০৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাউজানে বড়ই বাগানে সফলতা

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
রাউজানের উত্তর সীমান্ত হলদিয়া ইউপির বটপুকুরিয়া এলাকায় কয়কশত একর পাহাড়ি ঠিলাতে “বড়ই, আম, মাল্টা, পেয়ারা, পেঁপে, লেবু, ঝাম, নারিকেল, সুপারি, কলা বাগান সহ হরেক রকমের ফলদ চারা রোপন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাগান মালিক আলহাজ্জ আল্লামা গোলাম মোস্তফা শায়েস্তাখাঁন আযহারী। (২০ জানুয়ারি) সোমবার সকাল ১০ টায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় রাউজান সদর থেকে আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে প্রায় ১৬ কিঃমিঃ দুরে বটপুকুরিয়া এলাকায় বাগানটি খুবই চমৎকার। পিচ ঢালাই, সলিং এবং মাঠির রাস্তা বয়ে বাগান পর্যন্ত  সমতল উঁছু নিছু জায়গা দিয়ে বাগানটির পরিধি বিশাল।দায়িত্বরত ম্যানেজার মুহাম্মদ সোহাগ মিয়ার সাথে কথা বলে জানাগেছে ২য় বছরের মত বড়ই গাছে ভাল উৎপাদন হয়েছে।রোপন কৃত বড়ই গাছগুলোতে বড়ই ধরেছে চোখে পড়ার মত।
জানাগেছে ১৭ শ ৫০ টি বড়ই গাছের মধ্য ১৫ শ গাছের মধ্য প্রতি গাছে ১০ কেজি করে বড়ই ধরেছে। একদম মাঠির সাথে মিশে যাওয়া বড়ই গুলো আঁকারে অনেক বড় এবং চিনির চেয়ে মিষ্টি। তার হিসাব মতে ১৫ টন বড়ই উৎপাদন হবে গাছ গুলো থেকে। মুহাম্মদ সোহাগ মিয়ার মতে সাথি ফসল হিসাবে আমের সাথে বড়ই গাছ গুলো রোপন করা হয়েছে।থাইলেন্ডের বীজ আপেল বড়ই গুলোর চারা গুলো আনা হয়েছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি থেকে। একটি গাছ ক্রয় করতে ৩০ টাকা আর খরচ সহ ৩৫ টাকা করে লেগেছে বাগান পর্যন্ত পৌঁছতে। ৫বছর পর বড়ই গাছ গুলো কেটে পেলা হলে সাথী ফল আম উৎপাদন শুরু হবে বলে জানান সোহাগ মিয়া।
বর্তমান বড়ই গুলো কেজি ১ শ ২০ টাকা করে স্থানিয় বেপারীরা পাইকারি ধরে কিনি নিয়ে খুচরা বাজারে ১৪০/১৫০টাকা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন উৎসুক মানুষ বাগানে এসে পরিবার আত্মিয় স্বজনের জন্য বড়ই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার বাগানে যারা আসেন তাদের ইচ্ছামত প্রী খাওয়ার সুযোগ রেখেছেন মালিক পক্ষ। এদিকে বাগান পরিচার্য্যার জন্য মাসিক বেতনে নিয়োজিত আছেন ৩ জন, আর দৈনিক হারে শ্রমিক কাজ করে ১৫ জন। বাগানের জন্য বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। কর্মচারীরা থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে ঘর আর সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা।
ম্যানাজারের তথ্যে মতে বাগানে রয়েছে আমরুপালী, বারী -৪, বেনানা, কিউজায়, সুর্যের ডিম, হাঁড়ি ভাঙ্গা, রেট পালমার, ব্লাক স্টর সব মিলিয়ে ৩১ শ গাছ।মালটা গাছ রয়েছে ১৫ শ, ৪ হাজার লেবু গাছ,পেঁপের ৩২ শ গাছ, পেয়ারা সাড়ে ৪ হাজার গাছ এর মধ্যে গোল্ডেন জাত এইট একটা পাইব জাক একটা, চাপা কলা আর বাংলা মিলে ৪ শ গাছ, সুপারি গাছ ২হাজার,নারিকেল ১ শটি, আমলকি ৫০ টি, থাই ঝাম ২০ টি সহ আরো নানাবিদ ফলের গাছ।মুহাম্মদ সোহাগ মিয়া আরো জানান একটির ফলন শেষ হলে আরেকটি ফলন বিক্রি শুরু করা সম্ভব।
১২মাস ধরে যেকোন ফল আমরা বিক্রি করতে পারবো। বাগান মালিক আলহাজ্জ আল্লামা গোলাম মোস্তফা শায়েস্তাখাঁন আযহারী ফোনে জানান আমার বাবা আলহাজ্জ এম আবদুল ওহাব বিএ বিএড এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, কেজি, মসজিদ সহ ধর্মিয় প্রতিস্টান প্রতিষ্টা করেছেন। এতকিছু করার পরও তিনি কৃষি জমিতে চাষাবাদ, মাছ চাষ, ফল মুল এগুলো এলাকায় তৈরি হওক এসব কিছু তিনি বেশি পছন্দ করতেন এবং নিজেও জীবিত থাকা অবস্থায় এসব করেছেন। আমরা সকল ভায়েরা আমার বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে এবং এলাকার মানুষ যাতে কম মূল্য দিয়ে ফল ফলাদী খেতে পারে সে নিয়্যতে আমরা এসব বাগান করেছি।
তিনি জানান আমরা বাগান করে সফল হয়েছি। কয়েক বছর ধরে প্রচুর আমের ফলন হচ্ছে এবং লক্ষ লক্ষ টাকার আম বিক্রি করতে পেরেছি। এবার পেয়ারা বড়ই পেঁপে এমন ভাবে ধরেছে বিক্রি করে শেষ করা যাচ্ছেনা এসব আল্লাহর রহমত ছাড়া আর কিছু না। তিনি বর্তমান সময়ে তাদের বাগান গুলো উত্তর চট্টগ্রামে সেরা বলে দাবী করেন। সরকারী সহযোগিতা পেলে এসব বাগান থেকে আরো বেশি ফলন উৎপাদন হবে বলে মনে করেন স্থানিয়রা।
বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১১:০৩:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
১৩২ জন দেখেছেন

রাউজানে বড়ই বাগানে সফলতা

আপডেট : ১১:০৩:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
রাউজানের উত্তর সীমান্ত হলদিয়া ইউপির বটপুকুরিয়া এলাকায় কয়কশত একর পাহাড়ি ঠিলাতে “বড়ই, আম, মাল্টা, পেয়ারা, পেঁপে, লেবু, ঝাম, নারিকেল, সুপারি, কলা বাগান সহ হরেক রকমের ফলদ চারা রোপন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাগান মালিক আলহাজ্জ আল্লামা গোলাম মোস্তফা শায়েস্তাখাঁন আযহারী। (২০ জানুয়ারি) সোমবার সকাল ১০ টায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় রাউজান সদর থেকে আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে প্রায় ১৬ কিঃমিঃ দুরে বটপুকুরিয়া এলাকায় বাগানটি খুবই চমৎকার। পিচ ঢালাই, সলিং এবং মাঠির রাস্তা বয়ে বাগান পর্যন্ত  সমতল উঁছু নিছু জায়গা দিয়ে বাগানটির পরিধি বিশাল।দায়িত্বরত ম্যানেজার মুহাম্মদ সোহাগ মিয়ার সাথে কথা বলে জানাগেছে ২য় বছরের মত বড়ই গাছে ভাল উৎপাদন হয়েছে।রোপন কৃত বড়ই গাছগুলোতে বড়ই ধরেছে চোখে পড়ার মত।
জানাগেছে ১৭ শ ৫০ টি বড়ই গাছের মধ্য ১৫ শ গাছের মধ্য প্রতি গাছে ১০ কেজি করে বড়ই ধরেছে। একদম মাঠির সাথে মিশে যাওয়া বড়ই গুলো আঁকারে অনেক বড় এবং চিনির চেয়ে মিষ্টি। তার হিসাব মতে ১৫ টন বড়ই উৎপাদন হবে গাছ গুলো থেকে। মুহাম্মদ সোহাগ মিয়ার মতে সাথি ফসল হিসাবে আমের সাথে বড়ই গাছ গুলো রোপন করা হয়েছে।থাইলেন্ডের বীজ আপেল বড়ই গুলোর চারা গুলো আনা হয়েছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি থেকে। একটি গাছ ক্রয় করতে ৩০ টাকা আর খরচ সহ ৩৫ টাকা করে লেগেছে বাগান পর্যন্ত পৌঁছতে। ৫বছর পর বড়ই গাছ গুলো কেটে পেলা হলে সাথী ফল আম উৎপাদন শুরু হবে বলে জানান সোহাগ মিয়া।
বর্তমান বড়ই গুলো কেজি ১ শ ২০ টাকা করে স্থানিয় বেপারীরা পাইকারি ধরে কিনি নিয়ে খুচরা বাজারে ১৪০/১৫০টাকা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন উৎসুক মানুষ বাগানে এসে পরিবার আত্মিয় স্বজনের জন্য বড়ই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার বাগানে যারা আসেন তাদের ইচ্ছামত প্রী খাওয়ার সুযোগ রেখেছেন মালিক পক্ষ। এদিকে বাগান পরিচার্য্যার জন্য মাসিক বেতনে নিয়োজিত আছেন ৩ জন, আর দৈনিক হারে শ্রমিক কাজ করে ১৫ জন। বাগানের জন্য বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। কর্মচারীরা থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে ঘর আর সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা।
ম্যানাজারের তথ্যে মতে বাগানে রয়েছে আমরুপালী, বারী -৪, বেনানা, কিউজায়, সুর্যের ডিম, হাঁড়ি ভাঙ্গা, রেট পালমার, ব্লাক স্টর সব মিলিয়ে ৩১ শ গাছ।মালটা গাছ রয়েছে ১৫ শ, ৪ হাজার লেবু গাছ,পেঁপের ৩২ শ গাছ, পেয়ারা সাড়ে ৪ হাজার গাছ এর মধ্যে গোল্ডেন জাত এইট একটা পাইব জাক একটা, চাপা কলা আর বাংলা মিলে ৪ শ গাছ, সুপারি গাছ ২হাজার,নারিকেল ১ শটি, আমলকি ৫০ টি, থাই ঝাম ২০ টি সহ আরো নানাবিদ ফলের গাছ।মুহাম্মদ সোহাগ মিয়া আরো জানান একটির ফলন শেষ হলে আরেকটি ফলন বিক্রি শুরু করা সম্ভব।
১২মাস ধরে যেকোন ফল আমরা বিক্রি করতে পারবো। বাগান মালিক আলহাজ্জ আল্লামা গোলাম মোস্তফা শায়েস্তাখাঁন আযহারী ফোনে জানান আমার বাবা আলহাজ্জ এম আবদুল ওহাব বিএ বিএড এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, কেজি, মসজিদ সহ ধর্মিয় প্রতিস্টান প্রতিষ্টা করেছেন। এতকিছু করার পরও তিনি কৃষি জমিতে চাষাবাদ, মাছ চাষ, ফল মুল এগুলো এলাকায় তৈরি হওক এসব কিছু তিনি বেশি পছন্দ করতেন এবং নিজেও জীবিত থাকা অবস্থায় এসব করেছেন। আমরা সকল ভায়েরা আমার বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে এবং এলাকার মানুষ যাতে কম মূল্য দিয়ে ফল ফলাদী খেতে পারে সে নিয়্যতে আমরা এসব বাগান করেছি।
তিনি জানান আমরা বাগান করে সফল হয়েছি। কয়েক বছর ধরে প্রচুর আমের ফলন হচ্ছে এবং লক্ষ লক্ষ টাকার আম বিক্রি করতে পেরেছি। এবার পেয়ারা বড়ই পেঁপে এমন ভাবে ধরেছে বিক্রি করে শেষ করা যাচ্ছেনা এসব আল্লাহর রহমত ছাড়া আর কিছু না। তিনি বর্তমান সময়ে তাদের বাগান গুলো উত্তর চট্টগ্রামে সেরা বলে দাবী করেন। সরকারী সহযোগিতা পেলে এসব বাগান থেকে আরো বেশি ফলন উৎপাদন হবে বলে মনে করেন স্থানিয়রা।
বাখ//এস