০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পদ্মা নদীতে গোলাগুলির ঘটনায় নিখোঁজ যুবদল কর্মী টুটুল সাড়ে ৩ মাসেও সন্ধান মিলেনি

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীতে নৌযান তথা বালু বোঝাই নৌকা থেকে চ্যানেল চার্জ (খাজনা) আদায়কে করে বিএনপির প্রভাবশালী দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনার সাড়ে ৩ মাস পার হলেও সন্ধ্যান মিলেনি যুবদলের কর্মী জহুরুল ইসলাম টুটুলের (৫৪)। এই ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামীরা।
নিখোঁজ টুটুল ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুলপাড়ার মৃত আব্দুল গাফফার হোসেনের ছেলে। তিনি পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনের সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম সরদারে পক্ষে দলীয় কার্যক্রম করতেন।
এই ঘটনায় নিখোঁজ টুটুলের ছেলে মো.রেবিন হোসেন বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের গ্রুপের ১৩ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জন আসামী করে হত্যাসহ গুমের মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক সুলতান আলী বিশ্বাস, ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাজাহান আলী, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার বিএনপি নেতা সেকেন্দার আলী সেকেন, ভেড়ামারার ষোলদাগ এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে যুবদলকর্মী মো. বিজলী, একই উপজেলার চরগোলাপনগরের মৃত এরশাদের ছেলে মো. সুমন ও মো. আল আমিন, একই এলাকার খবির উদ্দিনের ছেলে মো.মইনুল, নুরুল ইসলামের মো. মনিরুজ্জামান, হারান প্রমানিকের ছেলে মো. বিপ্লব, ঈশ্বরদীর পাকশী গাইড ব্যাংক হঠাৎপাড়ার মোসলেম হাওলাদারের ছেলে শ্যাম হাওলাদার, একই এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আমিরুল সরদার, মৃত শামছুল সরদারের ছেলে শাহীন সরদার।
মামলা ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, গত (২২ সেপ্টেম্বর/২৪) মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পদ্মানদীতে বালুর নৌকা থেকে খাজনা আদায় করতে ছিলেন জহুরুল ইসলাম টুটুল, আমিনুল ইসলাম রানা, মাহফুজুর রহমান মঞ্জুসহ ৪-৫জন। এই সময় হঠাৎ ভেড়ামারার বাহাদুরপুর দিক থেকে অপর একটি নৌকা থেকে এলোতাপাড়ি গুলিবর্ষণসহ করে টুটুলদের নৌকার দিকে আসে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে কয়েকজন নদীতে পড়ে যায়। হামলাকারীরা টুটুলের নৌকাতে থাকা ৩-৪ জনকে মারধর করে নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় টুটুল নিখোঁজ হয়।
আহত আমিরুল ইসলাম জানান, নৌকায় হামলা চালিয়ে গুলি বর্ষণ করলে দিশেহারা হয়ে দুজন নদীতে পড়ে যায়। নি‌‌খোঁজ টুটুল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল কিনা জানা বুঝতে পারছি না। আমরা সাঁতার কেটে বালু চরে উঠলেও টুটুল নিখোঁজ রয়েছে।
মামলার বাদী মো. রেবিন হোসেন অভিযোগ করে জানান, আসামীরা প্রকাশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছে। ঘুরাঘুরি করছে। কিন্তু পুলিশ ধরতে পারছে না। এই কারণে নিখোঁজ বাবার খোঁজও পাচ্ছি না। মারা গেলে মরদেহটা পেলেও তো শান্তি পেতাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. মুকুল হোসেন জানান, নিখোঁজ টুটুলের সন্ধ্যানে নদীতে অভিযান চালানো হয়েছে। এখনও সন্ধান করা হচ্ছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। শাহিন সরদার নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার নিকট থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আসামীদের গ্রেফতার প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১২:০৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
৮৯ জন দেখেছেন

পদ্মা নদীতে গোলাগুলির ঘটনায় নিখোঁজ যুবদল কর্মী টুটুল সাড়ে ৩ মাসেও সন্ধান মিলেনি

আপডেট : ১২:০৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীতে নৌযান তথা বালু বোঝাই নৌকা থেকে চ্যানেল চার্জ (খাজনা) আদায়কে করে বিএনপির প্রভাবশালী দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনার সাড়ে ৩ মাস পার হলেও সন্ধ্যান মিলেনি যুবদলের কর্মী জহুরুল ইসলাম টুটুলের (৫৪)। এই ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামীরা।
নিখোঁজ টুটুল ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুলপাড়ার মৃত আব্দুল গাফফার হোসেনের ছেলে। তিনি পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনের সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম সরদারে পক্ষে দলীয় কার্যক্রম করতেন।
এই ঘটনায় নিখোঁজ টুটুলের ছেলে মো.রেবিন হোসেন বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের গ্রুপের ১৩ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জন আসামী করে হত্যাসহ গুমের মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক সুলতান আলী বিশ্বাস, ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাজাহান আলী, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার বিএনপি নেতা সেকেন্দার আলী সেকেন, ভেড়ামারার ষোলদাগ এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে যুবদলকর্মী মো. বিজলী, একই উপজেলার চরগোলাপনগরের মৃত এরশাদের ছেলে মো. সুমন ও মো. আল আমিন, একই এলাকার খবির উদ্দিনের ছেলে মো.মইনুল, নুরুল ইসলামের মো. মনিরুজ্জামান, হারান প্রমানিকের ছেলে মো. বিপ্লব, ঈশ্বরদীর পাকশী গাইড ব্যাংক হঠাৎপাড়ার মোসলেম হাওলাদারের ছেলে শ্যাম হাওলাদার, একই এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আমিরুল সরদার, মৃত শামছুল সরদারের ছেলে শাহীন সরদার।
মামলা ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, গত (২২ সেপ্টেম্বর/২৪) মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পদ্মানদীতে বালুর নৌকা থেকে খাজনা আদায় করতে ছিলেন জহুরুল ইসলাম টুটুল, আমিনুল ইসলাম রানা, মাহফুজুর রহমান মঞ্জুসহ ৪-৫জন। এই সময় হঠাৎ ভেড়ামারার বাহাদুরপুর দিক থেকে অপর একটি নৌকা থেকে এলোতাপাড়ি গুলিবর্ষণসহ করে টুটুলদের নৌকার দিকে আসে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে কয়েকজন নদীতে পড়ে যায়। হামলাকারীরা টুটুলের নৌকাতে থাকা ৩-৪ জনকে মারধর করে নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় টুটুল নিখোঁজ হয়।
আহত আমিরুল ইসলাম জানান, নৌকায় হামলা চালিয়ে গুলি বর্ষণ করলে দিশেহারা হয়ে দুজন নদীতে পড়ে যায়। নি‌‌খোঁজ টুটুল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল কিনা জানা বুঝতে পারছি না। আমরা সাঁতার কেটে বালু চরে উঠলেও টুটুল নিখোঁজ রয়েছে।
মামলার বাদী মো. রেবিন হোসেন অভিযোগ করে জানান, আসামীরা প্রকাশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছে। ঘুরাঘুরি করছে। কিন্তু পুলিশ ধরতে পারছে না। এই কারণে নিখোঁজ বাবার খোঁজও পাচ্ছি না। মারা গেলে মরদেহটা পেলেও তো শান্তি পেতাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. মুকুল হোসেন জানান, নিখোঁজ টুটুলের সন্ধ্যানে নদীতে অভিযান চালানো হয়েছে। এখনও সন্ধান করা হচ্ছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। শাহিন সরদার নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার নিকট থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আসামীদের গ্রেফতার প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
বাখ//এস