১২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈশ্বরদীতে পদ্মার চরে বিষক্রিয়ায় ১৪ টি গরু মৃত্যু

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনা ঈশ্বরদীর পাকশীর চররূপপুরের গেনা মার্কেট এলাকার বিশ্বাসপাড়ায় ও পদ্মানদীরস্থ লক্ষ্মীকুন্ডার লালগোলা চরে বিষক্রিয়ায় ১৪ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে গবাদি পশুর চারণভূমির পাশের কলা বাগানে ঘাস ও কলা গাছ খেয়ে এসব গরু বিষক্রিয়ায় মারা গেছে। ঘটনায় আরও অসুস্থ হওয়া বেশ কিছু গরুকে চিকিৎসা দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে প্রায় ১৭ টি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন, ভ্যাটেনারি সার্জন (ভিএস) ডা. মো. ফারুখ হোসেন ও লক্ষ্মীকুন্ডা পল্লী পশু চিকিৎসক মো. সানোয়ার হোসেন ও মিরাজ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ গরু পালনকারীরা হলেন, ঈশ্বরদীর পাকশীর চররূপপুরের গেনা মার্কেট এলাকার বিশ্বাসপাড়া মোফাজ্জল বিশ্বাসের ৮ টি, সাহাবুল বিশ্বাসের ২ টি, বিকুল প্রামানিকের ২ টি, জয়নাল বিশ্বাসের ১ টি ও ইকবাল প্রামানিকের ১ টি গরু। মৃতগুলোর অধিকাংশই গাভী ও ষাড়। আর বিষক্রিয়ায় অসুস্থ্য হওয়া ৪ টি গরু জবাই করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্থ গরু পালনকারী মোফাজ্জল বিশ্বাসসহ অন্যরা জানান, গরুগুলো তারা অন্যান্য দিনের মত পদ্মানদীর লক্ষ্মীকুন্ডার লালগোলা চরে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। এক পর্যায় বিকেলের দিকে গরুগুলো পাশের একটি কলাবাগানে ঢুকে ঘাস ও কলা পাতা খেয়ে ফেলে। চর থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে মাঠেই আকর্ষিকভাবে ছটফট করে ৫টি গরু মারা যায়। পরবর্তীতে নদীর পাড়ে এসে আরো ৩ টি গরু মারা যায়। বাড়িতে আনার পরও ৬ টি গরু মারা যায়।

ভুক্তভুগি মোফাজ্জল বিশ্বাসের ভাই এজাজ বিশ্বাস জানান, লক্ষ্মীকুন্ডার কৈকুন্ডা গ্রামের জনৈক আনিস নামক এক ব্যক্তির জমির কলা গাছ ও ঘাস খেয়েই মুলত গরু গুলো অসুস্থ্য হয়ে মারা যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কলা বাগানের ঘাস মারার জন্য দানাদার বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতেই ক্ষতিগ্রস্থ গরুর পালনকারীদের বাড়িতে উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জনসহ লোকজন পাঠানো হয়। অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বিষয়টি জানার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে পূনরায় ভিএসসহ লোকজনকে পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জন (ভিএস) ডা. মো. ফারুখ হোসেন জানান, অসুস্থ গরু গুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অসুস্থগুলো এখন সুস্থ রয়েছে। মৃত গরু গুলোর মৃত্যুর কারণ জানান জন্য রক্ত, লালা এবং মাংস সংগ্রহ করে ল্যাব টেস্ট এর জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে গরুগুলোর মৃত্যু হয়েছে।

একই সঙ্গে ল্যাব টেস্টের রেজাল্ট না পাওয়া পর্যন্ত ওই চরের জমিতে গবাদি পশুকে খাস না খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ গরুর মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই পশু চিকিৎসক।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গরু মৃত্যুর বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৮:০৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪
৫২ জন দেখেছেন

ঈশ্বরদীতে পদ্মার চরে বিষক্রিয়ায় ১৪ টি গরু মৃত্যু

আপডেট : ০৮:০৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

পাবনা ঈশ্বরদীর পাকশীর চররূপপুরের গেনা মার্কেট এলাকার বিশ্বাসপাড়ায় ও পদ্মানদীরস্থ লক্ষ্মীকুন্ডার লালগোলা চরে বিষক্রিয়ায় ১৪ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে গবাদি পশুর চারণভূমির পাশের কলা বাগানে ঘাস ও কলা গাছ খেয়ে এসব গরু বিষক্রিয়ায় মারা গেছে। ঘটনায় আরও অসুস্থ হওয়া বেশ কিছু গরুকে চিকিৎসা দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে প্রায় ১৭ টি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন, ভ্যাটেনারি সার্জন (ভিএস) ডা. মো. ফারুখ হোসেন ও লক্ষ্মীকুন্ডা পল্লী পশু চিকিৎসক মো. সানোয়ার হোসেন ও মিরাজ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ গরু পালনকারীরা হলেন, ঈশ্বরদীর পাকশীর চররূপপুরের গেনা মার্কেট এলাকার বিশ্বাসপাড়া মোফাজ্জল বিশ্বাসের ৮ টি, সাহাবুল বিশ্বাসের ২ টি, বিকুল প্রামানিকের ২ টি, জয়নাল বিশ্বাসের ১ টি ও ইকবাল প্রামানিকের ১ টি গরু। মৃতগুলোর অধিকাংশই গাভী ও ষাড়। আর বিষক্রিয়ায় অসুস্থ্য হওয়া ৪ টি গরু জবাই করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্থ গরু পালনকারী মোফাজ্জল বিশ্বাসসহ অন্যরা জানান, গরুগুলো তারা অন্যান্য দিনের মত পদ্মানদীর লক্ষ্মীকুন্ডার লালগোলা চরে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। এক পর্যায় বিকেলের দিকে গরুগুলো পাশের একটি কলাবাগানে ঢুকে ঘাস ও কলা পাতা খেয়ে ফেলে। চর থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে মাঠেই আকর্ষিকভাবে ছটফট করে ৫টি গরু মারা যায়। পরবর্তীতে নদীর পাড়ে এসে আরো ৩ টি গরু মারা যায়। বাড়িতে আনার পরও ৬ টি গরু মারা যায়।

ভুক্তভুগি মোফাজ্জল বিশ্বাসের ভাই এজাজ বিশ্বাস জানান, লক্ষ্মীকুন্ডার কৈকুন্ডা গ্রামের জনৈক আনিস নামক এক ব্যক্তির জমির কলা গাছ ও ঘাস খেয়েই মুলত গরু গুলো অসুস্থ্য হয়ে মারা যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কলা বাগানের ঘাস মারার জন্য দানাদার বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতেই ক্ষতিগ্রস্থ গরুর পালনকারীদের বাড়িতে উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জনসহ লোকজন পাঠানো হয়। অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বিষয়টি জানার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে পূনরায় ভিএসসহ লোকজনকে পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জন (ভিএস) ডা. মো. ফারুখ হোসেন জানান, অসুস্থ গরু গুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অসুস্থগুলো এখন সুস্থ রয়েছে। মৃত গরু গুলোর মৃত্যুর কারণ জানান জন্য রক্ত, লালা এবং মাংস সংগ্রহ করে ল্যাব টেস্ট এর জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে গরুগুলোর মৃত্যু হয়েছে।

একই সঙ্গে ল্যাব টেস্টের রেজাল্ট না পাওয়া পর্যন্ত ওই চরের জমিতে গবাদি পশুকে খাস না খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ গরুর মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই পশু চিকিৎসক।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গরু মৃত্যুর বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাখ//এস