১২:১৩ অপরাহ্ন, রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজস্থলীতে মৌসুমী ফলের বাজার এখন বাংলা কলার জিম্মায়

আজগর আলী খান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ে মাটি ভেদে বিভিন্ন জাতের কলা আবাদ হয়। এ এলাকায় কলা আবাদে কিটনাশক ব্যবহার করা হয় না বলেই চলে। রাজস্থলী উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মনোরম পরিবেশের পাহাড়ে দুই জাতের কলা বেশি দেখা যায়। একটি বাংলা কলা অপরটি চাপা কলা। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এর নাম হল কাট্টলি কলা। অন্যটি চাপা কলা যার প্রকৃত নাম চম্পা কলা বলে পরিচিত। উচু পাহাড়ের মাটিতে জন্মায় বলে এগুলোকে পাহাড়ি কলাও বলা হয়। পুষ্টিগুন বেশি হওয়ায় চাপা কলার চেয়ে দ্বিগুন দামে বিক্রি হয় বাংলা কলা।

পার্বত্য রাজস্থলীতে সারা বছরই কলা উৎপাদন হলেও বছরে এ সময়ে কলার উৎপাদন বেড়ে যায় কয়েকগুন। রাজস্থলীর মৌসুমী ফলের খুচরা ও পাইকারি বাজার এখন কলার দখলে। উপজেলার ৩টি বাজারে যেমন রাজস্থলী বাজার, ইসলামপুর গাইন্দ্যা বাজার, এখন কলার ভরপুর। পাহাড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কলা নিয়ে ট্রাক, মিনিট্রাক ও মাহিন্দ্রা ভিড়ছে বিভিন্ন পয়েন্টে। চট্টগ্রাম থেকে আড়তদাররা এসে ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে চাষিরা কলার দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী বাগানিরা।

তবে কৃষকরা যাহাতে ফসল উৎপাদন করে ক্ষতিতে না পড়েন সে দিকে র্সাবক্ষণিক নজড়ে রেখেন উপজেলা কৃষি অফিসার। রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার, মাগাইনপাড়া, জান্দি মইন, শিলছড়ি, বগাছড়ি, গাইন্দ্যা পুর্ণবাসন ও গাড়ী পাড়া, লংগদু ও চুশাক পাড়া এলাকার কলা চাষের খ্যাতি অনেক। সারা বছর এ এলাকায় বাংলা, আনাজি, চাম্পা, সাগড়, সূর্যমুখি ও নেপালি কলার বাম্পার ফলন হয়। এসব পাহাড়ি কলা রাজস্থলী উপজেলা থেকে জিপ ট্রাক, পিকআপে বোঝাই করে চট্টগ্রামসহ দেশের বাইরে নিয়ে যান ব্যবসায়িরা। এছাড়া সাপ্তাহিক কলার হাট বসে বুধবার রাজস্থলী বাজার, শুক্রুবার ইসলামপুর গাইন্দ্যা বাজার, মঙ্গলবার বাঙ্গালহালিয়া বাজার। এসব কলার ছড়ি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা।

এমনকি বড় সাইজের কলা যা ৪ ফুটের অধিক বড় ছড়া ২-৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। এসব কলার চাহিদা সমতলে বেশি। সাপ্তাহিক হাটের দিন বেচা-কেনা হয় লক্ষ লক্ষ টাকার কলা। উপজেলার জান্দি মইন এলাকার কৃষক কালাবুনা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, গত বছর কলা ভাল দাম পেলেও এ বছর ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের মৌসুমে কলার দাম একটু নিম্ন গতিতে থাকে। রাজস্থলী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার বিশ্বাস বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারনে পাহাড় কলা চাষের উপযোগি। পাহাড়ে এখন আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে কলার চাষ হচ্ছে।

তাই কলার উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু কলা সংরক্ষনে কোন ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। হিমাগার স্থাপনের মাধ্যমে কলা চাষের সম্ভাবনাময় স্থান হিসেবে পরিচিত পাবে রাঙ্গামাটি সহ প্রত্যক উপজেলা। আমরা চেষ্টা করছি একটি কৃষি বাজার সৃষ্টি করার জন্য যেখানে বাগানিরা সরাসরি ফল নিয়ে আসবেন এবং ঢাকা সহ চট্টগ্রাম সারা দেশের বাইরে পাইকাররা নিতে পারেন। ফলে পার্বত্য অঞ্চলের এ রাজস্থলী উপজেলার ফল বাগানিরা ফলের ভাল দাম পাবে বলে আশা করছি।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন, রোববার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
৫০ জন দেখেছেন

রাজস্থলীতে মৌসুমী ফলের বাজার এখন বাংলা কলার জিম্মায়

আপডেট : ১০:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন, রোববার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ে মাটি ভেদে বিভিন্ন জাতের কলা আবাদ হয়। এ এলাকায় কলা আবাদে কিটনাশক ব্যবহার করা হয় না বলেই চলে। রাজস্থলী উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মনোরম পরিবেশের পাহাড়ে দুই জাতের কলা বেশি দেখা যায়। একটি বাংলা কলা অপরটি চাপা কলা। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এর নাম হল কাট্টলি কলা। অন্যটি চাপা কলা যার প্রকৃত নাম চম্পা কলা বলে পরিচিত। উচু পাহাড়ের মাটিতে জন্মায় বলে এগুলোকে পাহাড়ি কলাও বলা হয়। পুষ্টিগুন বেশি হওয়ায় চাপা কলার চেয়ে দ্বিগুন দামে বিক্রি হয় বাংলা কলা।

পার্বত্য রাজস্থলীতে সারা বছরই কলা উৎপাদন হলেও বছরে এ সময়ে কলার উৎপাদন বেড়ে যায় কয়েকগুন। রাজস্থলীর মৌসুমী ফলের খুচরা ও পাইকারি বাজার এখন কলার দখলে। উপজেলার ৩টি বাজারে যেমন রাজস্থলী বাজার, ইসলামপুর গাইন্দ্যা বাজার, এখন কলার ভরপুর। পাহাড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কলা নিয়ে ট্রাক, মিনিট্রাক ও মাহিন্দ্রা ভিড়ছে বিভিন্ন পয়েন্টে। চট্টগ্রাম থেকে আড়তদাররা এসে ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে চাষিরা কলার দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী বাগানিরা।

তবে কৃষকরা যাহাতে ফসল উৎপাদন করে ক্ষতিতে না পড়েন সে দিকে র্সাবক্ষণিক নজড়ে রেখেন উপজেলা কৃষি অফিসার। রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার, মাগাইনপাড়া, জান্দি মইন, শিলছড়ি, বগাছড়ি, গাইন্দ্যা পুর্ণবাসন ও গাড়ী পাড়া, লংগদু ও চুশাক পাড়া এলাকার কলা চাষের খ্যাতি অনেক। সারা বছর এ এলাকায় বাংলা, আনাজি, চাম্পা, সাগড়, সূর্যমুখি ও নেপালি কলার বাম্পার ফলন হয়। এসব পাহাড়ি কলা রাজস্থলী উপজেলা থেকে জিপ ট্রাক, পিকআপে বোঝাই করে চট্টগ্রামসহ দেশের বাইরে নিয়ে যান ব্যবসায়িরা। এছাড়া সাপ্তাহিক কলার হাট বসে বুধবার রাজস্থলী বাজার, শুক্রুবার ইসলামপুর গাইন্দ্যা বাজার, মঙ্গলবার বাঙ্গালহালিয়া বাজার। এসব কলার ছড়ি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা।

এমনকি বড় সাইজের কলা যা ৪ ফুটের অধিক বড় ছড়া ২-৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। এসব কলার চাহিদা সমতলে বেশি। সাপ্তাহিক হাটের দিন বেচা-কেনা হয় লক্ষ লক্ষ টাকার কলা। উপজেলার জান্দি মইন এলাকার কৃষক কালাবুনা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, গত বছর কলা ভাল দাম পেলেও এ বছর ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের মৌসুমে কলার দাম একটু নিম্ন গতিতে থাকে। রাজস্থলী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার বিশ্বাস বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারনে পাহাড় কলা চাষের উপযোগি। পাহাড়ে এখন আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে কলার চাষ হচ্ছে।

তাই কলার উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু কলা সংরক্ষনে কোন ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। হিমাগার স্থাপনের মাধ্যমে কলা চাষের সম্ভাবনাময় স্থান হিসেবে পরিচিত পাবে রাঙ্গামাটি সহ প্রত্যক উপজেলা। আমরা চেষ্টা করছি একটি কৃষি বাজার সৃষ্টি করার জন্য যেখানে বাগানিরা সরাসরি ফল নিয়ে আসবেন এবং ঢাকা সহ চট্টগ্রাম সারা দেশের বাইরে পাইকাররা নিতে পারেন। ফলে পার্বত্য অঞ্চলের এ রাজস্থলী উপজেলার ফল বাগানিরা ফলের ভাল দাম পাবে বলে আশা করছি।

বাখ//আর