০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরে বিরল-রাধিকাপুর মহাসড়কের সংস্কার কাজ শুরু : নিম্নমানের কাজ নিয়ে ক্ষোভ স্থানীয়দের

মোঃ খাদেমুল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি

দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর বিরল রাধিকাপুর মহাসড়কে চলাচল কারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে ১৭.৬৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরল রাধিকাপুর মহাসড়কের সংস্কার কাজ। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু কাজের মান নিম্নমুখী হওয়ায় সংষ্কারকৃত এই তিন কিলোমিটারে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে বিটমিল উঠে যাওয়া, পাথর সরে যাওয়া, রাস্তা আবার খানাখন্দকে ভরে যাওয়া ইত্যাদি অনিয়ম। এ কারণে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাস্তার দুই ধারের বাসিন্দা সহ এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা।

বিরল উপজেলার খোপড়া গ্রামের মোঃ শফিউ উদ্দিনের পত্র মোস্তাকিম বলেন, সম্পূর্ণ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমরা স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও পাত্তা দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পাকুরা বাজারের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে। ভালো ইট ও বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে না। সংস্কারের কয়দিনের মাথায় এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে সংস্কারকৃত অংশ।উঠে যাচ্ছে বিটুমিন,খসে যাচ্ছে ইট। কাজের নামে সরকারের অর্থ লুটপাট করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সড়ক ও জন বিভাগের প্রকৌশলীরা।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী নাছিমুল হাসান লিমন বলেন, এরই মধ্যে সংস্কার কাজের ৩ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। দুই একটি জায়গায় কাজের মান খারাপ হয়েছে যা ঠিকাদাকে বলে আবার পুনঃ সংস্কার করা হয়েছে। কাজের মান যেন ভাল হয় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ দৃষ্টি রাখছি। ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সমন্বয়ে এই প্রকল্পের টাকা নয় ছয় হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের সুদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আমানুল্লাহ আমান বলেন, এই সংস্কার কাজের মোট চুক্তি মূল্য ৮ কোটি ৯৬ লক্ষ ৩ হাজার ১৮৩ টাকা। এরই মধ্যে তিন কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল এ বছরের আগস্ট মাসের চার তারিখ থেকে। কিন্তু ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি। সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে।

এখন পর্যন্ত সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে তিন কিলোমিটার। অবশিষ্ট কাজ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মূলত ডিবিএসটি অর্থাৎ ডাবল বিটুমিন সারফেস ট্রিটমেন্ট মতে কাজ হচ্ছে। তবে সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে, কাজের মান অতি নিম্নমানের এমন বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এই কাজের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদার নুরুজ্জামান বলেন, পাকুরা বাজারের কিছু অংশে কাজ নিম্নমানের হয়েছে যা পরবর্তীতে আমরা আবার ঠিক করে দিয়েছি।অন্যান্য যে সব জায়গায় কাজের মান খারাপ হয়েছে তা আমরা আবার সংষ্কার করে দিব।

তবে এ বিষয়ে জানতে বিরল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বহ্নিশিখা ও উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন কে মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে বিরল সচেতন নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলছে কাজের মান অতি নিম্নমানের এটি দিবালোকের মতো সত্য। মূলত নয় ছয় করে সংস্কার প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতনের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০২:২৪:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
৭৮ জন দেখেছেন

দিনাজপুরে বিরল-রাধিকাপুর মহাসড়কের সংস্কার কাজ শুরু : নিম্নমানের কাজ নিয়ে ক্ষোভ স্থানীয়দের

আপডেট : ০২:২৪:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর বিরল রাধিকাপুর মহাসড়কে চলাচল কারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে ১৭.৬৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরল রাধিকাপুর মহাসড়কের সংস্কার কাজ। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু কাজের মান নিম্নমুখী হওয়ায় সংষ্কারকৃত এই তিন কিলোমিটারে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে বিটমিল উঠে যাওয়া, পাথর সরে যাওয়া, রাস্তা আবার খানাখন্দকে ভরে যাওয়া ইত্যাদি অনিয়ম। এ কারণে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাস্তার দুই ধারের বাসিন্দা সহ এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা।

বিরল উপজেলার খোপড়া গ্রামের মোঃ শফিউ উদ্দিনের পত্র মোস্তাকিম বলেন, সম্পূর্ণ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমরা স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও পাত্তা দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পাকুরা বাজারের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে। ভালো ইট ও বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে না। সংস্কারের কয়দিনের মাথায় এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে সংস্কারকৃত অংশ।উঠে যাচ্ছে বিটুমিন,খসে যাচ্ছে ইট। কাজের নামে সরকারের অর্থ লুটপাট করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সড়ক ও জন বিভাগের প্রকৌশলীরা।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী নাছিমুল হাসান লিমন বলেন, এরই মধ্যে সংস্কার কাজের ৩ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। দুই একটি জায়গায় কাজের মান খারাপ হয়েছে যা ঠিকাদাকে বলে আবার পুনঃ সংস্কার করা হয়েছে। কাজের মান যেন ভাল হয় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ দৃষ্টি রাখছি। ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সমন্বয়ে এই প্রকল্পের টাকা নয় ছয় হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের সুদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আমানুল্লাহ আমান বলেন, এই সংস্কার কাজের মোট চুক্তি মূল্য ৮ কোটি ৯৬ লক্ষ ৩ হাজার ১৮৩ টাকা। এরই মধ্যে তিন কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল এ বছরের আগস্ট মাসের চার তারিখ থেকে। কিন্তু ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি। সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে।

এখন পর্যন্ত সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে তিন কিলোমিটার। অবশিষ্ট কাজ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মূলত ডিবিএসটি অর্থাৎ ডাবল বিটুমিন সারফেস ট্রিটমেন্ট মতে কাজ হচ্ছে। তবে সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে, কাজের মান অতি নিম্নমানের এমন বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এই কাজের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদার নুরুজ্জামান বলেন, পাকুরা বাজারের কিছু অংশে কাজ নিম্নমানের হয়েছে যা পরবর্তীতে আমরা আবার ঠিক করে দিয়েছি।অন্যান্য যে সব জায়গায় কাজের মান খারাপ হয়েছে তা আমরা আবার সংষ্কার করে দিব।

তবে এ বিষয়ে জানতে বিরল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বহ্নিশিখা ও উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন কে মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে বিরল সচেতন নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলছে কাজের মান অতি নিম্নমানের এটি দিবালোকের মতো সত্য। মূলত নয় ছয় করে সংস্কার প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতনের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বাখ//আর