০৬:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজস্থলীর কুটুরিয়া পাড়া জরাজীর্ণ ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

মো. আজগর আলী খান, নিজস্ব প্রতিবেদক

রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলার তিন নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কুটুরিয়া পাড়ার ছড়ার ওপর থাকা একটি ব্রিজ দীর্ঘদিন থেকে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ব্রিজের পাটাতন ও রেলিং ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙাচোরা ও নড়বড়ে এ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং এ ইউনিয়নের কয়েক হাজার পথচারীসহ ছোট- ছোট যানবাহন চলাচল করছে।

এছাড়া ব্রিজের ঠিক পূর্ব-দক্ষিণ পাশে রয়েছে মাদ্রাসা ও গ্রাম। গ্রামের শত শত লোক এ ব্রিজটি দিয়েই চলাফেরা করে। যেকোনো মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে বাঙ্গালহালিয়া বাজার ইউনিয়ন পরিষদ সহ সড়কের যাতায়াত বন্ধসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। জরাজীর্ণ এ ব্রিজটি ভেঙে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার তিন নং বাঙ্গালহালিয়া সফিপুর কুটুরিয়া পাড়ার ছড়ার ওপর প্রায় দুই যুগ আগে এ ব্রিজটি নির্মিত হয়। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও আড়াই মিটার প্রস্থের এ ব্রিজটি দিয়ে ইউনিযনের হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। প্রতিদিন চলাচলের জন্য ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয় কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ মাদরাসার কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে।

তাছাড়া ছোট ছোট পরিবহন ও কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনের যাতায়াতও এ ব্রিজটি দিয়ে। কিন্তু প্রায় ছয় সাত বছর আগে জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটিতে ভাঙন দেখা দেয়। ব্রিজটির পাটাতন ও রেলিংয়ের কনক্রিট খসে রড বেরিয়ে যায়। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ অংশের রেলিং ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এবং পাটাতনের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের মতো সৃষ্টি হয়েছে।

তারা জানায়, ব্রিজটি একদিকে জরাজীর্ণ, অন্যদিকে একেবারে সংকুচিত। যার দরুন পণ্যবাহী কোনো যান এ ব্রিজটি সহজে চলাচল করতে পারছে না।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী মো. সাইফুল জানান, প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি পার হয়ে তাকে কলেজে আসা-যাওয়া করতে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে হলেও এ ব্রিজটির জায়গায় নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি তার।

স্থানীয় কৃষকরা বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে এ ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে গেলে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ হয়ে পড়বে।

৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কাইয়ুম হোসেন মিরাজ জানান, ব্রিজটি ভাঙাচোরা হওয়ার কারণে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটি পার হয়েই তাকে বাজার, চন্দ্রঘোনা থানা ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় বড় অনেক ব্রিজ নির্মাণ করছেন। এ এলাকার হাজারো মানুষের কথা চিন্তা করে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

রাজস্থলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী অনুপ বড়ুয়া বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটির স্থলে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে । প্রকল্পটি অনুমোদন হলে সেখানে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে পাঁচ মিটার প্রস্থের ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:৪৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
১৭৬ জন দেখেছেন

রাজস্থলীর কুটুরিয়া পাড়া জরাজীর্ণ ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

আপডেট : ০৩:৪৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলার তিন নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কুটুরিয়া পাড়ার ছড়ার ওপর থাকা একটি ব্রিজ দীর্ঘদিন থেকে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ব্রিজের পাটাতন ও রেলিং ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙাচোরা ও নড়বড়ে এ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং এ ইউনিয়নের কয়েক হাজার পথচারীসহ ছোট- ছোট যানবাহন চলাচল করছে।

এছাড়া ব্রিজের ঠিক পূর্ব-দক্ষিণ পাশে রয়েছে মাদ্রাসা ও গ্রাম। গ্রামের শত শত লোক এ ব্রিজটি দিয়েই চলাফেরা করে। যেকোনো মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে বাঙ্গালহালিয়া বাজার ইউনিয়ন পরিষদ সহ সড়কের যাতায়াত বন্ধসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। জরাজীর্ণ এ ব্রিজটি ভেঙে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার তিন নং বাঙ্গালহালিয়া সফিপুর কুটুরিয়া পাড়ার ছড়ার ওপর প্রায় দুই যুগ আগে এ ব্রিজটি নির্মিত হয়। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও আড়াই মিটার প্রস্থের এ ব্রিজটি দিয়ে ইউনিযনের হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। প্রতিদিন চলাচলের জন্য ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয় কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ মাদরাসার কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে।

তাছাড়া ছোট ছোট পরিবহন ও কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনের যাতায়াতও এ ব্রিজটি দিয়ে। কিন্তু প্রায় ছয় সাত বছর আগে জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটিতে ভাঙন দেখা দেয়। ব্রিজটির পাটাতন ও রেলিংয়ের কনক্রিট খসে রড বেরিয়ে যায়। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ অংশের রেলিং ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এবং পাটাতনের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের মতো সৃষ্টি হয়েছে।

তারা জানায়, ব্রিজটি একদিকে জরাজীর্ণ, অন্যদিকে একেবারে সংকুচিত। যার দরুন পণ্যবাহী কোনো যান এ ব্রিজটি সহজে চলাচল করতে পারছে না।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী মো. সাইফুল জানান, প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি পার হয়ে তাকে কলেজে আসা-যাওয়া করতে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে হলেও এ ব্রিজটির জায়গায় নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি তার।

স্থানীয় কৃষকরা বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে এ ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে গেলে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ হয়ে পড়বে।

৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কাইয়ুম হোসেন মিরাজ জানান, ব্রিজটি ভাঙাচোরা হওয়ার কারণে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটি পার হয়েই তাকে বাজার, চন্দ্রঘোনা থানা ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় বড় অনেক ব্রিজ নির্মাণ করছেন। এ এলাকার হাজারো মানুষের কথা চিন্তা করে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

রাজস্থলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী অনুপ বড়ুয়া বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটির স্থলে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে । প্রকল্পটি অনুমোদন হলে সেখানে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে পাঁচ মিটার প্রস্থের ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

বাখ//আর