১১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষেতেই নষ্ট হলো কৃষকের ৬ একর জমির পাকা ধান

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর বাউফলে এক কৃষকের রোপন করা পাকা ধান কাটতে বাধা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ফলে ৬ একর জমির পাকা ধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এতে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তোভোগী ওই কৃষকরা। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ বেল্লাল ব্যাপারী ও একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহআলম রাড়ীর বিরুদ্ধে।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর রায়সাহেব সরেজমিনে দেখা গেছে, ছয় একর জমির ধান মাটিতে মিশে গেছে। ধানের ছড়া ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়েছে। ফলে নষ্ট হয়ে গেছে পাকা ধান। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে ইদুরের গর্তে ধানের ছড়া। দেখার যেন কেউ নেই। পাশে দাড়িয়ে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন চাষি কবির ফকির ও বশির ফকির। এ প্রতিবেদককে দেখা মাত্রই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন তাঁরা।

কবির ফকির বললেন, স্যার আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। কত কষ্ট করে রোদবৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত পরিশ্রম করে ক্ষেতে ধান রোপন করে ছিলাম। সেই কষ্টের ধান চোখের সামনে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমাদের করার কিছইু ছিল না। কেন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে (১লা বৈশাখ থেকে ৩০ শা চৌত্র মাস-১৪৩১ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত জমির মালিক রেজাউল করিম (মন্টু) মিয়ার কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৩০ একার জমি ক্রয় করি।

ওই ক্রয়করা জমির ৬ একর জমির ধান কাটতে গেলে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ বেল্লাল ব্যাপরী ও একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি শাহ আলম রাড়ী তাঁদের নিজেদের জমি দাবি করে লোকজন নিয়ে বাধা প্রদান করেন। এক পর্যায়ে ধান কেটে নিলে প্রান নাশের হুমকি দেন তাঁরা। তাই আমরা দুই ভাই ভয়ে ভীত হয়ে কারো কাছে কোন অভিযোগ দেইনি।

ধান কাটতে বাধা দেওয়র কথা অস্বীকার করে বিএনপি নেতা বেল্লাল ব্যাপরী বলেন, জমির মালিক রেজউল করিম মন্টুর কাছ থেকে আমি তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ একর জমি একসনা ক্রয় করেছি আমি। এর আগে একই জমি তিনি বশির ফকির ও কবির ফকিরের কাছে বিক্রি করেছিলো কিনা তা আমার জানা নেই।

জমি বিক্রেতা রেজাউল করিম (মন্টু) বলেন, আমি ঢাকায় থাকি। স্থানীয় কৃষক বশির ও কবির ফকিরের কাছে আমি জমি বিক্রি করেছি। অন্য কারো কাছে জমি বিক্রি করি নাই। তবে বিএনপি নেতারা কেন তাদের পাকা ধান কাটতে বাধা দিয়েছেন তা আমি বলতে পারব না।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৬:৩৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
১২০ জন দেখেছেন

ক্ষেতেই নষ্ট হলো কৃষকের ৬ একর জমির পাকা ধান

আপডেট : ০৬:৩৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর বাউফলে এক কৃষকের রোপন করা পাকা ধান কাটতে বাধা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ফলে ৬ একর জমির পাকা ধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এতে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তোভোগী ওই কৃষকরা। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ বেল্লাল ব্যাপারী ও একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহআলম রাড়ীর বিরুদ্ধে।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর রায়সাহেব সরেজমিনে দেখা গেছে, ছয় একর জমির ধান মাটিতে মিশে গেছে। ধানের ছড়া ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়েছে। ফলে নষ্ট হয়ে গেছে পাকা ধান। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে ইদুরের গর্তে ধানের ছড়া। দেখার যেন কেউ নেই। পাশে দাড়িয়ে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন চাষি কবির ফকির ও বশির ফকির। এ প্রতিবেদককে দেখা মাত্রই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন তাঁরা।

কবির ফকির বললেন, স্যার আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। কত কষ্ট করে রোদবৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত পরিশ্রম করে ক্ষেতে ধান রোপন করে ছিলাম। সেই কষ্টের ধান চোখের সামনে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমাদের করার কিছইু ছিল না। কেন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে (১লা বৈশাখ থেকে ৩০ শা চৌত্র মাস-১৪৩১ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত জমির মালিক রেজাউল করিম (মন্টু) মিয়ার কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৩০ একার জমি ক্রয় করি।

ওই ক্রয়করা জমির ৬ একর জমির ধান কাটতে গেলে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ বেল্লাল ব্যাপরী ও একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি শাহ আলম রাড়ী তাঁদের নিজেদের জমি দাবি করে লোকজন নিয়ে বাধা প্রদান করেন। এক পর্যায়ে ধান কেটে নিলে প্রান নাশের হুমকি দেন তাঁরা। তাই আমরা দুই ভাই ভয়ে ভীত হয়ে কারো কাছে কোন অভিযোগ দেইনি।

ধান কাটতে বাধা দেওয়র কথা অস্বীকার করে বিএনপি নেতা বেল্লাল ব্যাপরী বলেন, জমির মালিক রেজউল করিম মন্টুর কাছ থেকে আমি তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ একর জমি একসনা ক্রয় করেছি আমি। এর আগে একই জমি তিনি বশির ফকির ও কবির ফকিরের কাছে বিক্রি করেছিলো কিনা তা আমার জানা নেই।

জমি বিক্রেতা রেজাউল করিম (মন্টু) বলেন, আমি ঢাকায় থাকি। স্থানীয় কৃষক বশির ও কবির ফকিরের কাছে আমি জমি বিক্রি করেছি। অন্য কারো কাছে জমি বিক্রি করি নাই। তবে বিএনপি নেতারা কেন তাদের পাকা ধান কাটতে বাধা দিয়েছেন তা আমি বলতে পারব না।

বাখ//এস