০২:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের করা মিথ্যা অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ, ব্যবসায়ীরা বলছেন সব বানোয়াট!

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের শিমুলদাইড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের করা মিথ্যা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রকিবুল হাসান রকি নামের এক যুবক। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) করা একটি মানববন্ধনে ওই প্রধান শিক্ষক শিমুলদাইড় গ্রামের রকিবুল হাসান রকি ও তার ছোট ভাই সজিবের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করেন। বিষয়টি নজরে আসলে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে শিমুলদাইড় বাজারে সাংবাদিকদের সাথে বিস্তারিত কথা বলেন রকি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আব্দুল লতিফ মাস্টার আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে নিয়ে যে মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করেছেন তা ভিত্তিহীন। ওই দিন শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনে আমাকে চাঁদাবাজ বলে সাভ্যস্ত করেছেন তিনি। আমি নাকি বাজারের প্রত্যেক দোকানে চাঁদাবাজী করি। দোকানদারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ছোট করার জন্যই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রধান শিক্ষক আপনার ওপর এতো ক্ষিপ্ত কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রকি বলেন, ‘মূল বিষয় আমি বিদ্যালয়টিতে সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব দেই। আমি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হই তিনি এটা মেনে নিতে পারবেন না। বিদ্যালয়ের নামে শিমুলদাইড় বাজারে একটি মার্কেট আছে। সেই মার্কেট ৪ লক্ষ টাকা মূল্যে ৩০ বছরের জন্য লিজ দেন প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষক। বিদ্যালয়ের কোষাগারে সেই টাকা রাখার কথা থাকলেও তারা নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এমনকি দোকানগুলো থেকে ভাড়ার যে টাকা আসে তাও নিজেরাই ভোগ করেন। এই বিষয়টি আমি ধরে বসি এবং লিজের রেজুলেশন কপি আমি কোনভাবে সংগ্রহ করি। আমি সব বিষয় জেনে গেছি বলে আমার ওপর তিনি ক্ষিপ্ত।
আমার বিরুদ্ধে মার্কেট দখলের যে অভিযোগ করেছে ওই শিক্ষক সেটা আসলে মিথ্যা। মার্কেটের জায়গা নিয়ে গত ১ আগস্টে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজুলেশন করে দোকানের পূর্বপাশে তিনশতক জমি আমাদেরকে দখল দেয়। অথচ ওই শিক্ষক বলছে আমরা নাকি মার্কেট দখল করেছি!
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর দুপুরে শিমুলদাইড় বাজারে শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মানববন্ধন করেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ। সেখানে তিনি বক্তব্যে বলেন, ‘ কিছুদিন আগে বাজারে রকি, তার ছোট ভাই সজিব ও সেলিম নামের একজন লোকজন দিয়ে আমাকে সহ চার প্রধান শিক্ষককে মারধার করে। বাজারে প্রত্যেক দোকানে চাঁদাবাজী করে। দোকানদারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। রকি আমাকে ভয় দেখিয়ে আমার বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে চায়।’
প্রধান শিক্ষকের এমন মন্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে শুক্রবার শিমুলদাইড় বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। ব্যবসায়ীরা প্রধান শিক্ষকের করা মন্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন।
বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মণ্ডল বলেন, ‘রকি বা অন্য কেউ কোন দিন আমাদের কাছে চাঁদা চাইতে আসেনি। কখনও খারাপ ব্যবহারও করেনি। প্রধান শিক্ষক যে অভিযোগ করেছে সেটা পুরোপুরি মিথ্যা।’
শিমুলদাইড় উচ্চ বিদ্যালয় মডেল মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক রকির নামে যে অভিযোগ করেছে সেটা আসলে সত্য না। আমাদের যারা ব্যবসায়ী তারা কখনও এমন অভিযোগ করেনি। কখনও চাঁদাবাজীতো দূরের কথা খারাপ ব্যবহারই করেনি।
শিমুলদাইড় বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘এই বাজারে আমি প্রায় বছর ২৬ বছর ধরে ব্যবসা করি। কখনও শুনি নাই কেউ চাঁদাবাজী করতে এসেছে। রকি খুব ভালো ছেলে তাকে ফাসানোর জন্যই হয় তো প্রধান শিক্ষক মিথ্যা মন্তব্য করেছেন।
বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, ‘চাঁদাবাজীর বিষয়টি আসলে মিথ্যা, আমার কাছে বাজারের কোন ব্যবসায়ী এরকম অভিযোগ দেয়নি। আর বাজারে কোন প্রকার চাঁদাবাজী হয়নাই।’
মেসার্স সহীহ্ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম সোহেল বলেন, আমি এই বাজারে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ব্যবসা করি। রকি বা অন্য কেউ কখনও চাঁদাবাজী করতে আসেনি। প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ যে অভিযোগ এনেছেন রকির বিরুদ্ধে এটা আসলে বানোয়াট।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে শিমুলদাইড় বাজার বণিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও কাজীপুর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি হযরত আলী সরকার পাগু বলেন, ‘আসলে লতিফ মাস্টারসহ আরও কয়েকজন মাস্টার স্কুল মার্কেটের পূর্বপাশে গোপনে বসে নেশা করে। এটা দেখার পরে সচেতন কয়েকজন ছেলেপেলে তাদেরকে ওখান থেকে সরিয়ে দেয়। তিনি নেশা করে সবসময় আবলতাবল কথা বলেন। তাকে কেউ কখনও মারধর করেনি।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফকে মারধরের বিষয়ে ঘটনা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জিসিজি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দিন আসলে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আমি ওখানেই ছিলাম। রকি বা অন্য কেউ লতিফ মাস্টারকে মারেনি।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৬:৫১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
১৪০ জন দেখেছেন

প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের করা মিথ্যা অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ, ব্যবসায়ীরা বলছেন সব বানোয়াট!

আপডেট : ০৬:৫১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের শিমুলদাইড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের করা মিথ্যা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রকিবুল হাসান রকি নামের এক যুবক। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) করা একটি মানববন্ধনে ওই প্রধান শিক্ষক শিমুলদাইড় গ্রামের রকিবুল হাসান রকি ও তার ছোট ভাই সজিবের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করেন। বিষয়টি নজরে আসলে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে শিমুলদাইড় বাজারে সাংবাদিকদের সাথে বিস্তারিত কথা বলেন রকি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আব্দুল লতিফ মাস্টার আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে নিয়ে যে মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করেছেন তা ভিত্তিহীন। ওই দিন শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনে আমাকে চাঁদাবাজ বলে সাভ্যস্ত করেছেন তিনি। আমি নাকি বাজারের প্রত্যেক দোকানে চাঁদাবাজী করি। দোকানদারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ছোট করার জন্যই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রধান শিক্ষক আপনার ওপর এতো ক্ষিপ্ত কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রকি বলেন, ‘মূল বিষয় আমি বিদ্যালয়টিতে সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব দেই। আমি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হই তিনি এটা মেনে নিতে পারবেন না। বিদ্যালয়ের নামে শিমুলদাইড় বাজারে একটি মার্কেট আছে। সেই মার্কেট ৪ লক্ষ টাকা মূল্যে ৩০ বছরের জন্য লিজ দেন প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষক। বিদ্যালয়ের কোষাগারে সেই টাকা রাখার কথা থাকলেও তারা নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এমনকি দোকানগুলো থেকে ভাড়ার যে টাকা আসে তাও নিজেরাই ভোগ করেন। এই বিষয়টি আমি ধরে বসি এবং লিজের রেজুলেশন কপি আমি কোনভাবে সংগ্রহ করি। আমি সব বিষয় জেনে গেছি বলে আমার ওপর তিনি ক্ষিপ্ত।
আমার বিরুদ্ধে মার্কেট দখলের যে অভিযোগ করেছে ওই শিক্ষক সেটা আসলে মিথ্যা। মার্কেটের জায়গা নিয়ে গত ১ আগস্টে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজুলেশন করে দোকানের পূর্বপাশে তিনশতক জমি আমাদেরকে দখল দেয়। অথচ ওই শিক্ষক বলছে আমরা নাকি মার্কেট দখল করেছি!
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর দুপুরে শিমুলদাইড় বাজারে শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মানববন্ধন করেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ। সেখানে তিনি বক্তব্যে বলেন, ‘ কিছুদিন আগে বাজারে রকি, তার ছোট ভাই সজিব ও সেলিম নামের একজন লোকজন দিয়ে আমাকে সহ চার প্রধান শিক্ষককে মারধার করে। বাজারে প্রত্যেক দোকানে চাঁদাবাজী করে। দোকানদারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। রকি আমাকে ভয় দেখিয়ে আমার বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে চায়।’
প্রধান শিক্ষকের এমন মন্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে শুক্রবার শিমুলদাইড় বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। ব্যবসায়ীরা প্রধান শিক্ষকের করা মন্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন।
বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মণ্ডল বলেন, ‘রকি বা অন্য কেউ কোন দিন আমাদের কাছে চাঁদা চাইতে আসেনি। কখনও খারাপ ব্যবহারও করেনি। প্রধান শিক্ষক যে অভিযোগ করেছে সেটা পুরোপুরি মিথ্যা।’
শিমুলদাইড় উচ্চ বিদ্যালয় মডেল মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক রকির নামে যে অভিযোগ করেছে সেটা আসলে সত্য না। আমাদের যারা ব্যবসায়ী তারা কখনও এমন অভিযোগ করেনি। কখনও চাঁদাবাজীতো দূরের কথা খারাপ ব্যবহারই করেনি।
শিমুলদাইড় বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘এই বাজারে আমি প্রায় বছর ২৬ বছর ধরে ব্যবসা করি। কখনও শুনি নাই কেউ চাঁদাবাজী করতে এসেছে। রকি খুব ভালো ছেলে তাকে ফাসানোর জন্যই হয় তো প্রধান শিক্ষক মিথ্যা মন্তব্য করেছেন।
বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, ‘চাঁদাবাজীর বিষয়টি আসলে মিথ্যা, আমার কাছে বাজারের কোন ব্যবসায়ী এরকম অভিযোগ দেয়নি। আর বাজারে কোন প্রকার চাঁদাবাজী হয়নাই।’
মেসার্স সহীহ্ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম সোহেল বলেন, আমি এই বাজারে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ব্যবসা করি। রকি বা অন্য কেউ কখনও চাঁদাবাজী করতে আসেনি। প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ যে অভিযোগ এনেছেন রকির বিরুদ্ধে এটা আসলে বানোয়াট।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে শিমুলদাইড় বাজার বণিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও কাজীপুর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি হযরত আলী সরকার পাগু বলেন, ‘আসলে লতিফ মাস্টারসহ আরও কয়েকজন মাস্টার স্কুল মার্কেটের পূর্বপাশে গোপনে বসে নেশা করে। এটা দেখার পরে সচেতন কয়েকজন ছেলেপেলে তাদেরকে ওখান থেকে সরিয়ে দেয়। তিনি নেশা করে সবসময় আবলতাবল কথা বলেন। তাকে কেউ কখনও মারধর করেনি।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফকে মারধরের বিষয়ে ঘটনা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জিসিজি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দিন আসলে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আমি ওখানেই ছিলাম। রকি বা অন্য কেউ লতিফ মাস্টারকে মারেনি।
বাখ//আর