০৪:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে ইউক্রেন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় : ইসলাম গ্রহণ করে বিয়ে

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ইউক্রেনের নাগরিক এন্ড্রি প্রকিপ বাংলাদেশে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে বিয়ে করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় থেকে গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের ভিত্তিতে তিনি নিজের ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তার নতুন নাম মোহাম্মদ।

দুই বছর আগে ফেসবুকে বৃষ্টি ও এন্ড্রির পরিচয় হয়। ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করা এন্ড্রি কাজের সন্ধানে পোল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং মাঝে মাঝে বেলজিয়ামে ভবন নির্মাণের কাজ করেন। তাদের কথোপকথন ধীরে ধীরে গভীর বন্ধুত্বে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে এন্ড্রি বৃষ্টিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

বৃষ্টি প্রথমে এন্ড্রির প্রস্তাবে সাড়া দিতে কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলেন। তবে এন্ড্রি তাকে জানায় যে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করবেন এবং তাকে বিয়ে করবেন। তাদের এই দীর্ঘ দুই বছরের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রূপ নেয়।

গত ১৯ ডিসেম্বর এন্ড্রি বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে আসেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পূর্ব কালাছড়া গ্রামের মৃত কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে বিয়ে করেন।

বৃষ্টি বলেন, “এন্ড্রি নিজে থেকেই ইসলাম গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করে। সে আমাকে ভালোবাসে, এবং তার ওপর আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস ছিল। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল।” বিয়ের পর বৃষ্টি নিজের নাম পরিবর্তন করে বৃষ্টি পুরকিপ রেখেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফরহাদ আলী বলেন, “ইউক্রেনের নাগরিক এখানে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আমাদের গ্রামের মেয়ে বিয়ে করেছে, যা এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।”

এন্ড্রি ওরফে মোহাম্মদ বলেন, “আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। বৃষ্টি একজন ভালো মেয়ে এবং তার প্রতি আমার ভালোবাসা আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। বিয়ে করার পর আমি খুব আনন্দিত।

বৃষ্টি জানান, এন্ড্রি বাংলা ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন। ইংরেজিতে তাদের কথোপকথন হয়, তবে তিনি কিছুটা বাংলা শিখেছেন। বিয়ের পর এন্ড্রি তার স্ত্রীকে পোল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এক মাসের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে আসা এন্ড্রি জানালেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করেই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে পোল্যান্ডে ফিরে যাবে।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
১০০ জন দেখেছেন

প্রেমের টানে ইউক্রেন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় : ইসলাম গ্রহণ করে বিয়ে

আপডেট : ০৩:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ইউক্রেনের নাগরিক এন্ড্রি প্রকিপ বাংলাদেশে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে বিয়ে করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় থেকে গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের ভিত্তিতে তিনি নিজের ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তার নতুন নাম মোহাম্মদ।

দুই বছর আগে ফেসবুকে বৃষ্টি ও এন্ড্রির পরিচয় হয়। ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করা এন্ড্রি কাজের সন্ধানে পোল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং মাঝে মাঝে বেলজিয়ামে ভবন নির্মাণের কাজ করেন। তাদের কথোপকথন ধীরে ধীরে গভীর বন্ধুত্বে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে এন্ড্রি বৃষ্টিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

বৃষ্টি প্রথমে এন্ড্রির প্রস্তাবে সাড়া দিতে কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলেন। তবে এন্ড্রি তাকে জানায় যে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করবেন এবং তাকে বিয়ে করবেন। তাদের এই দীর্ঘ দুই বছরের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রূপ নেয়।

গত ১৯ ডিসেম্বর এন্ড্রি বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে আসেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পূর্ব কালাছড়া গ্রামের মৃত কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে বিয়ে করেন।

বৃষ্টি বলেন, “এন্ড্রি নিজে থেকেই ইসলাম গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করে। সে আমাকে ভালোবাসে, এবং তার ওপর আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস ছিল। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল।” বিয়ের পর বৃষ্টি নিজের নাম পরিবর্তন করে বৃষ্টি পুরকিপ রেখেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফরহাদ আলী বলেন, “ইউক্রেনের নাগরিক এখানে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আমাদের গ্রামের মেয়ে বিয়ে করেছে, যা এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।”

এন্ড্রি ওরফে মোহাম্মদ বলেন, “আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। বৃষ্টি একজন ভালো মেয়ে এবং তার প্রতি আমার ভালোবাসা আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। বিয়ে করার পর আমি খুব আনন্দিত।

বৃষ্টি জানান, এন্ড্রি বাংলা ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন। ইংরেজিতে তাদের কথোপকথন হয়, তবে তিনি কিছুটা বাংলা শিখেছেন। বিয়ের পর এন্ড্রি তার স্ত্রীকে পোল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এক মাসের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে আসা এন্ড্রি জানালেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করেই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে পোল্যান্ডে ফিরে যাবে।

বাখ//আর