০৪:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংস্কার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক

সংস্কার প্রতিবেদন থেকে তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, সংবিধান এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন জমা হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু হলো মন্তব্য করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটার মাধ্যমে আমরা আলোচনা শুরু করব, সবার মন এর মধ্যে সায় দিচ্ছে কি না; অঙ্গীকারগুলো পূরণ হচ্ছে কি না, সেটার আলোচনা। আলোচনার রসদ আপনারা (সংস্কার কমিশন) তৈরি করে দিয়েছেন। সে আলোচনার পরবর্তী অধ্যায়টা কী হবে- সেটাও আমরা জেনে রাখি- একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই একমত হবে না। কিছু অংশে একদম একমত হবেন।

তিনি বলেন, আমরা কী একা একা স্বপ্ন দেখলাম? মানুষের স্বপ্নের অংশ নেই, সেটা তো হতে পারে না। আমরা কতটুকু সে (গণঅভ্যুত্থানের) স্বপ্ন নিয়ে আসছি সেটার জন্যই এ আলোচনা। এটা বাইরে থেকে চাপানো জিনিস না; ভেতর থেকে উদ্ভূত একটা জিনিস। যে আলোচনা হবে, সে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন আপনারা (সংস্কার কমিশন) মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্ন একাকার হয়ে যাবে, তার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে।

এই সনদের ভিত্তিতেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ওই যে নতুন বাংলাদেশের চার্টার, সেই হবে চার্টারটা; সেই চার্টার মতৈক্যের ভিত্তিতে হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছু হবে; কিন্তু চার্টার হারিয়ে যাবে না। এ চার্টার থেকে যাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে। এটা আমাদের জাতীয় কমিটমেন্ট। এটা কোনো দলীয় কমিটমেন্ট না। আমরা চাচ্ছি সব দল এ চার্টারে সাইন অন করবে।

তিনি আরও বলেন, ওই যে বললাম ঐকমত্য। আমরা বাংলাদেশি, বাঙালি জাতির সনদ বুকে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি পারি, যত বেশি পরিমাণে বাস্তবায়ন করতে পারি, বাস্তবায়ন করতে থাকব। ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হবে, এটার ভিত্তিতে, এই চার্টারের ভিত্তিতে।

ড. ইউনূস বলেন, যে চার্টার আমরা ধরে রেখেছি, তার যতকিছুই হোক, এটা যেন আমাদের হাত থেকে ছেড়ে না যায়। তা হলে এ স্বপ্নের যে কন্টিনিউটি, সেটা থাকবে কী করে? আমরা সে স্বপ্নের কন্টিনিউটি চাই, বাস্তবায়ন চাই। নির্বাচন তারই একটা অংশ হবে। চার্টারের একটা অংশ হবে। ঐকমত্যের নির্বাচন হবে। তা না হলে চার্টার তো হারিয়ে যাবে- ঐকমত্য না হলে। সেভাবেই আমরা অগ্রসর হতে চাই। কাজেই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। আমাদের সে গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে এবং তার জন্য পরবর্তী অধ্যায় শুরু।

এই সনদ অনুসরণ করে পরবর্তী সরকার অগ্রসর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক নোট’ বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা শুধু আনুষ্ঠানিকতা না, এটা একটা ঐতিহাসিক নোট। আজকের ঘটনাটা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। এর কারণটা সবাই আমরা বুঝি, কারণ ইতিহাসের প্রবাহ থেকেই কমিশনগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। এত ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি, এ ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির হঠাৎ পুনরূত্থান হয়েছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। শিরদাঁড়া খাড়া করে দাঁড়িয়েছে। সেখানে থেকে ইতিহাসের সৃষ্টি। আজকের এ অনুষ্ঠান, সে ইতিহাসের অংশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন রিপোর্ট দেওয়ার বিষয় না।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৮:০১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
১০৫ জন দেখেছেন

সংস্কার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট : ০৮:০১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

সংস্কার প্রতিবেদন থেকে তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, সংবিধান এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন জমা হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু হলো মন্তব্য করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটার মাধ্যমে আমরা আলোচনা শুরু করব, সবার মন এর মধ্যে সায় দিচ্ছে কি না; অঙ্গীকারগুলো পূরণ হচ্ছে কি না, সেটার আলোচনা। আলোচনার রসদ আপনারা (সংস্কার কমিশন) তৈরি করে দিয়েছেন। সে আলোচনার পরবর্তী অধ্যায়টা কী হবে- সেটাও আমরা জেনে রাখি- একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই একমত হবে না। কিছু অংশে একদম একমত হবেন।

তিনি বলেন, আমরা কী একা একা স্বপ্ন দেখলাম? মানুষের স্বপ্নের অংশ নেই, সেটা তো হতে পারে না। আমরা কতটুকু সে (গণঅভ্যুত্থানের) স্বপ্ন নিয়ে আসছি সেটার জন্যই এ আলোচনা। এটা বাইরে থেকে চাপানো জিনিস না; ভেতর থেকে উদ্ভূত একটা জিনিস। যে আলোচনা হবে, সে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন আপনারা (সংস্কার কমিশন) মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্ন একাকার হয়ে যাবে, তার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে।

এই সনদের ভিত্তিতেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ওই যে নতুন বাংলাদেশের চার্টার, সেই হবে চার্টারটা; সেই চার্টার মতৈক্যের ভিত্তিতে হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছু হবে; কিন্তু চার্টার হারিয়ে যাবে না। এ চার্টার থেকে যাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে। এটা আমাদের জাতীয় কমিটমেন্ট। এটা কোনো দলীয় কমিটমেন্ট না। আমরা চাচ্ছি সব দল এ চার্টারে সাইন অন করবে।

তিনি আরও বলেন, ওই যে বললাম ঐকমত্য। আমরা বাংলাদেশি, বাঙালি জাতির সনদ বুকে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি পারি, যত বেশি পরিমাণে বাস্তবায়ন করতে পারি, বাস্তবায়ন করতে থাকব। ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হবে, এটার ভিত্তিতে, এই চার্টারের ভিত্তিতে।

ড. ইউনূস বলেন, যে চার্টার আমরা ধরে রেখেছি, তার যতকিছুই হোক, এটা যেন আমাদের হাত থেকে ছেড়ে না যায়। তা হলে এ স্বপ্নের যে কন্টিনিউটি, সেটা থাকবে কী করে? আমরা সে স্বপ্নের কন্টিনিউটি চাই, বাস্তবায়ন চাই। নির্বাচন তারই একটা অংশ হবে। চার্টারের একটা অংশ হবে। ঐকমত্যের নির্বাচন হবে। তা না হলে চার্টার তো হারিয়ে যাবে- ঐকমত্য না হলে। সেভাবেই আমরা অগ্রসর হতে চাই। কাজেই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। আমাদের সে গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে এবং তার জন্য পরবর্তী অধ্যায় শুরু।

এই সনদ অনুসরণ করে পরবর্তী সরকার অগ্রসর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক নোট’ বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা শুধু আনুষ্ঠানিকতা না, এটা একটা ঐতিহাসিক নোট। আজকের ঘটনাটা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। এর কারণটা সবাই আমরা বুঝি, কারণ ইতিহাসের প্রবাহ থেকেই কমিশনগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। এত ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি, এ ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির হঠাৎ পুনরূত্থান হয়েছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। শিরদাঁড়া খাড়া করে দাঁড়িয়েছে। সেখানে থেকে ইতিহাসের সৃষ্টি। আজকের এ অনুষ্ঠান, সে ইতিহাসের অংশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন রিপোর্ট দেওয়ার বিষয় না।