০৮:২১ অপরাহ্ন, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা, জিম্মি দশা থেকে প্রেস ক্লাব ও পুলিশের সাহায্যে উদ্ধার

বিশেষ প্রতিবেদক

ফরিদপুরে সংবাদের তথ্য সংগ্রহকালে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এছাড়া তাদের প্রায় দুইঘন্টা জিম্মি করে রাখে হামলাকারীরা। পরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় জিম্মিদশা থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

আহত দুই সাংবাদিকের মধ্যে রয়েছেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ও দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মোঃ তাওহীদুল ইসলাম (পাজবা)।

সোমবার ( ১৮ নভেম্বর) বিকেলে জেলার মধুখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল, মধুখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্নু ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। পরে তারা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

জানা যায়, হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও ফরিদপুর চিনিকলের সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার ভাই মাইক্রোবাস চালক রানা মোল্যা, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান হোসেন সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন ব্যক্তিবর্গেরা ।

আহত সাংবাদিক শ্রাবণ হাসান জানান, সম্প্রতি ফরিদপুর শহরে এক নারীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় তাকে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আমার কাছে আসে। তখন বিষয়টি জানার জন্য ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়।

তখন দাবি করেছিলেন, তিনি একটি ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন। এবং বিষয়টি নিয়ে ফোনে বিস্তারিত বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল চক্রের তথ্য সম্পর্কে জানতে ও তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা যোগাযোগ করে মধুখালীতে যাই।

আহত সাংবাদিক আরও জানান, ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলাকালীন হঠাৎ তার স্ত্রী জানতে চায়, আমাদের ভিডিও কে দিয়েছে, কোথায় আমরা ভিডিও পেয়েছি। বিষয়টি গোপনীয়তার কারনে আমরা এড়িয়ে গেলে তখন সে দাবি করে বসে আমরাই ওই ব্ল্যাকমেইলচক্র। ওই মুহুর্তেই ১০/১২ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং টানাহেঁচড়া করে মারধর শুরু করে। এরপরই রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাদের প্রায় ২ ঘন্টা জিম্মি করে রাখে। এছাড়া মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরে আমাদের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হই। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার মামলা করা হবে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। তবে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০২:৪০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
১৪৪ জন দেখেছেন

ফরিদপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা, জিম্মি দশা থেকে প্রেস ক্লাব ও পুলিশের সাহায্যে উদ্ধার

আপডেট : ০২:৪০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরে সংবাদের তথ্য সংগ্রহকালে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এছাড়া তাদের প্রায় দুইঘন্টা জিম্মি করে রাখে হামলাকারীরা। পরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় জিম্মিদশা থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

আহত দুই সাংবাদিকের মধ্যে রয়েছেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ও দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মোঃ তাওহীদুল ইসলাম (পাজবা)।

সোমবার ( ১৮ নভেম্বর) বিকেলে জেলার মধুখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল, মধুখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্নু ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। পরে তারা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

জানা যায়, হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও ফরিদপুর চিনিকলের সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার ভাই মাইক্রোবাস চালক রানা মোল্যা, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান হোসেন সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন ব্যক্তিবর্গেরা ।

আহত সাংবাদিক শ্রাবণ হাসান জানান, সম্প্রতি ফরিদপুর শহরে এক নারীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় তাকে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আমার কাছে আসে। তখন বিষয়টি জানার জন্য ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়।

তখন দাবি করেছিলেন, তিনি একটি ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন। এবং বিষয়টি নিয়ে ফোনে বিস্তারিত বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল চক্রের তথ্য সম্পর্কে জানতে ও তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা যোগাযোগ করে মধুখালীতে যাই।

আহত সাংবাদিক আরও জানান, ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলাকালীন হঠাৎ তার স্ত্রী জানতে চায়, আমাদের ভিডিও কে দিয়েছে, কোথায় আমরা ভিডিও পেয়েছি। বিষয়টি গোপনীয়তার কারনে আমরা এড়িয়ে গেলে তখন সে দাবি করে বসে আমরাই ওই ব্ল্যাকমেইলচক্র। ওই মুহুর্তেই ১০/১২ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং টানাহেঁচড়া করে মারধর শুরু করে। এরপরই রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাদের প্রায় ২ ঘন্টা জিম্মি করে রাখে। এছাড়া মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরে আমাদের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হই। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার মামলা করা হবে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। তবে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাখ//এস