১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাহরাস্তিতে সম্পত্তি বিরোধে হামলায়, উভয় পক্ষের আহত – ৭

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহম্মদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আহম্মদনগর চৌকিদার বাড়ির মৃত জালাল উদ্দিনের পুত্র হেদায়েত উল্যাহর সাথে সহোদর ভাই আবু তাহেরের সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছিলো। ঘটনার দিন দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটের সময় আবু তাহের পক্ষ অতর্কিত ভাবে বেআইনি জনতাবদ্ধে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হেদায়েত উল্যাহর বসতবাড়িতে হামলা করে। ওই সময় তারা হেদায়েত উল্যাহর বিল্ডিংয়ের সবকটি থাইগ্লাস ভাংচুর করে। এছাড়া গরুর ঘর, ছাগলের ঘর ও মুরগীর ফার্মের ঘর ভাংচুর করে। ওই সময় তাদের বাধা দিতে গেলে হেদায়েত উল্যাহ, তার পুত্র শাহাদাত হোসেন ও শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার গুরুতর আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।

অভিযোগের বাদী ফাতেমা আক্তার জানান, আবু তাহের পক্ষের সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তি বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার দিন আবু তাহের (৬৫), তার ছেলে রাসেল (৩৫), আবু তাহেরের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫৫), একই গ্রামের মৃত আঃ মমিনের ছেলে মিজান (২৮), আবুল খায়েরের ছেলে মেহেদি (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে সুমন (৩৫), আবুল বাসারের ছেলে জাকির আহমেদ (৩৬), তাইজুল ইসলামের ছেলে রফিক (৩০), জাহাঙ্গীরের ছেলে সফিউল ইসলাম (৩০), মফিজের ছেলে ফারুক হোসেন (৩৫), মিজানের ছেলে সুজন আহমেদ (৩০) সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন লোক দলবদ্ধ হয়ে আমাদের উপর আক্রমন করে। ওই সময় তারা আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং আমাদের মারাত্মক ভাবে আহত করে।

আহত শাহাদাত হোসেন জানান, প্রতিপক্ষ পাশ্ববর্তি গ্রামের অসংখ্য ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। ওই সময় তারা আমার ছোট ছেলে মেয়েকেও মারধর করে। তারা দেশিয় অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে আমাদের বসতঘরের (বিল্ডিংয়ের) থাইগ্লাস, গরুর ঘর, ছাগলের ঘর ও মুরগীর ফার্ম ভাংচুর করে। এতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া আমার মুরগীর ফার্মের ৮ শত মোরগ-মুরগী লুটপাট করে নিয়ে যায়। যাতে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। আমরা যাতে কোন আইনি ব্যবস্থা না নেই, আইনি ব্যবস্থা নিলে প্রাণনাশের হুমকী ধমকী প্রদর্শণ করছে প্রতিপক্ষরা।

আহত হেদায়েত উল্যাহ ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, হামলাকারীরা অতর্কিত ভাবে আমাদের বাড়িতে ভাংচুর চালায়। তারা আমাদের বসতঘরে প্রবেশ করে আলমিরাতে রক্ষিত নগদ ৪ লক্ষ টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি আইফোন ১৪ প্রো মেক্স, ২ টি স্যামসাং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তাদের অতর্কিত হামলায় আমরা আতংকিত অবস্থায় রয়েছি। এ ঘটনায় আমরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবী করছি।

এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের রাসেল জানান, আমরা তাদের উপর কোন হামলা করিনি। তাদের সাথে আমাদের সম্পত্তি বিরোধ রয়েছে। প্রতিপক্ষের শাহাদাত তার মুরগীর ফার্মের সামনে আমাদের সম্পত্তিতে জোর পূর্বক ঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করছিলো। আমি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার অফিসার সরেজমিনে আসলে প্রতিপক্ষের ১০/১২ জন লোক পুলিশের সামনেই আমাকে অতর্কিত মারধর শুরু করে।

ওই সময় তাদের হামলায় আমি সহ একই গ্রামের মৃত বশির উল্যাহর ছেলে আলমগীর হোসেন, আলী আশ্রাফের ছেলে নেহাল, ওমর ফারুকের ছেলে নোহাদ গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহতরা কুমিল্লা চিকিৎসাধিন রয়েছে। আমি কিংবা আমার পরিবারের কোন লোকজন তাদের উপর হামলা করিনি। আমাদের উপর হামলা হওয়ার পর স্থানীয় লোকজনও তাদের হামলায় আহত হওয়ায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ওই সময় উত্তেজিত কিছু লোকজন তাদের সাথে বিরোধে জড়ায়। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:২৩:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
১৩৫ জন দেখেছেন

শাহরাস্তিতে সম্পত্তি বিরোধে হামলায়, উভয় পক্ষের আহত – ৭

আপডেট : ১০:২৩:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহম্মদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আহম্মদনগর চৌকিদার বাড়ির মৃত জালাল উদ্দিনের পুত্র হেদায়েত উল্যাহর সাথে সহোদর ভাই আবু তাহেরের সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছিলো। ঘটনার দিন দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটের সময় আবু তাহের পক্ষ অতর্কিত ভাবে বেআইনি জনতাবদ্ধে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হেদায়েত উল্যাহর বসতবাড়িতে হামলা করে। ওই সময় তারা হেদায়েত উল্যাহর বিল্ডিংয়ের সবকটি থাইগ্লাস ভাংচুর করে। এছাড়া গরুর ঘর, ছাগলের ঘর ও মুরগীর ফার্মের ঘর ভাংচুর করে। ওই সময় তাদের বাধা দিতে গেলে হেদায়েত উল্যাহ, তার পুত্র শাহাদাত হোসেন ও শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার গুরুতর আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।

অভিযোগের বাদী ফাতেমা আক্তার জানান, আবু তাহের পক্ষের সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তি বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার দিন আবু তাহের (৬৫), তার ছেলে রাসেল (৩৫), আবু তাহেরের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫৫), একই গ্রামের মৃত আঃ মমিনের ছেলে মিজান (২৮), আবুল খায়েরের ছেলে মেহেদি (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে সুমন (৩৫), আবুল বাসারের ছেলে জাকির আহমেদ (৩৬), তাইজুল ইসলামের ছেলে রফিক (৩০), জাহাঙ্গীরের ছেলে সফিউল ইসলাম (৩০), মফিজের ছেলে ফারুক হোসেন (৩৫), মিজানের ছেলে সুজন আহমেদ (৩০) সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন লোক দলবদ্ধ হয়ে আমাদের উপর আক্রমন করে। ওই সময় তারা আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং আমাদের মারাত্মক ভাবে আহত করে।

আহত শাহাদাত হোসেন জানান, প্রতিপক্ষ পাশ্ববর্তি গ্রামের অসংখ্য ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। ওই সময় তারা আমার ছোট ছেলে মেয়েকেও মারধর করে। তারা দেশিয় অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে আমাদের বসতঘরের (বিল্ডিংয়ের) থাইগ্লাস, গরুর ঘর, ছাগলের ঘর ও মুরগীর ফার্ম ভাংচুর করে। এতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া আমার মুরগীর ফার্মের ৮ শত মোরগ-মুরগী লুটপাট করে নিয়ে যায়। যাতে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। আমরা যাতে কোন আইনি ব্যবস্থা না নেই, আইনি ব্যবস্থা নিলে প্রাণনাশের হুমকী ধমকী প্রদর্শণ করছে প্রতিপক্ষরা।

আহত হেদায়েত উল্যাহ ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, হামলাকারীরা অতর্কিত ভাবে আমাদের বাড়িতে ভাংচুর চালায়। তারা আমাদের বসতঘরে প্রবেশ করে আলমিরাতে রক্ষিত নগদ ৪ লক্ষ টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি আইফোন ১৪ প্রো মেক্স, ২ টি স্যামসাং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তাদের অতর্কিত হামলায় আমরা আতংকিত অবস্থায় রয়েছি। এ ঘটনায় আমরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবী করছি।

এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের রাসেল জানান, আমরা তাদের উপর কোন হামলা করিনি। তাদের সাথে আমাদের সম্পত্তি বিরোধ রয়েছে। প্রতিপক্ষের শাহাদাত তার মুরগীর ফার্মের সামনে আমাদের সম্পত্তিতে জোর পূর্বক ঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করছিলো। আমি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার অফিসার সরেজমিনে আসলে প্রতিপক্ষের ১০/১২ জন লোক পুলিশের সামনেই আমাকে অতর্কিত মারধর শুরু করে।

ওই সময় তাদের হামলায় আমি সহ একই গ্রামের মৃত বশির উল্যাহর ছেলে আলমগীর হোসেন, আলী আশ্রাফের ছেলে নেহাল, ওমর ফারুকের ছেলে নোহাদ গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহতরা কুমিল্লা চিকিৎসাধিন রয়েছে। আমি কিংবা আমার পরিবারের কোন লোকজন তাদের উপর হামলা করিনি। আমাদের উপর হামলা হওয়ার পর স্থানীয় লোকজনও তাদের হামলায় আহত হওয়ায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ওই সময় উত্তেজিত কিছু লোকজন তাদের সাথে বিরোধে জড়ায়। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।

বাখ//এস