তাড়াশে ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খনন
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অপরিকল্পিতভাবে রাতদিনে অবাধে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ কৃষককে। কোন কোন জমি জলাবদ্ধ হয়ে সারা বছরই পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এতে বছরে ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান, ১২-১৫ হাজার মেট্রিক টন সরিষাসহ হাজার হাজার মেট্রিক টন সবজির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে ১৪ হাজার ৯৪০ বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। বিশেষ করে দিনে পুকুর খননে ব্যবহৃত এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিনগুলো বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যা নামতেই শুরু পুকুর খনন।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকার কৃষকদের কাছে জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন শুরু করেন। একে একে এই মাঠে বিভিন্ন মাঠে শতশত বিঘা জমি কেটে পুকুর খনন চলছে রাতদিন সমানতালে। উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামে প্রায় ৫০ বিঘা আয়তনের পুকুর খনন করা হচ্ছে। তালম ইউনিয়নের গুল্টা গ্রাম, সেলাপাড়া, জাহাঙ্গীরগাতীসহ অন্যান্য এলাকাতেও অবৈধভাবে পুকুর খননের কাজ চলছে।
ভায়াট গ্রামের কৃষক আকছেদ আলী বলেন, পুকুর খননের কারণে আশপাশের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। গবাদিপশুর জন্য গোচারণ ভূমিও কমে গেছে, যা খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে।
ভুক্তভোগী গোয়ালগ্রামের কৃষক কালু প্রামাণিক জানান, প্রভাবশালীরা পুকুর খনন করে মাছ চাষে লাভবান হচ্ছেন, কিন্তু আমাদের কৃষি জমি অনাবাদি হয়ে যাচ্ছে।
তাড়াশ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ জানান, গত এক দশকে তাড়াশে ৪,২০০-এর বেশি পুকুর খনন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এক দশকে ১৪,৯৪০ বিঘা কৃষি জমি হারিয়ে গেছে। ধান উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, পুকুর খননের তথ্য পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করে, অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
বাখ//আর