০৮:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেশিনে বোরো ধান রোপণ, বাড়বে ফলন, বাঁচবে সময়

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

তীব্র শীতে কৃষকের কষ্ট লাঘব করবে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন। এই মেশিন দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে সমলয় চাষাবাদে মাত্র এক ঘন্টায় এক বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা যাবে। এতে একদিকে যেমন সময় কম লাগবে- তেমনি খরচও কমবে আবার ফলনও বাড়বে। এছাড়া শ্রমিক সংকটের দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে কৃষক। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার মঠখোলা গ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মেশিনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উপজেলার মঠখোলা গ্রামের কৃষক মো. সৈয়দুজ্জামান আকাশের জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান চাষের উদ্বোধন হয়। এসময় গ্রামের শতাধীক কৃষক-কৃষাণি ও উৎসুক জনতা রোপণ পদ্ধতি দেখতে ভিড় করেন।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে সঙ্গে ফলনও বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে।

কৃষক সৈয়দুজ্জামান আকাশ বলেন, আগে ধান রোপণে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। আজ ১০ মিনিটেই আমার ১৫ শতাংশ জমির ধান রোপণ হয়ে গেছে।
একই গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান রোপণ নিয়ে আমাদের মধ্যে ভুল ধারনা ছিল। পরে এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। প্রশিক্ষন গ্রহন করার পর আমাদের ভুল ভেঙে যায়। আমরা সবাই এখন উচ্ছসিত।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল এ এলাকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। এখন তারা এ পদ্ধতিতে ধান চাষে আগ্রহী। আমরা এই মৌসুমে সবাইকে সুযোগ দিতে পারছিনা। এবার প্রণোদনার আওতায় থাকা ৮০ জন কৃষক এই সুবিধা পাচ্ছেন।

তিনি জানান, জমির মালিকানা হিসেবে প্রতি শতাংশ জমির জন্য ৯০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৬০০ গ্রাম ডিএপি ও ৫০০ গ্রাম হারে এমওপি সার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। রাইস প্লান্টারের সাহায্যে ৫০ একর জমি রোপণের উদ্দেশ্যে ৪ হাজার ৫০০ ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয়েছে। সব জমি কর্মসূচীর অর্থায়নে রোপণ করে দেওয়া হবে।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মঠখোলা নয়া বাজার এলাকার একটি মাঠে ২০২৪-২০২৫ রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদের বøক প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও কৃষক সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. দৌলত খান চৌধুরী ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুস সামাদ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. হামিদুল হক সোহাগ।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:৩০:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
২৬৫ জন দেখেছেন

মেশিনে বোরো ধান রোপণ, বাড়বে ফলন, বাঁচবে সময়

আপডেট : ১০:৩০:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

তীব্র শীতে কৃষকের কষ্ট লাঘব করবে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন। এই মেশিন দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে সমলয় চাষাবাদে মাত্র এক ঘন্টায় এক বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা যাবে। এতে একদিকে যেমন সময় কম লাগবে- তেমনি খরচও কমবে আবার ফলনও বাড়বে। এছাড়া শ্রমিক সংকটের দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে কৃষক। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার মঠখোলা গ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মেশিনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উপজেলার মঠখোলা গ্রামের কৃষক মো. সৈয়দুজ্জামান আকাশের জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান চাষের উদ্বোধন হয়। এসময় গ্রামের শতাধীক কৃষক-কৃষাণি ও উৎসুক জনতা রোপণ পদ্ধতি দেখতে ভিড় করেন।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে সঙ্গে ফলনও বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে।

কৃষক সৈয়দুজ্জামান আকাশ বলেন, আগে ধান রোপণে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। আজ ১০ মিনিটেই আমার ১৫ শতাংশ জমির ধান রোপণ হয়ে গেছে।
একই গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান রোপণ নিয়ে আমাদের মধ্যে ভুল ধারনা ছিল। পরে এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। প্রশিক্ষন গ্রহন করার পর আমাদের ভুল ভেঙে যায়। আমরা সবাই এখন উচ্ছসিত।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল এ এলাকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। এখন তারা এ পদ্ধতিতে ধান চাষে আগ্রহী। আমরা এই মৌসুমে সবাইকে সুযোগ দিতে পারছিনা। এবার প্রণোদনার আওতায় থাকা ৮০ জন কৃষক এই সুবিধা পাচ্ছেন।

তিনি জানান, জমির মালিকানা হিসেবে প্রতি শতাংশ জমির জন্য ৯০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৬০০ গ্রাম ডিএপি ও ৫০০ গ্রাম হারে এমওপি সার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। রাইস প্লান্টারের সাহায্যে ৫০ একর জমি রোপণের উদ্দেশ্যে ৪ হাজার ৫০০ ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয়েছে। সব জমি কর্মসূচীর অর্থায়নে রোপণ করে দেওয়া হবে।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মঠখোলা নয়া বাজার এলাকার একটি মাঠে ২০২৪-২০২৫ রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদের বøক প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও কৃষক সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. দৌলত খান চৌধুরী ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুস সামাদ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. হামিদুল হক সোহাগ।

বাখ//আর