১০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পর ব্যবসায়ীকে উদ্ধার

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মুদি মনোহরি ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বনিককে (৭৬) তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা লুট করে মালিককে অপহরন করার মূল মাষ্টার মাইন্ড ছিল মো. মাসুদ শরীফ। মাসুদ ফ্রেশ কোম্পানীর বাউফল উপজেলার বিক্রয় প্রতিনিধি ও ঝালকাঠীর বালিগোনা গ্রামের মো. আকবর শরীফের ছেলে। শিবানন্দ রায় বনিক ফ্রেশ কোম্পানীর পরিবেশক হওয়ায় তার লেনদেন সম্পর্কে জানা ছিল।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় মাসুদ শরীফ (২৪) মো. মিরাজ মৃধা (২০) পিতা- মো. মিন্টু, মো. জহির প্যাদা (২৭) পিতা-বাবুল প্যাদা, বিধান মিস্ত্রী (২২) পিতা-গকুল চন্দ্র মিস্ত্রি এদের বাড়ি নাজিরপুর তাতেরকাঠী ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। মো. মাহফুজ (১৬) ভোলার দক্ষিন আইচার চরকচুয়ার জাকির সিকদারের ছেলে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ডাকাতির ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬ শ ৮০ টাকা ও একটি চাইনিজ কুড়াল, দুইটি রামদা, ৬টি মোবাইল, কেডস জুতা দুই জোড়া।

শিবানন্দ রায় বনিকের বোনের মেয়ে অ্যডভোকেট অনুরাধা রায় বনিক বলেন, শনিবার দুপুরে তার মামার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। সেখানে তার কাছে এক কোটি টাকা দাবী করলে অপহরন কারীদের সঙ্গে দেনদরবার চলে। এক পর্যায়ে রোববার বিকাশের মাধ্যমে ৫ টি নম্বরে ৯৬ হাজার টাকা নেয় অপহরনকারীরা। বাকী টাকা পড়ে দিবে এই চুক্তিতে তারা বড়ডালিমার কচুয়ার একটি পরিত্যাক্ত স্থানে রেখে যায়।

এদিকে বিষয়টি শিবানন্দ রায়ের পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনকে জানালে তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থান সনাক্তের চেষ্টা করেন। প্রায় ৫২ ঘন্টা পর রোববার দিবাগত রাত দেরটার সময় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমার কচুয়া গ্রামে ডিবি ও পুলিশের যৌথ টিম অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধার কাজে নেতৃত্বে দেন বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম।

প্রশাসন ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বনিককে ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। ওসি আতিকুল ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে শিবানন্দ রায় বনিককে অক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ আছেন।

এ ঘটনায় বিস্তারিত তুলে সাংবাদিকদের প্রেসে ব্রিফিং করে জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, ডাকাতদল কোটিপতি হওয়ায় আশায় ডাকাতি করেছে। ডাকাতির সঙ্গে মোট ৯ জন জড়িত। এখন ৫ জন গ্রেপ্তার হলেও বাকী ৪ জনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফ মাহমুদ শাকুর, বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন।

শিবানন্দ রায় বনিক ওই বন্দরের একজন বড় ব্যবসায়ী। তিনি চাল, ডাল, আটাসহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারী) দোকানের সারা দিনের হিসাব বুঝে নিয়ে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাত সোয়া ১০ টার দিকে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী দল দোকানে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শিবানন্দ রায় বনিকসহ দোকান কর্মচারী শংকর (৩৪) ও তাপস (৩৫) নামে দুই জনকে বেঁধে ফেলে ডাকাতদল। পরে তারা দোকানের ক্যাশে থাকা পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে শিবানন্দকে বেঁধে ট্রলারে উঠিয়ে অপহরণ করে।

এর প্রতিবাদের বন্দরের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছিল।

বাখ//ইস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
১৫৭ জন দেখেছেন

বাউফলে অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পর ব্যবসায়ীকে উদ্ধার

আপডেট : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের মুদি মনোহরি ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বনিককে (৭৬) তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা লুট করে মালিককে অপহরন করার মূল মাষ্টার মাইন্ড ছিল মো. মাসুদ শরীফ। মাসুদ ফ্রেশ কোম্পানীর বাউফল উপজেলার বিক্রয় প্রতিনিধি ও ঝালকাঠীর বালিগোনা গ্রামের মো. আকবর শরীফের ছেলে। শিবানন্দ রায় বনিক ফ্রেশ কোম্পানীর পরিবেশক হওয়ায় তার লেনদেন সম্পর্কে জানা ছিল।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় মাসুদ শরীফ (২৪) মো. মিরাজ মৃধা (২০) পিতা- মো. মিন্টু, মো. জহির প্যাদা (২৭) পিতা-বাবুল প্যাদা, বিধান মিস্ত্রী (২২) পিতা-গকুল চন্দ্র মিস্ত্রি এদের বাড়ি নাজিরপুর তাতেরকাঠী ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। মো. মাহফুজ (১৬) ভোলার দক্ষিন আইচার চরকচুয়ার জাকির সিকদারের ছেলে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ডাকাতির ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬ শ ৮০ টাকা ও একটি চাইনিজ কুড়াল, দুইটি রামদা, ৬টি মোবাইল, কেডস জুতা দুই জোড়া।

শিবানন্দ রায় বনিকের বোনের মেয়ে অ্যডভোকেট অনুরাধা রায় বনিক বলেন, শনিবার দুপুরে তার মামার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। সেখানে তার কাছে এক কোটি টাকা দাবী করলে অপহরন কারীদের সঙ্গে দেনদরবার চলে। এক পর্যায়ে রোববার বিকাশের মাধ্যমে ৫ টি নম্বরে ৯৬ হাজার টাকা নেয় অপহরনকারীরা। বাকী টাকা পড়ে দিবে এই চুক্তিতে তারা বড়ডালিমার কচুয়ার একটি পরিত্যাক্ত স্থানে রেখে যায়।

এদিকে বিষয়টি শিবানন্দ রায়ের পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনকে জানালে তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থান সনাক্তের চেষ্টা করেন। প্রায় ৫২ ঘন্টা পর রোববার দিবাগত রাত দেরটার সময় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমার কচুয়া গ্রামে ডিবি ও পুলিশের যৌথ টিম অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধার কাজে নেতৃত্বে দেন বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম।

প্রশাসন ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বনিককে ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। ওসি আতিকুল ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে শিবানন্দ রায় বনিককে অক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ আছেন।

এ ঘটনায় বিস্তারিত তুলে সাংবাদিকদের প্রেসে ব্রিফিং করে জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, ডাকাতদল কোটিপতি হওয়ায় আশায় ডাকাতি করেছে। ডাকাতির সঙ্গে মোট ৯ জন জড়িত। এখন ৫ জন গ্রেপ্তার হলেও বাকী ৪ জনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফ মাহমুদ শাকুর, বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন।

শিবানন্দ রায় বনিক ওই বন্দরের একজন বড় ব্যবসায়ী। তিনি চাল, ডাল, আটাসহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারী) দোকানের সারা দিনের হিসাব বুঝে নিয়ে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাত সোয়া ১০ টার দিকে ৮-১০ জনের একটি মুখোশধারী দল দোকানে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শিবানন্দ রায় বনিকসহ দোকান কর্মচারী শংকর (৩৪) ও তাপস (৩৫) নামে দুই জনকে বেঁধে ফেলে ডাকাতদল। পরে তারা দোকানের ক্যাশে থাকা পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে শিবানন্দকে বেঁধে ট্রলারে উঠিয়ে অপহরণ করে।

এর প্রতিবাদের বন্দরের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছিল।

বাখ//ইস