০৮:১৭ অপরাহ্ন, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের আমলে একজন নির্যাতিত কর্মীর জীবনের গল্প

বিশেষ প্রতিবেদক
আমি এখন প্রায় পঙ্গু, আমাকে পুলিশ এমনভাবে নির্যাতন করছে যা ভাষায় বর্ণনা দেয়া যাবে না। আমি এখন ১৫ বছর ধরে পঙ্গু, ঠিকমত ঘুমাতে পারিনা, হাটতে পারি না, বসতে পারি না, দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। ব্যবসার যা পুঁজি ছিল আমার সব ব্যয় করে ফেলছি চিকিৎসা খরচে। তারপরও আমি সুস্থ না। আমি এখন নিঃস্ব। উপরোক্ত কথাগুলো বললো, ফরিদপুর জেলা শাখার জামায়াতে ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য ও শহরের টেপাখোলা অঞ্চল (১৯নং ওয়ার্ড) এর সেক্রেটারি  মো: আয়নাল হোসেন। তিনি বাসা ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার বিহারীপট্টি নিবাসী।
আয়নাল হোসেন আরো বলেন, একাধিকবার জেল খেটেছি, গ্রেফতার হয়েছি। ২০১৩ সালের ৮ই মে একটি প্রোগ্রাম হওয়ার প্লান ছিল থানার মোড়। আমরা জামায়াতের কর্মীরা শাহ্ জালাল ব্যাংকর সামনে জড়ো হই, এমন সময় উক্ত স্থানে পুলিশ হাজির হয়, তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে আমি সহ একাধিক নেতাকে গ্রেফতার করে। বিজয় বসাকের সাথে ছিলেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। তার মধ্যে অন্যতম ছিল এস,আই নজরুল, এসআই মশিউরসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য। প্রথমে আমাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানায় ধরে নিয়ে যায়।
থানায় নিয়ে আমাকে চোখ, হাত, পা বেধে বেধরক মারধর করে। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর কি হয়েছে আর বলতে পারবো না। জ্ঞান ফিরলেই মার শুরু করতো। এভাবে দুইদিন থানায় নির্যাতন চালায়। আমাকে দুই দিন পর আদালতে চালান করে দেয়। আমার জামিন নামঞ্জুর হয়। আমি প্রায় এক মাস জেল খেটে জামিনে বের হই। জামিনে বের হলাম ঠিকই, কিন্তু আমি আর স্বাভাবিক জীবনে চলাফেরা করতে পারছি না। আমার ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, ঐ প্রতিষ্ঠানের যত পুঁজি ছিল তার সবটুকু চিকিৎসায় খরচ করে ফেলছি, এখন কোন রকম ব্যবসা করে টিকে আছি।
তিনি আরো বলেন, আমি মানুষের মত স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। তিনি বলেন, আমি নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করবো।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:০২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
১০৮ জন দেখেছেন

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের আমলে একজন নির্যাতিত কর্মীর জীবনের গল্প

আপডেট : ০৭:০২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
আমি এখন প্রায় পঙ্গু, আমাকে পুলিশ এমনভাবে নির্যাতন করছে যা ভাষায় বর্ণনা দেয়া যাবে না। আমি এখন ১৫ বছর ধরে পঙ্গু, ঠিকমত ঘুমাতে পারিনা, হাটতে পারি না, বসতে পারি না, দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। ব্যবসার যা পুঁজি ছিল আমার সব ব্যয় করে ফেলছি চিকিৎসা খরচে। তারপরও আমি সুস্থ না। আমি এখন নিঃস্ব। উপরোক্ত কথাগুলো বললো, ফরিদপুর জেলা শাখার জামায়াতে ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য ও শহরের টেপাখোলা অঞ্চল (১৯নং ওয়ার্ড) এর সেক্রেটারি  মো: আয়নাল হোসেন। তিনি বাসা ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার বিহারীপট্টি নিবাসী।
আয়নাল হোসেন আরো বলেন, একাধিকবার জেল খেটেছি, গ্রেফতার হয়েছি। ২০১৩ সালের ৮ই মে একটি প্রোগ্রাম হওয়ার প্লান ছিল থানার মোড়। আমরা জামায়াতের কর্মীরা শাহ্ জালাল ব্যাংকর সামনে জড়ো হই, এমন সময় উক্ত স্থানে পুলিশ হাজির হয়, তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে আমি সহ একাধিক নেতাকে গ্রেফতার করে। বিজয় বসাকের সাথে ছিলেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। তার মধ্যে অন্যতম ছিল এস,আই নজরুল, এসআই মশিউরসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য। প্রথমে আমাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানায় ধরে নিয়ে যায়।
থানায় নিয়ে আমাকে চোখ, হাত, পা বেধে বেধরক মারধর করে। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর কি হয়েছে আর বলতে পারবো না। জ্ঞান ফিরলেই মার শুরু করতো। এভাবে দুইদিন থানায় নির্যাতন চালায়। আমাকে দুই দিন পর আদালতে চালান করে দেয়। আমার জামিন নামঞ্জুর হয়। আমি প্রায় এক মাস জেল খেটে জামিনে বের হই। জামিনে বের হলাম ঠিকই, কিন্তু আমি আর স্বাভাবিক জীবনে চলাফেরা করতে পারছি না। আমার ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, ঐ প্রতিষ্ঠানের যত পুঁজি ছিল তার সবটুকু চিকিৎসায় খরচ করে ফেলছি, এখন কোন রকম ব্যবসা করে টিকে আছি।
তিনি আরো বলেন, আমি মানুষের মত স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। তিনি বলেন, আমি নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করবো।
বাখ//আর