০৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কটিয়াদীতে নতুন জাতের ধান রোপনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক

এম এ কুদ্দুছ, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি-১০৩ জাতেরধানের বীজ রোপন করে কয়েক শত কৃষক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বীজ রোপনের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে, ধানের চিটা ধরা সহ ব্যাপক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়ে ভুক্তভোগী কৃষকরা।

তারা জানান রোপা আমন ধান রোপনের জন্য বীজ সংগ্রহ করার সময় স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও এলাকার বীজ ব্যবসায়ীরা নতুন জাতের ব্রি ১০৩ জাতের ধান রোপনের পরামর্শ দেন যা অল্প দিনেই অন্যান্য ধানের চেয়ে ফলন বেশি হবে বলে জানান। উক্ত পরামর্শের পরে ভুক্তভোগী কৃষকরা ইমরান সিডস ব্রি ১০৩ জাতের ধানের বীজ রোপন করে প্রতারিত হয়েছেন। তারা বলেন, সেচ খরচ, কীটনাশক প্রয়োগ বাবদ খরচ, জমিতে নিয়োগকৃত শ্রমিকের খরচ ও অন্যান্য খরচ সহ প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করেও কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানান, নতুন জাতের ধানের মাঝে ব্রি ১০৩ জাতেরধানের বীজ রোপনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু অনেক কৃষকই বিভিন্ন কোম্পানির ব্রী ১০৩ জাতের বীজ রোপন করেছে যার ফলে তাদের সমস্যা হয়েছে। কিন্তু যারা বিডিসির বীজ রোপন করেছেন তাদের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের পং মসূয়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মনির হোসেন জানান তারা ইমরান সিডস ব্রি ১০৩ জাতের ধানের বীজ রোপন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ধানের শীষ বের হওয়ার পর দেখা যায় বেশিরভাগ ধানের শীষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে।

আচমিতা ইউনিয়নের অগ্রেরকোণা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান, ভিটাদিয়া গ্রামের আবুল কাশেম, রজব আলীও মোহাম্মদ হামিদ জানান, আমরা উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি ১০৩ জাতের নতুন ধান রোপন করি। বীজ রোপনের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধান ছিটা হয়ে বের হতে শুরু করে।এ ব্যাপারে কৃষি অফিসের নির্দেশ মোতাবেক আমরা দফায় দফায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন ফলাফল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি।

আচমিতা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াছিন জানান, আমাদেরকে উপজেলা কৃষি অফিসার ব্রি ১০৩ জাতের ধান রোপন করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিতে বলেন। আমরা সেই মোতাবে কৃষকদের পরামর্শ দেই এবং মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের জমির ফসলের এই অবস্থা দেখে উপজেলা কৃষি অফিসার কে অবগত করি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান ব্রি ১০৩ জাতের ধান সহ অন্যান্য নতুন জাতের ধান রোপনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু কৃষকরা বিভিন্ন কোম্পানির নিমানের ধানের বীজ ক্রয় করে রোপন করায় ফসলের বিপর্যয় ঘটেছে বলে আমি মনে করি। আমরা এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করছি। বীজের কারণে ফসলের ক্ষতি হলে আমরা বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৪:১০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
১৬৯ জন দেখেছেন

কটিয়াদীতে নতুন জাতের ধান রোপনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক

আপডেট : ০৪:১০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি-১০৩ জাতেরধানের বীজ রোপন করে কয়েক শত কৃষক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বীজ রোপনের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে, ধানের চিটা ধরা সহ ব্যাপক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়ে ভুক্তভোগী কৃষকরা।

তারা জানান রোপা আমন ধান রোপনের জন্য বীজ সংগ্রহ করার সময় স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও এলাকার বীজ ব্যবসায়ীরা নতুন জাতের ব্রি ১০৩ জাতের ধান রোপনের পরামর্শ দেন যা অল্প দিনেই অন্যান্য ধানের চেয়ে ফলন বেশি হবে বলে জানান। উক্ত পরামর্শের পরে ভুক্তভোগী কৃষকরা ইমরান সিডস ব্রি ১০৩ জাতের ধানের বীজ রোপন করে প্রতারিত হয়েছেন। তারা বলেন, সেচ খরচ, কীটনাশক প্রয়োগ বাবদ খরচ, জমিতে নিয়োগকৃত শ্রমিকের খরচ ও অন্যান্য খরচ সহ প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করেও কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানান, নতুন জাতের ধানের মাঝে ব্রি ১০৩ জাতেরধানের বীজ রোপনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু অনেক কৃষকই বিভিন্ন কোম্পানির ব্রী ১০৩ জাতের বীজ রোপন করেছে যার ফলে তাদের সমস্যা হয়েছে। কিন্তু যারা বিডিসির বীজ রোপন করেছেন তাদের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের পং মসূয়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মনির হোসেন জানান তারা ইমরান সিডস ব্রি ১০৩ জাতের ধানের বীজ রোপন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ধানের শীষ বের হওয়ার পর দেখা যায় বেশিরভাগ ধানের শীষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে।

আচমিতা ইউনিয়নের অগ্রেরকোণা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান, ভিটাদিয়া গ্রামের আবুল কাশেম, রজব আলীও মোহাম্মদ হামিদ জানান, আমরা উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি ১০৩ জাতের নতুন ধান রোপন করি। বীজ রোপনের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধান ছিটা হয়ে বের হতে শুরু করে।এ ব্যাপারে কৃষি অফিসের নির্দেশ মোতাবেক আমরা দফায় দফায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন ফলাফল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি।

আচমিতা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াছিন জানান, আমাদেরকে উপজেলা কৃষি অফিসার ব্রি ১০৩ জাতের ধান রোপন করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিতে বলেন। আমরা সেই মোতাবে কৃষকদের পরামর্শ দেই এবং মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের জমির ফসলের এই অবস্থা দেখে উপজেলা কৃষি অফিসার কে অবগত করি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান ব্রি ১০৩ জাতের ধান সহ অন্যান্য নতুন জাতের ধান রোপনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু কৃষকরা বিভিন্ন কোম্পানির নিমানের ধানের বীজ ক্রয় করে রোপন করায় ফসলের বিপর্যয় ঘটেছে বলে আমি মনে করি। আমরা এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করছি। বীজের কারণে ফসলের ক্ষতি হলে আমরা বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বাখ//এস