০১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে পড়ে শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বিশেষ প্রতিবেদক
ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে পড়ে আহত হয়ে  মারুফ লস্কর (১৩)  এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়। মারুফ লস্কর ফরিদপুরের সালথা উপজেরার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের সোহরাব লস্করের ছেলে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে ছোট। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
সোহরাব লস্কর রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি স্ত্রী সামেলা বেগম ও ছেলে মারুফকে নিয়ে ফরিদপুর শহরের মধ্য আলীপুর রাজ্জাকের মোড় এলাকায় একটি  বাসায় ভাড়া থাকেন। মারুফ স্থানীয় আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, একটি হত দরিদ্র পরিবারের ছেলে মারুফ পড়াশোনার পাশাপাশি পোস্টার সাটানো কিংবা সাইনবোর্ড টানানোর কাজ করত।
গত রবিবার বিকেল ৪টার দিকে সে শহরের রাজ্জাকের মোড় একটি  বিউটি পার্লার-এর কয়েকটি ডিজিটাল সাইবোর্ড টানায়। এরপর ওই এলাকার খাবার হোটেলের একটি সাইবোর্ড নামানোর জন্য মই বেয়ে উপরে উঠলে সে পা ফসকে সড়কে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ফরিদপুর কোতয়ালী  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, এ মৃত্যুর ব্যাপারে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মৃতের মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়না তদন্তে মৃতদেহটি পরিবারের সদস্যদের হাতে  তুলে দেওয়া হয়েছে। পরে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর ১টার দিকে সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে নিহত মারুফের  বাড়িতে গিয়ে এক বেদনা বিধুর পরিবেশ দেখা যায়। বাড়ির উঠোনে একটি চেয়ারের উপর বসে আছেন বাবা সোহরাব। অঝোরে কেঁদে যাচ্ছেন তিনি।  কোন সান্তনাতেই তাকে বাগ মানানো যাচ্ছে না।
বিলাপ করতে করতে সোহরাব লস্কর বলতে থাকেন, আমার কি সর্বনাশ হইয়া গেল রে। আমার সোনা হারায় গেল রে। এখন কে আমাকে বাবা ডাকবে, কে পাশে দাঁড়াবে। আমার সব আশা জ্বইলা পুইড়া শেষ হইয়া গেল।
মারুফের মা সামেলা বেগম ঘরের মধ্যে আহাজারি করছেন। তাকে ঘিরে রেখেছে প্রতিবেশি নারীরা।
সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান জানান,  সোমবার ( ১৩ জানুয়ারি)  দুপুরে জানাজা শেষে স্থানীয় পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:২৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
১৩০ জন দেখেছেন

ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে পড়ে শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু

আপডেট : ০৭:২৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
ফরিদপুরে সাইনবোর্ড খুলতে গিয়ে মই থেকে পড়ে আহত হয়ে  মারুফ লস্কর (১৩)  এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়। মারুফ লস্কর ফরিদপুরের সালথা উপজেরার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের সোহরাব লস্করের ছেলে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে ছোট। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
সোহরাব লস্কর রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি স্ত্রী সামেলা বেগম ও ছেলে মারুফকে নিয়ে ফরিদপুর শহরের মধ্য আলীপুর রাজ্জাকের মোড় এলাকায় একটি  বাসায় ভাড়া থাকেন। মারুফ স্থানীয় আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, একটি হত দরিদ্র পরিবারের ছেলে মারুফ পড়াশোনার পাশাপাশি পোস্টার সাটানো কিংবা সাইনবোর্ড টানানোর কাজ করত।
গত রবিবার বিকেল ৪টার দিকে সে শহরের রাজ্জাকের মোড় একটি  বিউটি পার্লার-এর কয়েকটি ডিজিটাল সাইবোর্ড টানায়। এরপর ওই এলাকার খাবার হোটেলের একটি সাইবোর্ড নামানোর জন্য মই বেয়ে উপরে উঠলে সে পা ফসকে সড়কে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ফরিদপুর কোতয়ালী  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, এ মৃত্যুর ব্যাপারে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মৃতের মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়না তদন্তে মৃতদেহটি পরিবারের সদস্যদের হাতে  তুলে দেওয়া হয়েছে। পরে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর ১টার দিকে সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে নিহত মারুফের  বাড়িতে গিয়ে এক বেদনা বিধুর পরিবেশ দেখা যায়। বাড়ির উঠোনে একটি চেয়ারের উপর বসে আছেন বাবা সোহরাব। অঝোরে কেঁদে যাচ্ছেন তিনি।  কোন সান্তনাতেই তাকে বাগ মানানো যাচ্ছে না।
বিলাপ করতে করতে সোহরাব লস্কর বলতে থাকেন, আমার কি সর্বনাশ হইয়া গেল রে। আমার সোনা হারায় গেল রে। এখন কে আমাকে বাবা ডাকবে, কে পাশে দাঁড়াবে। আমার সব আশা জ্বইলা পুইড়া শেষ হইয়া গেল।
মারুফের মা সামেলা বেগম ঘরের মধ্যে আহাজারি করছেন। তাকে ঘিরে রেখেছে প্রতিবেশি নারীরা।
সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান জানান,  সোমবার ( ১৩ জানুয়ারি)  দুপুরে জানাজা শেষে স্থানীয় পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বাখ//আর