১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহিপুরে আবারো গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা : নীরব প্রশাসন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর মহিপুরে সড়ক ও জনপথের সরকারি জায়গায় ফের গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব স্থাপনা গড়ে তোলা হলেও অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান থেমে যাওয়ায় এভাবে দখল হচ্ছে সরকারি জায়গা। জেলার গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুরের শেখ রাসেল সেতুর নিচে ও রাস্তার ঢালে সরকারি জায়গা দখল করে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলে ব্যবসা করছেন দখলদাররা।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২২ সালের ২২ মার্চ মৎস্য বন্দর মহিপুর ও আলীপুরে সড়ক ও জনপথের জায়গায় গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেসময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু সেই উচ্ছেদ অভিযান থমকে যাওয়ায় দখলদাররা ফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে সড়ক ও জনপথের জায়গা। তবে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে উচ্ছেদ অভিযানের পরপরই তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে দোকান বসিয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের রাতে এসব স্থাপনা ভেঙ্গে চুরমার করা হয়। পরবর্তীতে আবার নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। একটি মহল দাবি করছেন বিএনপির লোকজন এসব অবৈধ স্থাপনা উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেখ রাসেল সেতুর নিচে, অ্যাপ্রোচ সড়কের দু’পাশে এবং সংযোগ সড়কের পাশে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এতে সংকুচিত হয়ে এসেছে সড়ক। ফলে সড়কে মাছ ও সবজি বহনকারী পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, অসুবিধা হচ্ছে চলাচলে। পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

পথচারী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, দিনে কোনোরকম চলাচল করলেও সন্ধ্যায় চলাচল করা খুবই কষ্টকর। বিভিন্ন গাড়ি চলাচল করার কারণে হাঁটার জায়গা থাকে না। লোকজন যেখান থেকে হাঁটবে সেখানে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে।’

আরেক পথচারী আবু হানিফ বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করলে আমাদের দুর্ভোগ কমবে না। না পারি হেঁটে যেতে, না পারি গাড়িতে। এগুলো উচ্ছেদ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত না থাকায় যখন যে সুযোগ পায় তখন সে স্থাপনা গড়ে তোলে। আগে একদল প্রভাব খাটিয়ে দখল করেছে, এখন অন্যদল। এভাবেই দখলদারিত্ব চলে আসছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন,  ওটা যেহেতু সড়ক ও জনপথের জায়গা। সেহেতু তারা আমাদেরকে চিঠি দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মাসুদ মিয়ার কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতেই রাজি হননি।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১২:০০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
৩৫ জন দেখেছেন

মহিপুরে আবারো গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা : নীরব প্রশাসন

আপডেট : ১২:০০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
পটুয়াখালীর মহিপুরে সড়ক ও জনপথের সরকারি জায়গায় ফের গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব স্থাপনা গড়ে তোলা হলেও অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান থেমে যাওয়ায় এভাবে দখল হচ্ছে সরকারি জায়গা। জেলার গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুরের শেখ রাসেল সেতুর নিচে ও রাস্তার ঢালে সরকারি জায়গা দখল করে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলে ব্যবসা করছেন দখলদাররা।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২২ সালের ২২ মার্চ মৎস্য বন্দর মহিপুর ও আলীপুরে সড়ক ও জনপথের জায়গায় গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেসময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু সেই উচ্ছেদ অভিযান থমকে যাওয়ায় দখলদাররা ফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে সড়ক ও জনপথের জায়গা। তবে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে উচ্ছেদ অভিযানের পরপরই তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে দোকান বসিয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের রাতে এসব স্থাপনা ভেঙ্গে চুরমার করা হয়। পরবর্তীতে আবার নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। একটি মহল দাবি করছেন বিএনপির লোকজন এসব অবৈধ স্থাপনা উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেখ রাসেল সেতুর নিচে, অ্যাপ্রোচ সড়কের দু’পাশে এবং সংযোগ সড়কের পাশে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এতে সংকুচিত হয়ে এসেছে সড়ক। ফলে সড়কে মাছ ও সবজি বহনকারী পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, অসুবিধা হচ্ছে চলাচলে। পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

পথচারী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, দিনে কোনোরকম চলাচল করলেও সন্ধ্যায় চলাচল করা খুবই কষ্টকর। বিভিন্ন গাড়ি চলাচল করার কারণে হাঁটার জায়গা থাকে না। লোকজন যেখান থেকে হাঁটবে সেখানে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে।’

আরেক পথচারী আবু হানিফ বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করলে আমাদের দুর্ভোগ কমবে না। না পারি হেঁটে যেতে, না পারি গাড়িতে। এগুলো উচ্ছেদ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত না থাকায় যখন যে সুযোগ পায় তখন সে স্থাপনা গড়ে তোলে। আগে একদল প্রভাব খাটিয়ে দখল করেছে, এখন অন্যদল। এভাবেই দখলদারিত্ব চলে আসছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন,  ওটা যেহেতু সড়ক ও জনপথের জায়গা। সেহেতু তারা আমাদেরকে চিঠি দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মাসুদ মিয়ার কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতেই রাজি হননি।

বাখ//আর