০২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচবিবিতে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু ফলন ও দামে কৃষক খুশি

মোঃ জিহাদ মন্ডল, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় আমন ধান কাটা ও মাড়াই মৌসুমে চলছে উৎসবের ধুম। আগের মত পল্লী গ্রামে আমন কাটা মারা মৌসুমে সাজ সাজ ভাব না থাকলেও এবার বাম্পার ফলন ও ধানের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। মৃদু শীতল বাতাসে সাড়া মাঠে চোখ জুড়ানো সোনালী আমন ধান দোলের মত কৃষকের মনেও আনন্দের বইছে দোল।

এ উপজেলার মাঠ ঘাট জুড়ে সোনালী বর্ণ ধারণ করা আমন ধানের নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন চোখে পড়ার মতো। পাকা ধান কাটতে হাতে কাঁচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য খুশিতে আজ্ঞিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা। এরই মধ্যে অনেকেই কাটা ও মাড়াইয়ের ধান বাজারে বিক্রিও শুরু করছেন। এ বছর কৃষকেরা ধানের ভালো দাম পাওয়ায় অনেক খুশি।

পাঁচবিবি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদ্প্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এবার আমন মৌসুমে কৃষককে প্রণোদনা হিসাবে সার ও বীজ,কীটনাশক ঔষধ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয় ৯৪ হাজার ৫৭৪ মেঃ টন ধান। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার দামও মোটামুটি ভাল। এবার লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পবাহার গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা বলেন, ১০বিঘা জমিতে স্বর্ণ ৫ জাতের ধান রোপণ করেছি। রোগ বালাই তেমন না থাকায় ধানের অনেক ভাল ফলন হয়েছে। বর্তমানে ধানের যে বাজার চলছে, এরকম বাজার দর থাকলে কৃষকরা একটু লাভবান হতে পারবে।

ধরঞ্জী ইউনিয়নের ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক জায়বর আলী বলেন, ৮ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। আশানুরূপ ফলনের চেয়ে এ বছর অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এ ফলনে আমি অনেক খুশি।

বাগজানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামচন্দপুর গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমন ধান কর্তন করে জমিতে আলু লাগানোর জন্য গোবর নিয়ে যাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ ফলন খুব ভাল হয়েছে। নতুন ধান পেয়ে আমি আনন্দিত।’ তবে ধানের বাজার ঠিক রাখতে সরকারের যথাযথ নজর আশা করেন তিনি।

একই ইউনিয়নের বাগজানা গ্রামের কৃষক সাখোয়াত হোসেন বলেন, এ বছর আশানুরূপ ফলনের আশা করছি। যদি কৃষক তার প্রতিটি ফসলের সঠিক মূল্য না পান তাহলে ফসল ফলানোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সরকার অনেক কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ করলেও কৃষক তার যথাযথ মূল্য পান না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এজন্য ধানসহ সরকারকে প্রতিটি ফসলের কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

উপজেলার ধান ব্যবসায়ী আইনুল হক বলেন , অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শুরু থেকেই ধানের দাম ভাল যাচ্ছে। জাত ভেদে প্রতি মণ মোটা ১৩ শ থেকে ১৩ শ ৮০ টাকা এবং চিকন ধান ১হাজার ৪শ টাকা পর্যন্ত বেচা বিক্রি হচ্ছে।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, এ উপজেলা প্রথমদিকে বৃষ্টিপাতের কিছুটা সমস্যা থাকলেও পরে আশানুরূপ বৃষ্টিপাতের ফলে রোপা আমনের চারা রোপণে আর কোন সমস্যা হয়নি। ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
১১১ জন দেখেছেন

পাঁচবিবিতে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু ফলন ও দামে কৃষক খুশি

আপডেট : ০৩:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় আমন ধান কাটা ও মাড়াই মৌসুমে চলছে উৎসবের ধুম। আগের মত পল্লী গ্রামে আমন কাটা মারা মৌসুমে সাজ সাজ ভাব না থাকলেও এবার বাম্পার ফলন ও ধানের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। মৃদু শীতল বাতাসে সাড়া মাঠে চোখ জুড়ানো সোনালী আমন ধান দোলের মত কৃষকের মনেও আনন্দের বইছে দোল।

এ উপজেলার মাঠ ঘাট জুড়ে সোনালী বর্ণ ধারণ করা আমন ধানের নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন চোখে পড়ার মতো। পাকা ধান কাটতে হাতে কাঁচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য খুশিতে আজ্ঞিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা। এরই মধ্যে অনেকেই কাটা ও মাড়াইয়ের ধান বাজারে বিক্রিও শুরু করছেন। এ বছর কৃষকেরা ধানের ভালো দাম পাওয়ায় অনেক খুশি।

পাঁচবিবি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদ্প্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এবার আমন মৌসুমে কৃষককে প্রণোদনা হিসাবে সার ও বীজ,কীটনাশক ঔষধ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয় ৯৪ হাজার ৫৭৪ মেঃ টন ধান। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার দামও মোটামুটি ভাল। এবার লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পবাহার গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা বলেন, ১০বিঘা জমিতে স্বর্ণ ৫ জাতের ধান রোপণ করেছি। রোগ বালাই তেমন না থাকায় ধানের অনেক ভাল ফলন হয়েছে। বর্তমানে ধানের যে বাজার চলছে, এরকম বাজার দর থাকলে কৃষকরা একটু লাভবান হতে পারবে।

ধরঞ্জী ইউনিয়নের ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক জায়বর আলী বলেন, ৮ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। আশানুরূপ ফলনের চেয়ে এ বছর অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এ ফলনে আমি অনেক খুশি।

বাগজানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামচন্দপুর গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমন ধান কর্তন করে জমিতে আলু লাগানোর জন্য গোবর নিয়ে যাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ ফলন খুব ভাল হয়েছে। নতুন ধান পেয়ে আমি আনন্দিত।’ তবে ধানের বাজার ঠিক রাখতে সরকারের যথাযথ নজর আশা করেন তিনি।

একই ইউনিয়নের বাগজানা গ্রামের কৃষক সাখোয়াত হোসেন বলেন, এ বছর আশানুরূপ ফলনের আশা করছি। যদি কৃষক তার প্রতিটি ফসলের সঠিক মূল্য না পান তাহলে ফসল ফলানোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সরকার অনেক কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ করলেও কৃষক তার যথাযথ মূল্য পান না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এজন্য ধানসহ সরকারকে প্রতিটি ফসলের কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

উপজেলার ধান ব্যবসায়ী আইনুল হক বলেন , অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শুরু থেকেই ধানের দাম ভাল যাচ্ছে। জাত ভেদে প্রতি মণ মোটা ১৩ শ থেকে ১৩ শ ৮০ টাকা এবং চিকন ধান ১হাজার ৪শ টাকা পর্যন্ত বেচা বিক্রি হচ্ছে।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, এ উপজেলা প্রথমদিকে বৃষ্টিপাতের কিছুটা সমস্যা থাকলেও পরে আশানুরূপ বৃষ্টিপাতের ফলে রোপা আমনের চারা রোপণে আর কোন সমস্যা হয়নি। ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

বাখ//এস