বদলগাছীতে দুর্নীতি-অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে

নওগাঁর বদলগাছীর গয়ড়া তেতুলিয়া ডি এ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবদুল রশিদ। তিনি ২০১৫ সালে মারা যান। অথচ ২০২০ সালের এক নিয়োগ আদেশের কাগজপত্রে তার স্বাক্ষর রয়েছে। মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন উপজেলার দাউদপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সেকেন্দার আলী ও সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম। এছাড়াও নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনটি পদে নিয়োগ দিয়েছেন তারা।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তা কর্মী, আয়াসহ চারটি পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় দাউদপুর ইসলামিয়া মাদ্রাসার। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৮ মার্চ তারিখ দেখিয়ে নিয়োগের কাগজপত্র তৈরি করা হয়। সেই কাগজপত্রে দেখা যায়, পাশের গয়ড়া তেতুলিয়া ডি এ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবদুল রশিদ সেই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু তিনি ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান।
মাদ্রাসার রেজুলেশন ও নিয়োগ বোর্ডের ফলাফল সিটে আবদুল রশিদ ছাড়াও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোবারুল ইসলামের স্বাক্ষরও রয়েছে। অথচ সেই নিয়োগ বোর্ড সম্পর্কে কিছুই জানেন না এই কর্মকর্তারা।
নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা যায়, নিরাপত্তাকর্মী পদে উপজেলার দাউদপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. ইসাহাক আলী, আয়া পদে দাউদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে মোছা. শারমিন সুলতানা এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগ পেয়েছেন মাধবপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবু মুস্তাকিম। যারা এখন পর্যন্ত মাদ্রাসায় কোনো দিন যাননি বা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেননি।
এ বিষয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগ পাওয়া আবু মুস্তাকিম বলেন, ‘আমি কোনো নিয়োগ বোর্ডে বসিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে স্বাধীন ও স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করে চলতি বছরের ১২ েজুন মহাপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে সরাসরি এ অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়- চলতি বছরের ২৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদনটি তৎকালীন মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান এর দপ্তরে পৌঁছায়। যার নথি নম্বর-৬৫২৫। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
যদি দুর্নীতি-অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অভিযুক্ত হবার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়। তাহলে দুর্নীতি মুক্ত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠনে বড় বাধা হতে পারে। যার ফলশ্রুতিতে সাধারণ জনগন বার বার প্রতারিত হতে থাকবেন।
বাখ//এস