০৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলাপাড়ায় গননাকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গননাকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারী সহ ৪ জনকে মেরে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতরা হলেন মিজানুর, তার মেয়ে কলেজ পড়ুয়া লামিয়া, স্ত্রী সাবিনা ও স্ত্রীর বোনের কন্যা কলেজ শিক্ষার্থী মারুফা। এদের মধ্যে মারধরে সাবিনা বেগমের বাম পা ভেঙ্গে গেছে।

হাসপাতালের শয্যায় থেকে ভুক্তভোগী মিজানুর ঘরামী জানান, ২৭ নভেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক খাইয়ে দূর্বৃত্তরা তাদের ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার সহ নগদ অর্থ লুটে নেয়। পরে তিনি সহ তার শ্বশুর, শাশুরি, ছেলে এবং স্ত্রীর বোনের কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। কিন্তু দুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলে শালিস বৈঠকের নামে তাদের গোটা পরিবারের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। মিজানুর আরো বলেন, স্থানীয় এক গনাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তাদের এমন নির্যাতন করা হয়।

মিজানুরের স্ত্রী সাবিনা জানান, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে জানতে পারি অঞ্জনা রানী নামে এক নারী গননা করে স্থানীয়দের নাকি বলেছেন আমার স্বামীর সাথে বোনের মেয়ের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। একারনে চেতনা নাশক খাইয়ে এক বিছানায় থাকতে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে। যা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ঘটনার দিন আমার শ্বশুর শ্বাশুরি সহ ছেলেও বাড়িতে ছিলেন। তারা সবাই মেডিসিনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে পর্যন্ত মিথ্যা এবং গননাকারী ভুল তথ্য দিয়ে নিউজ প্রবাশিত হয়েছে।

এখন কলেজ পড়ুয়া আমার বোনের মেয়ে মানসিক এবং শারিরিক নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, রোববার ১ (ডিসেম্বর) বিকালে হাবীব ঘরামী নীলগঞ্জ আমাদের বাড়িতে এসে শালিসে বসলে পরকিয়ার বিষয়টি গননাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করলে আমি এর প্রতিবাদ করি। এ সময় জাকির, মামুন সহ বেশ কয়েকজন হাবীব ঘরামীর উপস্থিতে আমাদের সবাইকে মারধর করে। এখন উল্টো চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে পরকিয়া বলে লোক সমাজে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এবিষয়ে গননাকারী অঞ্জনা রানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখেছেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। তবে কারো নাম তিনি বলেন নি। কিন্তু কোন প্রমাণ ছাড়া পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি কিভাবে লোক সমাজে ছড়িয়ে দিলেন, এমন প্রশ্নের কোন সদোত্তর তিনি দিতে পারেন নি।

এদিকে শালিশদার হাবীব ঘরামী বলেন, বিষয়টি মিজানুরদের পারিবারিক ছিল। আমি কাউকে মারধর করিনি।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল আহম্মেদ জানান, এবিষয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৫:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
২১৫ জন দেখেছেন

কলাপাড়ায় গননাকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর

আপডেট : ০৫:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গননাকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারী সহ ৪ জনকে মেরে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতরা হলেন মিজানুর, তার মেয়ে কলেজ পড়ুয়া লামিয়া, স্ত্রী সাবিনা ও স্ত্রীর বোনের কন্যা কলেজ শিক্ষার্থী মারুফা। এদের মধ্যে মারধরে সাবিনা বেগমের বাম পা ভেঙ্গে গেছে।

হাসপাতালের শয্যায় থেকে ভুক্তভোগী মিজানুর ঘরামী জানান, ২৭ নভেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক খাইয়ে দূর্বৃত্তরা তাদের ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার সহ নগদ অর্থ লুটে নেয়। পরে তিনি সহ তার শ্বশুর, শাশুরি, ছেলে এবং স্ত্রীর বোনের কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। কিন্তু দুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলে শালিস বৈঠকের নামে তাদের গোটা পরিবারের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। মিজানুর আরো বলেন, স্থানীয় এক গনাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তাদের এমন নির্যাতন করা হয়।

মিজানুরের স্ত্রী সাবিনা জানান, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে জানতে পারি অঞ্জনা রানী নামে এক নারী গননা করে স্থানীয়দের নাকি বলেছেন আমার স্বামীর সাথে বোনের মেয়ের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। একারনে চেতনা নাশক খাইয়ে এক বিছানায় থাকতে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে। যা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ঘটনার দিন আমার শ্বশুর শ্বাশুরি সহ ছেলেও বাড়িতে ছিলেন। তারা সবাই মেডিসিনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে পর্যন্ত মিথ্যা এবং গননাকারী ভুল তথ্য দিয়ে নিউজ প্রবাশিত হয়েছে।

এখন কলেজ পড়ুয়া আমার বোনের মেয়ে মানসিক এবং শারিরিক নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, রোববার ১ (ডিসেম্বর) বিকালে হাবীব ঘরামী নীলগঞ্জ আমাদের বাড়িতে এসে শালিসে বসলে পরকিয়ার বিষয়টি গননাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করলে আমি এর প্রতিবাদ করি। এ সময় জাকির, মামুন সহ বেশ কয়েকজন হাবীব ঘরামীর উপস্থিতে আমাদের সবাইকে মারধর করে। এখন উল্টো চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে পরকিয়া বলে লোক সমাজে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এবিষয়ে গননাকারী অঞ্জনা রানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখেছেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। তবে কারো নাম তিনি বলেন নি। কিন্তু কোন প্রমাণ ছাড়া পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি কিভাবে লোক সমাজে ছড়িয়ে দিলেন, এমন প্রশ্নের কোন সদোত্তর তিনি দিতে পারেন নি।

এদিকে শালিশদার হাবীব ঘরামী বলেন, বিষয়টি মিজানুরদের পারিবারিক ছিল। আমি কাউকে মারধর করিনি।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল আহম্মেদ জানান, এবিষয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বাখ//এস