০১:১৩ অপরাহ্ন, রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় সাবেক সাংসদ তোফায়েল, জ্যাকব, মুকুল শাওন সহ ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভোলা জেলা প্রতিনিধি

ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, তার ভাতিজা ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল, ভোলা-৩ (তজুমদ্দিন-লালমোহন) আসনের সাবেক সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও ভোলা- ৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০০ জনকে আসামী করে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) মোঃ আরিফ হোসাইন বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবৈধ আটকাদেশ, কারামুক্তি ও সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ০৫/০৩/২০১৯ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার বেলা ১১ ঘটিকায় প্রত্যেক জেলা শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। তার’ই ধারাবাহিকতায় ০৫/০৩/২০১৯ইং তারিখে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ। উক্ত সমাবেশের বিষয়ে জানতে পেরে ১নং আসামির বাসভবনে এক গোপন বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ভোলায় ১নং আসামির কোন প্রতিদ্বন্দ্বী যাহাতে না থাকে তার জন্য হত্যাকাণ্ড করে হলেও সমাবেশ পণ্ড করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ওই দিন ভোলা শহরের মহাজনপট্টি বিএনপির কার্যালয়ে সমাবেশ শুরু হলে ২, ৩, ৪ নং আসামীর নেতৃত্বে ৫-৭৩ নং আসামীগণ ও অজ্ঞাত আসামী যাদেরকে বাদি দেখলে চিনতে পারবেন।

তারা দা, ছেনী, লোহার রড, লোহার পাইপ, শটগান, বোমা, বগিদা, গুপ্তিসহ হত্যার উদ্দেশ্যে এবং সমাবেশ পন্ড করার উদ্দেশ্যে সাড়াসি আক্রমণ চালায়। এ সময় ২, ৩, ৪ নং আসামী সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে তাদের হাতে থাকা শর্টগান দিয়ে এলোপাথারী গুলি করিতে থাকে। ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ও ১৫ নং আসামীগণ শর্টগান হাতে নিয়ে সমাবেশ স্থলের ভিতরে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং গোলাম নবী আলমগীর ও আসিফ আলতাফ কে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সাধারণ মানুষের ভিড়ে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হইলে ২ ও ৩ নং স্বাক্ষী মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয় এবং মানব বেষ্টনীর মাধ্যমে গোলাম নবী আলমগীর ও আসিফ আলতাফকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তাছাড়া ১১, ১২, ১৩, ১৬ ও ১৮ নং আসামীগণ বৃষ্টির মত বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। ওই বোমার আঘাতে ৪ ও ৬ নং স্বাক্ষী মারাত্মক রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৫ নং আসামীগণ সমাবেশের জনসাধারণকে এলোপাথারী কুপিয়ে ৫, ৭, ৯ নং সাক্ষীকে খুন করার উদ্দেশ্যে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। ২২ থেকে ৩০নং আসামীদের হাতে থাকা শর্ট গানের গুলি নিক্ষেপ ও তোমার বিস্ফোরণে ৭ থেকে ৯ নং সাক্ষী গুরুত্বর রক্তাক্ত যখন হয়।

সভায় উপস্থিত জন সাধারণ মোশারফ হোসেন শাহজাহানের বাসার সামনের চত্বরের দিকে ছুটিয়া গেলে ৫৩ থেকে ৬৪ নং আসামীগণ ১১, ১২, ১৩ নং সাক্ষীকে ধারালো বগিদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মাথায় ও সমস্ত শরীরে যখম করে। ৪১ থেকে ৭০ নং আসামীগণের হাতে থাকা শট গানের গুলি দিয়ে ১৪, ১৫, ১৭ নং সাক্ষীকে খুনের উদ্দেশ্যে আঘাত করে।

আসামিরা বিএনপি অফিসের একটি আলমারী, একটি ৫০ ইঞ্চি টিভি, আসবাবপত্রাদি ভেঙ্গে চুরমার করে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে ঘটনা স্থলত্যাগ করে। আহতদের চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে গেলে আসামীরা সেখানেও বাঁধা দেয়। পরে আহতদের মোশাররফ হোসেন শাজাহানের বাসভবনে চিকিৎসা করান। ঘটনার বিষয়ে ওই সময়ে ভোলা সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। বাদী ও আহতরা আসামিদের ভয়ে কোথাও মামলা করতে পারেনি। যার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

বাখ//ইস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:৪৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
৫৪ জন দেখেছেন

ভোলায় সাবেক সাংসদ তোফায়েল, জ্যাকব, মুকুল শাওন সহ ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট : ০৩:৪৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, তার ভাতিজা ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল, ভোলা-৩ (তজুমদ্দিন-লালমোহন) আসনের সাবেক সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও ভোলা- ৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০০ জনকে আসামী করে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) মোঃ আরিফ হোসাইন বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবৈধ আটকাদেশ, কারামুক্তি ও সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ০৫/০৩/২০১৯ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার বেলা ১১ ঘটিকায় প্রত্যেক জেলা শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। তার’ই ধারাবাহিকতায় ০৫/০৩/২০১৯ইং তারিখে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ। উক্ত সমাবেশের বিষয়ে জানতে পেরে ১নং আসামির বাসভবনে এক গোপন বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ভোলায় ১নং আসামির কোন প্রতিদ্বন্দ্বী যাহাতে না থাকে তার জন্য হত্যাকাণ্ড করে হলেও সমাবেশ পণ্ড করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ওই দিন ভোলা শহরের মহাজনপট্টি বিএনপির কার্যালয়ে সমাবেশ শুরু হলে ২, ৩, ৪ নং আসামীর নেতৃত্বে ৫-৭৩ নং আসামীগণ ও অজ্ঞাত আসামী যাদেরকে বাদি দেখলে চিনতে পারবেন।

তারা দা, ছেনী, লোহার রড, লোহার পাইপ, শটগান, বোমা, বগিদা, গুপ্তিসহ হত্যার উদ্দেশ্যে এবং সমাবেশ পন্ড করার উদ্দেশ্যে সাড়াসি আক্রমণ চালায়। এ সময় ২, ৩, ৪ নং আসামী সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে তাদের হাতে থাকা শর্টগান দিয়ে এলোপাথারী গুলি করিতে থাকে। ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ও ১৫ নং আসামীগণ শর্টগান হাতে নিয়ে সমাবেশ স্থলের ভিতরে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং গোলাম নবী আলমগীর ও আসিফ আলতাফ কে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সাধারণ মানুষের ভিড়ে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হইলে ২ ও ৩ নং স্বাক্ষী মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয় এবং মানব বেষ্টনীর মাধ্যমে গোলাম নবী আলমগীর ও আসিফ আলতাফকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তাছাড়া ১১, ১২, ১৩, ১৬ ও ১৮ নং আসামীগণ বৃষ্টির মত বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। ওই বোমার আঘাতে ৪ ও ৬ নং স্বাক্ষী মারাত্মক রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৫ নং আসামীগণ সমাবেশের জনসাধারণকে এলোপাথারী কুপিয়ে ৫, ৭, ৯ নং সাক্ষীকে খুন করার উদ্দেশ্যে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। ২২ থেকে ৩০নং আসামীদের হাতে থাকা শর্ট গানের গুলি নিক্ষেপ ও তোমার বিস্ফোরণে ৭ থেকে ৯ নং সাক্ষী গুরুত্বর রক্তাক্ত যখন হয়।

সভায় উপস্থিত জন সাধারণ মোশারফ হোসেন শাহজাহানের বাসার সামনের চত্বরের দিকে ছুটিয়া গেলে ৫৩ থেকে ৬৪ নং আসামীগণ ১১, ১২, ১৩ নং সাক্ষীকে ধারালো বগিদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মাথায় ও সমস্ত শরীরে যখম করে। ৪১ থেকে ৭০ নং আসামীগণের হাতে থাকা শট গানের গুলি দিয়ে ১৪, ১৫, ১৭ নং সাক্ষীকে খুনের উদ্দেশ্যে আঘাত করে।

আসামিরা বিএনপি অফিসের একটি আলমারী, একটি ৫০ ইঞ্চি টিভি, আসবাবপত্রাদি ভেঙ্গে চুরমার করে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে ঘটনা স্থলত্যাগ করে। আহতদের চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে গেলে আসামীরা সেখানেও বাঁধা দেয়। পরে আহতদের মোশাররফ হোসেন শাজাহানের বাসভবনে চিকিৎসা করান। ঘটনার বিষয়ে ওই সময়ে ভোলা সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। বাদী ও আহতরা আসামিদের ভয়ে কোথাও মামলা করতে পারেনি। যার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

বাখ//ইস