০৮:৩১ অপরাহ্ন, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রুবেল আমার সন্তানদের এতিম করেছে : নিহত ওষুধ ব্যবসায়ীর স্ত্রী

কাজী মকবুল, গাজীপুর প্রতিনিধি
আমার স্বামীকে ইট দিয়ে আঘাত করে খুন করেছে কিশোর গ্যাং নেতা রুবেল। আমার সন্তানদের এতিম করেছে। তার ফাঁসি চাই। পরিবারে স্বামীই একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। আমার চারপাশে এখন শুধুই অন্ধকার।’ এসব কথা বলেন গাজীপুরের শ্রীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে হত্যার শিকার ওষুধ ব্যবসায়ী মো. হাসিবুল ইসলাম বাদশার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মালেকা।
নিহত ওষুধ ব্যবসায়ী মো. হাসিবুল ইসলাম বাদশা (৪০) শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মো. আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি একই গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকায় মা মনি নামক একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।
মাহমুদা আক্তার বলেন, বাবার বাসা থেকে খাবার খেয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলে একটি প্রাইভেটকারে গতকাল বুধবার রাত সোয়া ২টার দিকে নিজেদের বাসার সামনের সড়কে পৌঁছাই। এরপর আমার স্বামী ওষুধের দোকানে থাকা বাসার চাবি আনতে যান। এ সময় রুবেলের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাদের গাড়ির সামনে এসে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে আমাকে ও আমার বোনকে শ্লীলতাহানি করেন।
এ সময় গাড়ি চালক শিমুল এসে বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ওষুধের দোকান থেকে এসে উত্ত্যক্তকর পরিস্থিতি দেখে হাতজোড় করে রুবেলকে চলে যাওয়ার অনুরোধ হাসিবুল ইসলাম করেন বলে জানান মাহমুদা আক্তার। তিনি বলেন, ওরা সবাই (কিশোর গ্যাং) মাদকাসক্ত ছিলেন। তাঁরা অনুরোধের কোনো তোয়াক্কা করেনি। আমাদের সবাইকে বাসার ভেতর এনে ফটক বন্ধ করে দেন আমার স্বামী। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর বাসার ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমার স্বামীকে বাড়ির উঠানে রাখা ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন রুবেল। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান। আমার স্বামীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আলহেরা হাসপাতাল ও পরবর্তীতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ফার্মেসি চালিয়ে যা উপার্জন করতেন তা দিয়ে সংসার চলতো। আজ কীভাবে সংসার চলবে? ১১ বছর বয়সী এশামনি, ৭ বছর বয়সী আয়েশামনি, ৫ বছর বয়সী নুসরাত আর আড়াই বছর বয়সী শিশুছেলে মাহাদীর মুখে কে দুমুঠো ডালভাত তুলে দেবে?’
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকায় রুবেলের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং ওষুধ ব্যবসায়ী হাসিবুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা করে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। প্রধান আসামি রুবেল (২২) পলাতক আছেন। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৬:৩৬:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
১২১ জন দেখেছেন

রুবেল আমার সন্তানদের এতিম করেছে : নিহত ওষুধ ব্যবসায়ীর স্ত্রী

আপডেট : ০৬:৩৬:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
আমার স্বামীকে ইট দিয়ে আঘাত করে খুন করেছে কিশোর গ্যাং নেতা রুবেল। আমার সন্তানদের এতিম করেছে। তার ফাঁসি চাই। পরিবারে স্বামীই একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। আমার চারপাশে এখন শুধুই অন্ধকার।’ এসব কথা বলেন গাজীপুরের শ্রীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে হত্যার শিকার ওষুধ ব্যবসায়ী মো. হাসিবুল ইসলাম বাদশার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মালেকা।
নিহত ওষুধ ব্যবসায়ী মো. হাসিবুল ইসলাম বাদশা (৪০) শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মো. আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি একই গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকায় মা মনি নামক একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।
মাহমুদা আক্তার বলেন, বাবার বাসা থেকে খাবার খেয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলে একটি প্রাইভেটকারে গতকাল বুধবার রাত সোয়া ২টার দিকে নিজেদের বাসার সামনের সড়কে পৌঁছাই। এরপর আমার স্বামী ওষুধের দোকানে থাকা বাসার চাবি আনতে যান। এ সময় রুবেলের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাদের গাড়ির সামনে এসে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে আমাকে ও আমার বোনকে শ্লীলতাহানি করেন।
এ সময় গাড়ি চালক শিমুল এসে বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ওষুধের দোকান থেকে এসে উত্ত্যক্তকর পরিস্থিতি দেখে হাতজোড় করে রুবেলকে চলে যাওয়ার অনুরোধ হাসিবুল ইসলাম করেন বলে জানান মাহমুদা আক্তার। তিনি বলেন, ওরা সবাই (কিশোর গ্যাং) মাদকাসক্ত ছিলেন। তাঁরা অনুরোধের কোনো তোয়াক্কা করেনি। আমাদের সবাইকে বাসার ভেতর এনে ফটক বন্ধ করে দেন আমার স্বামী। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর বাসার ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমার স্বামীকে বাড়ির উঠানে রাখা ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন রুবেল। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান। আমার স্বামীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আলহেরা হাসপাতাল ও পরবর্তীতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ফার্মেসি চালিয়ে যা উপার্জন করতেন তা দিয়ে সংসার চলতো। আজ কীভাবে সংসার চলবে? ১১ বছর বয়সী এশামনি, ৭ বছর বয়সী আয়েশামনি, ৫ বছর বয়সী নুসরাত আর আড়াই বছর বয়সী শিশুছেলে মাহাদীর মুখে কে দুমুঠো ডালভাত তুলে দেবে?’
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকায় রুবেলের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং ওষুধ ব্যবসায়ী হাসিবুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা করে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। প্রধান আসামি রুবেল (২২) পলাতক আছেন। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাখ//এস