০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাটহাজারীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হাটহাজারীতে উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের প্রশিক্ষণ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক প্রচারণায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান – মেম্বারদের দায়িত্বশীল হওয়া জরুরী- গ্রাম আদালত সমন্বয়কারী, হাটহাজারী উপজেলা।

আজ ৯ জানুয়ারি ২০২৫ বেলা ১০টায় হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানের ভূমিকা শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওরিয়েন্টেশনে গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, গ্রাম আদালতে পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব,গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা,নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার বৃদ্ধি করা।,গ্রাম আদালতের মামলার ফিস,ছোটখাট বিরোধে জনসাধারণকে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয় ও প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বিষয়ক সেশন পরিচালনা করা হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায় ) প্রকল্প এর আওতায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। স্থানীয় ছোট খাটো দেওয়ানী ও ফোজদারি বিরোধ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নিস্পত্তির লক্ষ্যে সরকার ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রণয়ণ করেন।

২০২৪ সালে এ আইনটি সংশোধন করা হয় এবং ২০১৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী গ্রামীণ ছোট খাট দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ বিবাদ স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির অন্যতম বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের সেবা প্রার্থীদের বিশেষত নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রা ইউপি সদস্যদের ভূমিকা রয়েছে।

এছাড়াও সমন বিতরণ এজলাস কক্ষের নিরাপত্তা, বিচারক ও বিচার প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন গ্রাম পুলিশগণ। আদালতে প্রতিটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার শুরু হতে নিস্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের জন্য গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী ফরমস ও রেজিস্টার এর মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নথিপত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক।

গ্রামীণ জনগণের দৌড় গৌড়ায় বিচারিক সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতার সাথে ন্যায় বিচার ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত গ্রাম আদালতের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠি নামমাত্র ফিস দিয়ে(দেওয়ানী মামলার ফিস ২০টাকা,ফৌজদারী মামলার ফিস ১০ টাকা) কম সময়ে, কম খরচে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক সেবা নিয়ে উপকৃত হবার সুযোগ রয়েছে।ফলে স্থানীয় বিরোধ সমূহ নিয়ে জেলা আদালতে জনগণকে দৌঁড়াতে হবে না। হতে হবে না কোন রকেমের হয়রানির শিকার।

এতে করে জনসাধারণ যেমন স্বাচ্ছন্দে বিচারিক সেবা পাবেন তেমনি উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানোর ক্ষেত্রে ও ভূমিকা রাখবে গ্রাম আদালত । কিন্তু গ্রাম আদালত আইন,বিধিমালা এবং এ আদালতের সেবা সম্পকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,সদস্য,সচিব ও গ্রামীন সাধারণ জনগণ সচেতন নয়। ফলে এলাকার জনগণ সেবা পেতে যেমন পারছেন না তেমনি ইউনিয়ন পরিষদ ও যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে ইউপি সদস্যদের।

স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদলত সক্রিয় করণ (তৃতীয় পর্যায় ) প্রকল্প বাস্তবায়ন সহযোগি সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইপসা (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন। ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিতে এ ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা গ্রাম আদালত সমন্বয়কারী, জনাব মোহাম্মদ বাদশা আলম। এছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন, অত্র ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৫:২৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫
১৯২ জন দেখেছেন

হাটহাজারীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

আপডেট : ০৫:২৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

হাটহাজারীতে উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের প্রশিক্ষণ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক প্রচারণায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান – মেম্বারদের দায়িত্বশীল হওয়া জরুরী- গ্রাম আদালত সমন্বয়কারী, হাটহাজারী উপজেলা।

আজ ৯ জানুয়ারি ২০২৫ বেলা ১০টায় হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানের ভূমিকা শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওরিয়েন্টেশনে গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, গ্রাম আদালতে পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব,গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা,নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার বৃদ্ধি করা।,গ্রাম আদালতের মামলার ফিস,ছোটখাট বিরোধে জনসাধারণকে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয় ও প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বিষয়ক সেশন পরিচালনা করা হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায় ) প্রকল্প এর আওতায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। স্থানীয় ছোট খাটো দেওয়ানী ও ফোজদারি বিরোধ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নিস্পত্তির লক্ষ্যে সরকার ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রণয়ণ করেন।

২০২৪ সালে এ আইনটি সংশোধন করা হয় এবং ২০১৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী গ্রামীণ ছোট খাট দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ বিবাদ স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির অন্যতম বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের সেবা প্রার্থীদের বিশেষত নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রা ইউপি সদস্যদের ভূমিকা রয়েছে।

এছাড়াও সমন বিতরণ এজলাস কক্ষের নিরাপত্তা, বিচারক ও বিচার প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন গ্রাম পুলিশগণ। আদালতে প্রতিটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার শুরু হতে নিস্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের জন্য গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী ফরমস ও রেজিস্টার এর মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নথিপত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক।

গ্রামীণ জনগণের দৌড় গৌড়ায় বিচারিক সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতার সাথে ন্যায় বিচার ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত গ্রাম আদালতের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠি নামমাত্র ফিস দিয়ে(দেওয়ানী মামলার ফিস ২০টাকা,ফৌজদারী মামলার ফিস ১০ টাকা) কম সময়ে, কম খরচে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক সেবা নিয়ে উপকৃত হবার সুযোগ রয়েছে।ফলে স্থানীয় বিরোধ সমূহ নিয়ে জেলা আদালতে জনগণকে দৌঁড়াতে হবে না। হতে হবে না কোন রকেমের হয়রানির শিকার।

এতে করে জনসাধারণ যেমন স্বাচ্ছন্দে বিচারিক সেবা পাবেন তেমনি উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানোর ক্ষেত্রে ও ভূমিকা রাখবে গ্রাম আদালত । কিন্তু গ্রাম আদালত আইন,বিধিমালা এবং এ আদালতের সেবা সম্পকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,সদস্য,সচিব ও গ্রামীন সাধারণ জনগণ সচেতন নয়। ফলে এলাকার জনগণ সেবা পেতে যেমন পারছেন না তেমনি ইউনিয়ন পরিষদ ও যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে ইউপি সদস্যদের।

স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদলত সক্রিয় করণ (তৃতীয় পর্যায় ) প্রকল্প বাস্তবায়ন সহযোগি সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইপসা (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন। ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিতে এ ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা গ্রাম আদালত সমন্বয়কারী, জনাব মোহাম্মদ বাদশা আলম। এছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন, অত্র ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।

বাখ//আর