১১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তারুণ্যের উৎসবে লোকনাট্য সমারোহে জনপ্রিয় লোকনাট্য আলকাপ গান মঞ্চস্থ

মোঃ এমরান আলী রানা, নাটোর প্রতিনিধি

‘আলকাপ’ মূলতঃ অবিভক্ত বঙ্গদেশের লোকসংগীত। অবিভক্ত মুর্শিদাবাদ অঞ্চলের মুসলমান সম্প্রদায়ের নিজস্ব এ লোকসংগীতের চর্চা ও ধারাবাহিকতা বীরভূম, মালদহ, বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও বৃহত্তর রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চলে চর্চিত ও প্রবাহমান। তবে আকাশ ও আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব এবং পৃষ্টপোষকতার অভাবে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় লোকসংগীত আলকাপ গান।

আগে নানা উপলক্ষে গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে বসত গ্রামীন বাংলার জনপ্রিয় সংস্কৃতি আলকাপ গানের আসর। মুগ্ধ হয়ে সারারাত গান শুনত মানুষ। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা ও গ্রামীন সংস্কৃতির চর্চা এখন নেই বললেই চলে। এই যখন অবস্থা তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী বাংলার শিল্প সংস্কৃতি সবার সামনে তুলে ধরতে নিয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।

জেলা প্রশাসনের সহায়তায় শুক্রবার থেকে চারদিনব্যাপী নাটোর শহরের বঙ্গোজল রাজবাড়ীতে তারুণ্যের উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা ও চলচিত্র বিভাগ লোকনাট্য সমারোহের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সার্বিক তত্বাবধানে লোকনাট্য সমারোহের প্রথম দিনে মঞ্চস্থ হয় ‘আলকাপ’ গান। রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুরা থেকে ১২ সদস্যের একটি নাট্য দল ‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ জনপ্রিয় এই লোকসংগীত মঞ্চস্থ করে।

‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ নাট্যদলের অন্যতম সদস্যরা হলেন, আলতাফ হোসেন, বিউটি হেমব্রম, পলিনা হেমব্রম, সোনিয়া মুরমু, শরিফুল ইসলাম, আকবর আলী প্রমূখ। চারদিন ব্যাপী এই আয়োজনে আরো থাকছে গ্রামীন সংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম মাদারপীরের গান, গম্ভীরা (রাজশাহী), মনসা মঙ্গল (মনসার গান), জারিগান এবং লছিমনের গান।

আলকাপ গান পালা গানেরই একটি অঙ্গ। অনেকটা কবি গানের মতই গাওয়া হয় এই গান। এই ধরণের গানের প্রধান উপজীব্য বিষয় হলো ছড়া ও গান। আলকাপ যে বিশেষ কারণে উল্লেখযোগ্য তা হলো মুসলমানদের এই সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িক মিলনের সূত্র রয়েছে। লৌকিক জীবনের প্রেম-ভালোবাসা, সুুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সহ নানান ধরণের বিষয় আলকাপ গানে ফুটে উঠেতে দেখা যায়। তবে রাধাকৃষ্ণের কথা আলকাপ গানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। লৌকিক জীবন নিয়ে যে ছড়া আলকাপ গানে স্থান পায় তা সব সময় অশ্লীল হয় না। গ্রাম্য জীবনের সহজ সরলতা এই গানের সহজ বিশেষত্ব। মুসলমান সমাজের বিশাল অংশের মধ্যে এই গান আদৃত হলেও ধীরে ধীরে আধুনিক সংস্কৃতির চাপে এর প্রচলন কমে আসছে।

আলকাপ গান অন্যান্য গানের চাইতে একটু আলাদা। গানের দলের প্রধানকে সরকার বা মাস্টার বা মোড়ল বলা হয়। তার সাথে থাকে একজন ভাঁড় যাকে আলকাপের ভাষায় ‘কাপ্যাল’ বলা হয়। এছাড়া গানের দলের ছোকরা, ছুকরিরা অভিনয় করেন। গানের দলে থাকে কয়েকজন বাদক। তারা বিশেষ করে ঢোলক, হারমোনিয়াম, ডুগি, তবলা, খঞ্জনি, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে। সম্পূর্ণ গানের দল গানের আসরেই বসে থাকে।

তবে আকাশ ও আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব এবং পৃষ্টপোষকতার অভাবে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় লোকসংগীত আলকাপ গান। বর্তমানে আলকাপ গানের শিল্পীদের জীবন চলছে দুর্বিপাকে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং অর্থাভাবে শিল্পীরা এই গানের চর্চা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছেন না।

অনুশীলনের জন্য ক্লাব না থাকা, সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা, ধারাবাহিকভাবে আলকাপ গান মঞ্চায়নের সুযোগ না থাকাসহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে এককালের জনপ্রিয় এই গান। তবে তারুণ্যের উৎসবে শিল্পকলা একাডেমী আয়োজনে লোকনাট্যর সমারোহে আলকাপ গান মঞ্চায়ণ করার সুযোগ পেয়ে অনেকদিনের অভিমান ও কষ্ট ভুলে অংশগ্রহন রাজশাহীর তানোরের দলের শিল্পীরা।

‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ দলের মাস্টার আলতাফ হোসেন জানান, বাল্যকাল থেকেই আমি আলকাপ গান করি। আগে পাড়া মহল্লা, গ্রামে গঞ্জে এই গানের আসর বসত। এক সময় আমরা বিভিন্ন স্থানে এই গানে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে এই গান হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, অর্থাভাবে আমার দলটাকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি। পয়সা কড়ি আমাদের মূল সমস্যা। দলের অন্যান্য সদস্যদের ঠিকমত পয়সা কড়ি দিতে পারি না। দলের সদস্যদেরকে মুখের কথা দিয়ে, স্বান্তনা দিয়ে বহু কষ্টে দলটাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের যে আয়, তা দিয়ে পরিবারই খরচ বহন করায় কষ্টকর। অল্প আয় দিয়ে পরিবারের পাশাপাশি দল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে দাবি, শিল্প ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে আমাদের মত শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হোক। ধারাবহিকভাবে আমাদেরকে লোকনাট্য মঞ্চায়নের সুযোগ তৈরী করে দেওয়া হোক।

একই নাট্যদলের অন্যতম সদস্য বিউটি হেমব্রম, পলিনা হেমব্রম, সোনিয়া মুরমু, শরিফুল ইসলাম, আকবর আলী জানান, আমাদের সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে খুবই ভালো লাগে। অন্য সময় আমাদের কেউ ফিরেও তাকায়নি। আমাদের অনুশীলনের জায়গা নেই, ভাল বাদ্যযন্ত্র নেই। আসলে আমাদের মন মরে গেছে। কেউ আমাদের পাশে দাড়ায় না। আমরা পুরনো দিনের বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই। সরকারের বিনীত অনুরোধ, আমরা যেন সার্বিক সহযোগীতা পাই।

নাটোর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার মোঃ আব্দুল রাকিবিল বারী জানান, আমরা জানি, বাংলা লোকনাট্য হাজার বছরের পুরনো। তবে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি লোকনাট্য হারিয়ে যাচ্ছে। লোকনাট্যগুলো নানা পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে পরিবেশিত হয় না। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে এই সংস্কৃতিগুলো আবার জনগণের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। বর্তমান প্রজন্ম যাতে এই হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে সে জন্যই এই আয়োজন।

বাখ//ইস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:৫০:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
১১৩ জন দেখেছেন

তারুণ্যের উৎসবে লোকনাট্য সমারোহে জনপ্রিয় লোকনাট্য আলকাপ গান মঞ্চস্থ

আপডেট : ০৩:৫০:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

‘আলকাপ’ মূলতঃ অবিভক্ত বঙ্গদেশের লোকসংগীত। অবিভক্ত মুর্শিদাবাদ অঞ্চলের মুসলমান সম্প্রদায়ের নিজস্ব এ লোকসংগীতের চর্চা ও ধারাবাহিকতা বীরভূম, মালদহ, বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও বৃহত্তর রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চলে চর্চিত ও প্রবাহমান। তবে আকাশ ও আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব এবং পৃষ্টপোষকতার অভাবে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় লোকসংগীত আলকাপ গান।

আগে নানা উপলক্ষে গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে বসত গ্রামীন বাংলার জনপ্রিয় সংস্কৃতি আলকাপ গানের আসর। মুগ্ধ হয়ে সারারাত গান শুনত মানুষ। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা ও গ্রামীন সংস্কৃতির চর্চা এখন নেই বললেই চলে। এই যখন অবস্থা তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী বাংলার শিল্প সংস্কৃতি সবার সামনে তুলে ধরতে নিয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।

জেলা প্রশাসনের সহায়তায় শুক্রবার থেকে চারদিনব্যাপী নাটোর শহরের বঙ্গোজল রাজবাড়ীতে তারুণ্যের উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা ও চলচিত্র বিভাগ লোকনাট্য সমারোহের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সার্বিক তত্বাবধানে লোকনাট্য সমারোহের প্রথম দিনে মঞ্চস্থ হয় ‘আলকাপ’ গান। রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুরা থেকে ১২ সদস্যের একটি নাট্য দল ‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ জনপ্রিয় এই লোকসংগীত মঞ্চস্থ করে।

‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ নাট্যদলের অন্যতম সদস্যরা হলেন, আলতাফ হোসেন, বিউটি হেমব্রম, পলিনা হেমব্রম, সোনিয়া মুরমু, শরিফুল ইসলাম, আকবর আলী প্রমূখ। চারদিন ব্যাপী এই আয়োজনে আরো থাকছে গ্রামীন সংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম মাদারপীরের গান, গম্ভীরা (রাজশাহী), মনসা মঙ্গল (মনসার গান), জারিগান এবং লছিমনের গান।

আলকাপ গান পালা গানেরই একটি অঙ্গ। অনেকটা কবি গানের মতই গাওয়া হয় এই গান। এই ধরণের গানের প্রধান উপজীব্য বিষয় হলো ছড়া ও গান। আলকাপ যে বিশেষ কারণে উল্লেখযোগ্য তা হলো মুসলমানদের এই সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িক মিলনের সূত্র রয়েছে। লৌকিক জীবনের প্রেম-ভালোবাসা, সুুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সহ নানান ধরণের বিষয় আলকাপ গানে ফুটে উঠেতে দেখা যায়। তবে রাধাকৃষ্ণের কথা আলকাপ গানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। লৌকিক জীবন নিয়ে যে ছড়া আলকাপ গানে স্থান পায় তা সব সময় অশ্লীল হয় না। গ্রাম্য জীবনের সহজ সরলতা এই গানের সহজ বিশেষত্ব। মুসলমান সমাজের বিশাল অংশের মধ্যে এই গান আদৃত হলেও ধীরে ধীরে আধুনিক সংস্কৃতির চাপে এর প্রচলন কমে আসছে।

আলকাপ গান অন্যান্য গানের চাইতে একটু আলাদা। গানের দলের প্রধানকে সরকার বা মাস্টার বা মোড়ল বলা হয়। তার সাথে থাকে একজন ভাঁড় যাকে আলকাপের ভাষায় ‘কাপ্যাল’ বলা হয়। এছাড়া গানের দলের ছোকরা, ছুকরিরা অভিনয় করেন। গানের দলে থাকে কয়েকজন বাদক। তারা বিশেষ করে ঢোলক, হারমোনিয়াম, ডুগি, তবলা, খঞ্জনি, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে। সম্পূর্ণ গানের দল গানের আসরেই বসে থাকে।

তবে আকাশ ও আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাব এবং পৃষ্টপোষকতার অভাবে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় লোকসংগীত আলকাপ গান। বর্তমানে আলকাপ গানের শিল্পীদের জীবন চলছে দুর্বিপাকে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং অর্থাভাবে শিল্পীরা এই গানের চর্চা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছেন না।

অনুশীলনের জন্য ক্লাব না থাকা, সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা, ধারাবাহিকভাবে আলকাপ গান মঞ্চায়নের সুযোগ না থাকাসহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে এককালের জনপ্রিয় এই গান। তবে তারুণ্যের উৎসবে শিল্পকলা একাডেমী আয়োজনে লোকনাট্যর সমারোহে আলকাপ গান মঞ্চায়ণ করার সুযোগ পেয়ে অনেকদিনের অভিমান ও কষ্ট ভুলে অংশগ্রহন রাজশাহীর তানোরের দলের শিল্পীরা।

‘আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটার’ দলের মাস্টার আলতাফ হোসেন জানান, বাল্যকাল থেকেই আমি আলকাপ গান করি। আগে পাড়া মহল্লা, গ্রামে গঞ্জে এই গানের আসর বসত। এক সময় আমরা বিভিন্ন স্থানে এই গানে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে এই গান হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, অর্থাভাবে আমার দলটাকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি। পয়সা কড়ি আমাদের মূল সমস্যা। দলের অন্যান্য সদস্যদের ঠিকমত পয়সা কড়ি দিতে পারি না। দলের সদস্যদেরকে মুখের কথা দিয়ে, স্বান্তনা দিয়ে বহু কষ্টে দলটাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের যে আয়, তা দিয়ে পরিবারই খরচ বহন করায় কষ্টকর। অল্প আয় দিয়ে পরিবারের পাশাপাশি দল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে দাবি, শিল্প ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে আমাদের মত শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হোক। ধারাবহিকভাবে আমাদেরকে লোকনাট্য মঞ্চায়নের সুযোগ তৈরী করে দেওয়া হোক।

একই নাট্যদলের অন্যতম সদস্য বিউটি হেমব্রম, পলিনা হেমব্রম, সোনিয়া মুরমু, শরিফুল ইসলাম, আকবর আলী জানান, আমাদের সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে খুবই ভালো লাগে। অন্য সময় আমাদের কেউ ফিরেও তাকায়নি। আমাদের অনুশীলনের জায়গা নেই, ভাল বাদ্যযন্ত্র নেই। আসলে আমাদের মন মরে গেছে। কেউ আমাদের পাশে দাড়ায় না। আমরা পুরনো দিনের বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই। সরকারের বিনীত অনুরোধ, আমরা যেন সার্বিক সহযোগীতা পাই।

নাটোর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার মোঃ আব্দুল রাকিবিল বারী জানান, আমরা জানি, বাংলা লোকনাট্য হাজার বছরের পুরনো। তবে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি লোকনাট্য হারিয়ে যাচ্ছে। লোকনাট্যগুলো নানা পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে পরিবেশিত হয় না। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে এই সংস্কৃতিগুলো আবার জনগণের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। বর্তমান প্রজন্ম যাতে এই হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে সে জন্যই এই আয়োজন।

বাখ//ইস