দাদাবাড়ি গিয়ে শিশু খুন : আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান সিকদার (৫) হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের ২ টি বাস ভবন ও ৩ টি টিনের ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সাফওয়ানের জানাজায় অংশ গ্রহনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে জানাজার পূর্বে উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের গ্রেফতারকৃত আসামি ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বাসভবনসহ ৫ টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আগুন নেভাতে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের রোষানলে পড়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন জানান, বরিশাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বাদআছর নিহত শিশু সাফওযানের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ গ্রহনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা জানাজার পূর্বে শিশু সাফওয়ান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর ২টি বাসভবন ও ৩টি টিনের ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। খবরপেয়ে গৌরনদী ফায়ার ষ্টেমনের গাড়ি ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভাতে বাঁধা প্রদান করেন।
এ খবর পেয়ে গৌরনদীর ইউএনও আবু আব্দুল্লাহ খান, এসিল্যান্ড মো. রাজীব হোসেন, গৌরনদী সার্কেলের অতিক্তিত পুলিশ সুপাার শারমিন সুলতানা রাখী, ওসি মো. ইউনুস মিয়াসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং রাত সাড়ে দশটায় ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হয়। ষ্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন আরও বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই দুইটি দালান ও তিনটি টিনের ঘর সম্পূর্ন পুড়ে যায়। এতে কমপক্ষে অর্ধকোটির টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, নিহত শিশুর লাশ হাসপাতাল মর্গ থেকে এলাকায় নিয়ে আসলে শুক্রবার বিকালে জানাজায় অংশ নেওয়া মাণুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। বিক্ষুব্ধ জনতা আসামিদের বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। খবরপেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্ঠায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহতের বাবা মো. ইমরান শিকদার বাদি হয়ে ৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৯/১০ জনকে আসামি করে ১৭ জানুয়ারি গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারভ‚ক্ত আসামি একই বাড়ির রোমান চৌধুরী, তার স্ত্রী আখি বেগম, বোন রাবিনা বেগম ওরফে লাবিনা বেগম ও শরিকল ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে দাদা বাড়ি উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে বেড়াতে এসে শিশু সাফওয়ান শিকদার (৫) গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ১৬ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে একই গ্রামের মান্না বেপারীর বাড়ির কাছে রাস্তার ঢাল থেকে শিশু সাফওয়ানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাখ//এস