০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেলকুচিতে বেড়েছে ছিনতাই-ডাকাতি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

গত ৫ আগষ্টের পর থেকে স্থবির হয়ে পরেছে বেলকুচি থানার পুলিশি কার্যক্রম। যার কারণে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির ঘটনা। অন্যদিকে মাদকে সয়লাভ পুরো উপজেলা। পুলিশের এমন স্থবিরতা নিয়ে জনমনে চলছে নানা প্রশ্ন। কোন পথে হাটছে পুলিশ? কেন চলছে তাদের এমন নিরবতা? জনগনের জানমাল নিরাপত্তায় দিতে ব্যার্থ হচ্ছে পুলিশ। পুলিশকে বেগবান হতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা থাকলেও তার কোন কার্যক্রম নেই এই থানায়।

এনায়েতপুর গ্রামের মাইক্রোবাসে মালিক নুরইসলাম বলেন, আমি ৮ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার পথে সয়দাবাদ এনায়েতপুর মহা-সড়কের সমেশপুর স-মিলের সামনে কয়েকটি গাছের গুড়ি ফেলে গতিরোধ করে ডাকাত দল। আমি এমটা দেখে পাশের ছোট রাস্তায় গাড়ী ঘুরিয়ে দেই এবং দ্রুত চলে যাই। পরে থানায় ফোন করি কিন্তু পুলিশের তেমন একটা সারা পাইনা। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাস্তার উপরের কাঠের গুড়ি গুলো সরিয়ে দেয়। তার পরে আমি পার হয়ে আসি। এর আগে শাহজাদপুর থানার টুটুল ড্রাইভারের একটি গাড়ীর গ্লাস ভেঙ্গে দেয় ডাকাত দল।

বেলকুচি উপজেলার মাইক্রোবাস চালক রনি বলেন, আমি ১৩ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার সময় সমেশপুর ঐ স-মিলের সামনে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতি করার চেষ্টা করে। আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে তখন ডাকাতদল দৌড়ে চলে যায়। তরপর পুলিশকে ফোন করি কিন্তু রাত দেখে পুলিশ আর আসেনা। এরপরের দিন সিয়াম ড্রাইভারের গাড়িতে ডাকাতি করার চেষ্টা করে ডাকাতদল। তখর একটি ট্রাক এসে থামে আর ট্রাক চালকের কারনে ডাকাতি থেকে রক্ষা পায় সিয়ামের গাড়ী।

বেলকুচির চালা গ্রামের মামুন হাসান বলেন, আমাদের বাড়ীর সামনে মাদক সম্রাট আলীর বাড়ী। এই বাড়ীতে দিন রাত ২৪ ঘন্টার মাদক বিক্রি হয়। আগে মাঝে মাঝে পুলিশের অভিযান থাকলেও ৫ আগষ্টের পর থেকে পুলিশের নেই কোন তৎপরতা। আমাদের তো মনে হয় থানাতে কোন পুলিশ নেই। পুলিশ কেন তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিলো তা জানা নেই।

শেরনগর গ্রামের মাদক সেবী আশরাফ আলী বলেন, এখন মাদক কিনতে বেশি কষ্ট করতে হয়না। ফোন দিলেই মাদক মিলে যায়। কারন জানতে চাইলে বলেন, এখন তো আর পুলিশ নেই। সবাই স্বাধীন ভাবে ব্যবসা করতে পারছে। তাই মাদক ব্যবসায়ীরাও স্বাধীনতা পেয়েছে। আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে।

বানিয়াগাতী গ্রামের সুকুমার বলেন, বর্তমানে আমাদের এলাকতে চুরির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। বাহিরে সুতা মেলতেই পারিনা। রাত হলেই চোরদের আনাগোনা বেড়ে যায়। থানার পুলিশ তো আর বাহিরে আসেনা তাই চোররাই বাহিরে রাজত্ব করে চলছে।

এ ব্যপারে বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ জাকারিয়া হোসেন বলেন, আমার থানায় দুটি ডাকাতির খবর পেয়েছি আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোর্স পাঠিয়ে দিয়ে নিয়ন্তন করেছি। আর মাদকের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত অভিযান চলছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক মামলায় সবাই জামিনে আছে তাই কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাফিউর রহমান রহমান বলেন, ডাকাতির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন থেকে আমি নিজেই বিষয়টি কঠোর ভাবে দেখবো।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
৯০ জন দেখেছেন

বেলকুচিতে বেড়েছে ছিনতাই-ডাকাতি

আপডেট : ১০:০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

গত ৫ আগষ্টের পর থেকে স্থবির হয়ে পরেছে বেলকুচি থানার পুলিশি কার্যক্রম। যার কারণে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির ঘটনা। অন্যদিকে মাদকে সয়লাভ পুরো উপজেলা। পুলিশের এমন স্থবিরতা নিয়ে জনমনে চলছে নানা প্রশ্ন। কোন পথে হাটছে পুলিশ? কেন চলছে তাদের এমন নিরবতা? জনগনের জানমাল নিরাপত্তায় দিতে ব্যার্থ হচ্ছে পুলিশ। পুলিশকে বেগবান হতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা থাকলেও তার কোন কার্যক্রম নেই এই থানায়।

এনায়েতপুর গ্রামের মাইক্রোবাসে মালিক নুরইসলাম বলেন, আমি ৮ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার পথে সয়দাবাদ এনায়েতপুর মহা-সড়কের সমেশপুর স-মিলের সামনে কয়েকটি গাছের গুড়ি ফেলে গতিরোধ করে ডাকাত দল। আমি এমটা দেখে পাশের ছোট রাস্তায় গাড়ী ঘুরিয়ে দেই এবং দ্রুত চলে যাই। পরে থানায় ফোন করি কিন্তু পুলিশের তেমন একটা সারা পাইনা। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাস্তার উপরের কাঠের গুড়ি গুলো সরিয়ে দেয়। তার পরে আমি পার হয়ে আসি। এর আগে শাহজাদপুর থানার টুটুল ড্রাইভারের একটি গাড়ীর গ্লাস ভেঙ্গে দেয় ডাকাত দল।

বেলকুচি উপজেলার মাইক্রোবাস চালক রনি বলেন, আমি ১৩ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার সময় সমেশপুর ঐ স-মিলের সামনে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতি করার চেষ্টা করে। আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে তখন ডাকাতদল দৌড়ে চলে যায়। তরপর পুলিশকে ফোন করি কিন্তু রাত দেখে পুলিশ আর আসেনা। এরপরের দিন সিয়াম ড্রাইভারের গাড়িতে ডাকাতি করার চেষ্টা করে ডাকাতদল। তখর একটি ট্রাক এসে থামে আর ট্রাক চালকের কারনে ডাকাতি থেকে রক্ষা পায় সিয়ামের গাড়ী।

বেলকুচির চালা গ্রামের মামুন হাসান বলেন, আমাদের বাড়ীর সামনে মাদক সম্রাট আলীর বাড়ী। এই বাড়ীতে দিন রাত ২৪ ঘন্টার মাদক বিক্রি হয়। আগে মাঝে মাঝে পুলিশের অভিযান থাকলেও ৫ আগষ্টের পর থেকে পুলিশের নেই কোন তৎপরতা। আমাদের তো মনে হয় থানাতে কোন পুলিশ নেই। পুলিশ কেন তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিলো তা জানা নেই।

শেরনগর গ্রামের মাদক সেবী আশরাফ আলী বলেন, এখন মাদক কিনতে বেশি কষ্ট করতে হয়না। ফোন দিলেই মাদক মিলে যায়। কারন জানতে চাইলে বলেন, এখন তো আর পুলিশ নেই। সবাই স্বাধীন ভাবে ব্যবসা করতে পারছে। তাই মাদক ব্যবসায়ীরাও স্বাধীনতা পেয়েছে। আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে।

বানিয়াগাতী গ্রামের সুকুমার বলেন, বর্তমানে আমাদের এলাকতে চুরির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। বাহিরে সুতা মেলতেই পারিনা। রাত হলেই চোরদের আনাগোনা বেড়ে যায়। থানার পুলিশ তো আর বাহিরে আসেনা তাই চোররাই বাহিরে রাজত্ব করে চলছে।

এ ব্যপারে বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ জাকারিয়া হোসেন বলেন, আমার থানায় দুটি ডাকাতির খবর পেয়েছি আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোর্স পাঠিয়ে দিয়ে নিয়ন্তন করেছি। আর মাদকের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত অভিযান চলছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক মামলায় সবাই জামিনে আছে তাই কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাফিউর রহমান রহমান বলেন, ডাকাতির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন থেকে আমি নিজেই বিষয়টি কঠোর ভাবে দেখবো।

বাখ//আর