লোকবলের অভাবে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সেটি এখন নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে। ফলে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন উপজেলার প্রায় সাত লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে মেডিক্যাল অফিসারের পোস্ট রয়েছে ২১টি। এর মধ্যে ১৩টি খালি। বাকি ৮টির মধ্যে একজন চিকিৎসক প্রেষনে বাকেরগ্ঞ্জ উপজেলা সাস্থ্য কমপেক্সে রযেছেন। হাসপাতালে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছে মাত্র একজন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ৯টি পদ খালি থাকায় উপজেলার মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালে সার্জারি,মেডিসিন,পেডিয়েটট্রেপ, ই.এন.টি, চষ্কু, কার্ডিওলজি, চর্ম, যৌন, আয়ুরবেদিক ও অ্যানেসথেসিয়া পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন। এতে সেখানে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন হচ্ছে না। গর্ভবর্তী মায়েরা ক্লিনিকে সিজার করছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালটিতে সবসময় ধারণক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এতে তাদের সেবা দিতে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে হয়। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আউটডোর চলে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার দিয়ে। ফলে হাসপাতালে যথাযথ সেবা না পেয়ে অনেক রোগী চলে যান স্থানীয় বে-সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। হাসপাতালে সুইপারের ১টি পদ খালি রয়েছে। এতে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার হয় না। ফলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নেই জলাতংকের ভ্যাকসিন। হাম-রুবেলা ও পোলিও টিকারও মাঝে মধ্যে সংকট দেখা যায়।আল্ট্রা মেসিন বর্তমানে নষ্ঠ। গৌরনদী উওর বাউরগাতি গ্রামের আব্দুস সালাম খান জানান, ডায়াবেটিকস ও প্রেসারের ওষুধ না থাকায় হতদরিদ্রদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়।
নাজমুল হোসেন নামে এক রোগী জানান, হাসপাতালে রয়েছে পুরাতন মডেলের একটি এক্সরে মেশিন। এই পুরাতন মেশিন দিয়ে ঠিকমত এক্সরে করা যায় না। বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। রিপোর্টেও আসে ভুলভাল। লোডশেডিংয়ের বিপরীতে জেনারেটর থাকলেও তেল বরাদ্দ নেই। ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে থাকে রোগীরা। অভিযোগ রয়েছে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই নেই সংকটের কারণে হাসপাতালে প্রায় ২০-২৫ জন দালাল সক্রিয় রয়েছে। তারা হাসপাতালে আসা রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে 'স্থানীয় ক্লিনিকে। ফলে তারা বিভিন্ন সময় অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান জানান, গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পাশাপাশি জনবল সংকট রয়েছে। ফলে কাঙ্খিত সেবা দিতে আমরা চেষ্টা করছি। তবুও সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সেবা দেয়া সম্ভব তা রোগীদের দিচ্ছি। তিনি বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। আশা করা যায় দ্রæতই সমস্যার সমাধান হবে।
বাখ//আর
সম্পাদক ও প্রকাশক
মানিক কুমার সরকার
banglakhaborbd.com