১০:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় দানা রাতের মধ্যে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া দানা রাতের মধ্যে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে ওড়িশা প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। দুই শতাধিক ট্রেন বন্ধের পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে কলকাতার বিমানবন্দরের কার্যক্রম। আগামী শনিবার (২৬ অক্টোবর) পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে এরইমধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই ওড়িশার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। রাজ্যের ভিতরকণিকা ও ধামারা অঞ্চলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে ‘দানা’। আজ রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস। বর্তমানে সাগরদ্বীপ থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় দানা।

উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। দানার প্রভাবে এরইমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি।

ওড়িশায় ১০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য স্থানীয় প্রশাসনের। ইতোমধ্যে চার লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। ওড়িশার ধামারা, পারাদ্বীপ ও পুরী বন্দরে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত জারি রয়েছে।

ওড়িশার রাজস্ব ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী সুরেশ পূজারি বলেন, ‘ইতোমধ্যে উন্নত সব ধরনের সেবা ও সহযোগিতাসহ পাঁচ হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি, রান্না করা খাবার, শিশুদের জন্য দুধ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর। এ ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। দিঘা, মন্দারমণিসহ পর্যটনস্পট থেকে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ভুবনেশ্বর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে বাতিল করা হয়েছে দুই শতাধিক ট্রেনের শিডিউল। শনিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দুর্যোগ মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা করে চারজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। স্থানীয়দের সতর্ক করতে চলছে মাইকে প্রচার। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের। এছাড়া, ভারতীয় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত উদ্ধারকর্মীও মোতায়েন আছে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে।

১৯৯৯ সালে ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনে প্রাণ হারিয়েছিলেন নয় হাজারের বেশি মানুষ। এরপর থেকে এ পর্যন্ত এক ডজন ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়েছে ওড়িশাবাসী।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৯:২৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
৭৭ জন দেখেছেন

ঘূর্ণিঝড় দানা রাতের মধ্যে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে

আপডেট : ০৯:২৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া দানা রাতের মধ্যে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে ওড়িশা প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। দুই শতাধিক ট্রেন বন্ধের পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে কলকাতার বিমানবন্দরের কার্যক্রম। আগামী শনিবার (২৬ অক্টোবর) পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে এরইমধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই ওড়িশার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। রাজ্যের ভিতরকণিকা ও ধামারা অঞ্চলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে ‘দানা’। আজ রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস। বর্তমানে সাগরদ্বীপ থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় দানা।

উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। দানার প্রভাবে এরইমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি।

ওড়িশায় ১০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য স্থানীয় প্রশাসনের। ইতোমধ্যে চার লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। ওড়িশার ধামারা, পারাদ্বীপ ও পুরী বন্দরে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত জারি রয়েছে।

ওড়িশার রাজস্ব ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী সুরেশ পূজারি বলেন, ‘ইতোমধ্যে উন্নত সব ধরনের সেবা ও সহযোগিতাসহ পাঁচ হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি, রান্না করা খাবার, শিশুদের জন্য দুধ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর। এ ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। দিঘা, মন্দারমণিসহ পর্যটনস্পট থেকে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ভুবনেশ্বর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে বাতিল করা হয়েছে দুই শতাধিক ট্রেনের শিডিউল। শনিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দুর্যোগ মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা করে চারজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। স্থানীয়দের সতর্ক করতে চলছে মাইকে প্রচার। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের। এছাড়া, ভারতীয় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত উদ্ধারকর্মীও মোতায়েন আছে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে।

১৯৯৯ সালে ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনে প্রাণ হারিয়েছিলেন নয় হাজারের বেশি মানুষ। এরপর থেকে এ পর্যন্ত এক ডজন ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়েছে ওড়িশাবাসী।