০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রামের পথে আর রসের কলসি নিয়ে বিক্রেতা চোখে পড়ে না : বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

শরিফুল ইসলাম, বেনাপোল প্রতিনিধি

শীতের শুরুতে এখন তেমন আর রসের কলসি নিয়ে বিক্রেতা চোখে পড়েনা গ্রামের পথে। শীতকালে হরেক রকমের পিঠার আয়োজন হয়, কিন্তু খেজুর গাছের বিলুপ্তিতে সে রস আর মিলছেনা।ফলে নানা রকমের পিঠার বাহার আর চোখে পড়েনা।

কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ।এক সময় শার্শার মাঠে- বাড়ির আঙ্গিনায়,রাস্তার দু’ধারে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। এখন কিছু কিছু খেজুর গাছ থাকলে তা সংরক্ষন করাটা যেন আমরা গরজ মনে করছিনা।স্থল বন্দর বেনাপোল পৌরসভার সাদীপুর গ্রামের আশি বছরের বৃদ্ধা হাসান মিয়া বলেন,বাবা আমরা এক ১ টাকা দিয়ে এক কলসি রস কিনেছি। এ রস দিয়ে খেজুরের গুড়, ভাপা পিঠের আয়োজর এক মহোৎসব চলতো, এখন এ কথা যেন কল্প কাহিনী।এখন প্রতি কলসি রসের দাম ৩০০-৩৫০ টাকা।

স্থল বন্দর বেনাপোল ও শার্শার মাঠে তেমন একটা খেজুর গাছ দেখা না গেলেও ঝিনাইদহ, মেহেরপুর,চৌগাছা অঞ্চলের মাঠে বেশ খেজুর গাছ দেখা যায়।

শীতের শুরতেই খেজুর গাছ কেটে রসের সন্ধানে গাছিরা তৎপর।গ্রামীন এতিহ্য রক্ষায় ও রসের চাহিদা মেটাতে চৌগাছার স্বরুপদা গ্রামের রেজাউল হোসেন জানান আমাদের ১৬ টার মত খেজুর গাছ রয়েছে।
খেজুর বাগান থেকে নিত্য নিত্যদিন ৭-৮ কলস খেজুর রস আহরন করে থাকেন। প্রতি কলসি রস ২০০-২৫০ টাকা বিক্রি করে থাকি।

৬৫ বছরের আব্দুল সালাল বলেন, আমরা এখন অলস হয়ে গেছি। দোকান হতে বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় ক্রয় করে খাই, কিন্তু খেজুরের রস আহরনে প্রচষ্টা আমাদের নেই।যে সব খেজুর গাছ আছে, সেগুলো ও রস আহরনের জন্য পরিচর্যা করছি না, কিভাবে সুমিষ্ট রস
পাবো।

যশোরের শার্শা উপজেলার উপজেলার কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা বলেন, খেজুর রস ও গুড় এদেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুড় মুড়ি খেতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। আমাদের চতুরদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক খেজুর গাছ, সেগুলোকে পরিচর্যা করা প্রয়োজন। গ্রাম বাংলার উৎসব ফেরাতে আমাদের কে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি খেজুর গাছের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিৎ।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০১:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫
১৩২ জন দেখেছেন

গ্রামের পথে আর রসের কলসি নিয়ে বিক্রেতা চোখে পড়ে না : বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

আপডেট : ০১:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

শীতের শুরুতে এখন তেমন আর রসের কলসি নিয়ে বিক্রেতা চোখে পড়েনা গ্রামের পথে। শীতকালে হরেক রকমের পিঠার আয়োজন হয়, কিন্তু খেজুর গাছের বিলুপ্তিতে সে রস আর মিলছেনা।ফলে নানা রকমের পিঠার বাহার আর চোখে পড়েনা।

কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ।এক সময় শার্শার মাঠে- বাড়ির আঙ্গিনায়,রাস্তার দু’ধারে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। এখন কিছু কিছু খেজুর গাছ থাকলে তা সংরক্ষন করাটা যেন আমরা গরজ মনে করছিনা।স্থল বন্দর বেনাপোল পৌরসভার সাদীপুর গ্রামের আশি বছরের বৃদ্ধা হাসান মিয়া বলেন,বাবা আমরা এক ১ টাকা দিয়ে এক কলসি রস কিনেছি। এ রস দিয়ে খেজুরের গুড়, ভাপা পিঠের আয়োজর এক মহোৎসব চলতো, এখন এ কথা যেন কল্প কাহিনী।এখন প্রতি কলসি রসের দাম ৩০০-৩৫০ টাকা।

স্থল বন্দর বেনাপোল ও শার্শার মাঠে তেমন একটা খেজুর গাছ দেখা না গেলেও ঝিনাইদহ, মেহেরপুর,চৌগাছা অঞ্চলের মাঠে বেশ খেজুর গাছ দেখা যায়।

শীতের শুরতেই খেজুর গাছ কেটে রসের সন্ধানে গাছিরা তৎপর।গ্রামীন এতিহ্য রক্ষায় ও রসের চাহিদা মেটাতে চৌগাছার স্বরুপদা গ্রামের রেজাউল হোসেন জানান আমাদের ১৬ টার মত খেজুর গাছ রয়েছে।
খেজুর বাগান থেকে নিত্য নিত্যদিন ৭-৮ কলস খেজুর রস আহরন করে থাকেন। প্রতি কলসি রস ২০০-২৫০ টাকা বিক্রি করে থাকি।

৬৫ বছরের আব্দুল সালাল বলেন, আমরা এখন অলস হয়ে গেছি। দোকান হতে বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় ক্রয় করে খাই, কিন্তু খেজুরের রস আহরনে প্রচষ্টা আমাদের নেই।যে সব খেজুর গাছ আছে, সেগুলো ও রস আহরনের জন্য পরিচর্যা করছি না, কিভাবে সুমিষ্ট রস
পাবো।

যশোরের শার্শা উপজেলার উপজেলার কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা বলেন, খেজুর রস ও গুড় এদেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুড় মুড়ি খেতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। আমাদের চতুরদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক খেজুর গাছ, সেগুলোকে পরিচর্যা করা প্রয়োজন। গ্রাম বাংলার উৎসব ফেরাতে আমাদের কে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি খেজুর গাছের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিৎ।

বাখ//আর