় স্বামী শহিদুল ইসলামসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। যার মামলা নং-৫৫। এছাড়া তিনি গত ২০ অক্টোবর সাঁথিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এতিম অসহায় নারী।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
৩৮ জন দেখেছেন

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

সাঁথিয়ায় গৃহবধুকে স্বামী ও তার পরিবার দ্বারা নির্যাতন, মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি

আপডেট : ১০:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

পাবনার সাঁথিয়ায় গৃহবধুকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্য দ্বারা নির্যাতন করায় আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। মামলার পর থেকে তাকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন আসামীরা। ভূক্তভোগী নারী বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। স্বামী ও তার শশুর বাড়ীর লোকজনের শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন তিনি। মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) দুপুরে সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আইরিন খাতুন(৩৮)।তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এলোঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হকের মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই ভূক্তভোগী নারী বলেন, গত ২০১৫ সালে সাঁথিয়া উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত উসমান গণির ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। যৌতুক হিসেবে তার পরিবার আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল শহিদুলকে প্রদান করেন। স্কয়ার ফার্মাসিটিকেলসে স্বামীর চাকরির সুবাদে তিনি টাঙ্গাইলে বসবাস করেন। বিয়ের পর তাদের সন্তান না হওয়ায় ভারতে গিয়ে প্রায় ২৫লক্ষ টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ করেন যা ওই নারীর পরিবার বহন করেন।

এরপর তার স্বামী ও শাশুড়ীসহ পরিবারের লোকজন তাকে শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করেন। তিনি একটি চাকরি করতেন সে চাকরি ছেড়ে দিতেও তাকে বাধ্য করেন তার স্বামী। এক পর্যায়ে তার স্বামী জুয়া ও পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি আইরিন খাতুন জানার পর তার ওপড় নেমে আসে অমানষিক নির্যাতন।

এ ঘটনায় তিনি স্বামী শহদিুল ইসলাম, তার বড় ভাই কামাল হোসেন,শাশুড়ী মমতাজ বেগম, ননদ আফরোজা পারভীন মুক্তিসহ ছয়জনকে আসামি করে এ বছর ৮ এপ্রিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন। যার মামলা নং-০৭। কামাল হোসেন বর্তমানে গাজীপুর ‘বিএসটিআই’তে উপ-পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। তার নেত্বত্বেই ওই নারীকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে আর নির্যাতন করবেনা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিবে মর্মে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে টাঙ্গাইল আদালত থেকে স্বামীকে তিনি জামিন করান। কিন্ত জামিনে বের হয়ে তার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন তাকে আবারো নির্যাতন শুরু করেন এবং নগদ এক লাখ ৫০ হাজার এবং ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ১০ভরি স্বর্ণ,মোবাইল ফোন,ল্যাপটপ,ই-পাসপোর্ট,ব্যাংকের এটিএমকার্ডসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ ছিনিয়ে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

এ ঘটনায় আইরিন খাতুন আবারো গত ২০ সেপ্টেম্বর সাভার মডেল থানায় স্বামী শহিদুল ইসলামসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। যার মামলা নং-৫৫। এছাড়া তিনি গত ২০ অক্টোবর সাঁথিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এতিম অসহায় নারী।

বাখ//আর