০২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় এইচপিভি টিকাদানে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ, একজনের অঙ্গহানি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালীতে এইচপিভি টিকাদানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা আর অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সরকারী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেশির দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ এবং এক শিক্ষার্থীর অঙ্গহানির ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিষয়টিকে অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক বলে দ্য়া এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছেন সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সারাদেশের ন্যায় পটুয়াখালী জেলাতেও শুরু হয়েছে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচী। পৌরসভার ৯টি প্রতিষ্ঠানের মেয়ে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হলেও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে উদ্বোধন করা হয় বেলা ১১ টায়। জেলা প্রশাসক আবু হাসানাত মোহাম্মদ আরেফিন ও সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম কবির হাসান এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১টার দিকে নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী জাইমা জাকির ও জাহারা জাকির টিকা দেয়ার পর অসুস্থ্য হয়ে পরেন। এরপর তাদেরকে ছোট একটি লো বেঞ্চে বসানো হয়, সেই লো বেঞ্চ থেকে মাথা ঘুড়িয়ে অজ্ঞান হয়ে পাকা ফ্লোরে পড়ে পরে গিয়ে সাহারার সামনের দাত ভেঙ্গে যায়। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলনা বলে জানান ওই শিক্ষার্থীর মা।

শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ জাকির হোসেন জানান, পৌরসভার মাত্র ২জন ষ্টাফ তারা টিকা দানে ব্যাস্ত ছিল। কিন্তু এত বড় একটি কর্মসূচীতে টিকাদানের আগে বা পরের অবস্থা পর্যবেক্ষনের জন্য সেখানে কোন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত সেবিকা কিংবা অন্য কোন লোক ছিলনা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন এ কর্মসূচীতে সিভিল সার্জন অফিস কিংবা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়সারা ভাব এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণেই আজকে আমার মেয়ের অঙ্গহানির ঘটনা ঘটলো।

এদিকে এ ঘটনা শোনার পর ওই বিদ্যালয়ে ছুটে যান সিভিল সার্জন নিজে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে আমাকে যেভাবে বলা হয়েছে আমি সেভাবেই করেছি। তাছাড়া বিদ্যালয়টি যেহেতু পৌরসভার মধ্যে আপনি পৌরসভার এ কাজে যিনি দায়িত্বে আছেন তার সাথে যোগাযোগ করুন। পৌরসভার দায়িত্বে থাকা ডাঃ নাহিদ জানান, আমি ওই স্কুলেই ছিলাম। ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

টিকাদানকারী মোসাম্মাদ নাজমা আক্তার জানান, টিকা দেয়ার পর অনেকের শরীরই একটি খারাপ অনুভব করে তাই আমরা সবাইকে আধা ঘন্টা বসে থাকতে বলেছি। কিন্তু কিভাবে যে জাহারা বেঞ্চ থেকে পড়ে গেল সেটি বুঝে উঠতে পারছিনা। আর জাহারার এই অবস্থা দেখে আরেক শিক্ষার্থী জাইমাও অসুস্থ্যবোধ করছিল। প্রশ্ন ছিল অসুস্থ্যবোধ করার পরেও তাকে কেন টিকা দেয়া হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমা আক্তার জানান, টিকা দেয়ার আগে অনেকেই একটু আধটু ভয় পেয়ে থাকে।

সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বড়াল জানান, আমি একটু দুরে ছিলাম। ঘটনাশুনে সেখানে গিয়ে তার খোজ খবর নিয়েছি। তবে কিভাবে যে সে বেঞ্চ থেকে পড়ে গেল? এমন ঘটনা আমার স্কুলে এর আগে হয়নি। কেন পর্যবেক্ষনের জন্য কোন সেবিকা রাখা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষক ডাঃ রেজাউল করিম জানান, এরকম ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট এইএফআই কমিটি তদন্ত করে ব্যব্স্থা গ্রহণ করবেন।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবু হাসানাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন ‘আপিন এভাবে চেচিয়ে কথা বলেন কেন? বিষয়টি সিভিল সার্জনের সাথে আলাপ করেন বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১২:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
৫৮ জন দেখেছেন

পটুয়াখালীতে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় এইচপিভি টিকাদানে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ, একজনের অঙ্গহানি

আপডেট : ১২:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

পটুয়াখালীতে এইচপিভি টিকাদানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা আর অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সরকারী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেশির দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ এবং এক শিক্ষার্থীর অঙ্গহানির ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিষয়টিকে অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক বলে দ্য়া এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছেন সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সারাদেশের ন্যায় পটুয়াখালী জেলাতেও শুরু হয়েছে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচী। পৌরসভার ৯টি প্রতিষ্ঠানের মেয়ে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হলেও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে উদ্বোধন করা হয় বেলা ১১ টায়। জেলা প্রশাসক আবু হাসানাত মোহাম্মদ আরেফিন ও সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম কবির হাসান এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১টার দিকে নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী জাইমা জাকির ও জাহারা জাকির টিকা দেয়ার পর অসুস্থ্য হয়ে পরেন। এরপর তাদেরকে ছোট একটি লো বেঞ্চে বসানো হয়, সেই লো বেঞ্চ থেকে মাথা ঘুড়িয়ে অজ্ঞান হয়ে পাকা ফ্লোরে পড়ে পরে গিয়ে সাহারার সামনের দাত ভেঙ্গে যায়। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলনা বলে জানান ওই শিক্ষার্থীর মা।

শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ জাকির হোসেন জানান, পৌরসভার মাত্র ২জন ষ্টাফ তারা টিকা দানে ব্যাস্ত ছিল। কিন্তু এত বড় একটি কর্মসূচীতে টিকাদানের আগে বা পরের অবস্থা পর্যবেক্ষনের জন্য সেখানে কোন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত সেবিকা কিংবা অন্য কোন লোক ছিলনা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন এ কর্মসূচীতে সিভিল সার্জন অফিস কিংবা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়সারা ভাব এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণেই আজকে আমার মেয়ের অঙ্গহানির ঘটনা ঘটলো।

এদিকে এ ঘটনা শোনার পর ওই বিদ্যালয়ে ছুটে যান সিভিল সার্জন নিজে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে আমাকে যেভাবে বলা হয়েছে আমি সেভাবেই করেছি। তাছাড়া বিদ্যালয়টি যেহেতু পৌরসভার মধ্যে আপনি পৌরসভার এ কাজে যিনি দায়িত্বে আছেন তার সাথে যোগাযোগ করুন। পৌরসভার দায়িত্বে থাকা ডাঃ নাহিদ জানান, আমি ওই স্কুলেই ছিলাম। ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

টিকাদানকারী মোসাম্মাদ নাজমা আক্তার জানান, টিকা দেয়ার পর অনেকের শরীরই একটি খারাপ অনুভব করে তাই আমরা সবাইকে আধা ঘন্টা বসে থাকতে বলেছি। কিন্তু কিভাবে যে জাহারা বেঞ্চ থেকে পড়ে গেল সেটি বুঝে উঠতে পারছিনা। আর জাহারার এই অবস্থা দেখে আরেক শিক্ষার্থী জাইমাও অসুস্থ্যবোধ করছিল। প্রশ্ন ছিল অসুস্থ্যবোধ করার পরেও তাকে কেন টিকা দেয়া হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমা আক্তার জানান, টিকা দেয়ার আগে অনেকেই একটু আধটু ভয় পেয়ে থাকে।

সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি বড়াল জানান, আমি একটু দুরে ছিলাম। ঘটনাশুনে সেখানে গিয়ে তার খোজ খবর নিয়েছি। তবে কিভাবে যে সে বেঞ্চ থেকে পড়ে গেল? এমন ঘটনা আমার স্কুলে এর আগে হয়নি। কেন পর্যবেক্ষনের জন্য কোন সেবিকা রাখা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষক ডাঃ রেজাউল করিম জানান, এরকম ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট এইএফআই কমিটি তদন্ত করে ব্যব্স্থা গ্রহণ করবেন।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবু হাসানাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন ‘আপিন এভাবে চেচিয়ে কথা বলেন কেন? বিষয়টি সিভিল সার্জনের সাথে আলাপ করেন বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।

বাখ//আর