০৫:১১ পূর্বাহ্ন, রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় ধ্বংসস্তূপে চাপা মরদেহের খোঁজে চলছে তল্লাশি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফিরে এসেছেন বাসিন্দারা। প্রায় পুরো এলাকা এখন ধ্বংসস্তূপ হয়ে আছে। বহু মানুষের খোঁজ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে অনেক মরদেহ। এসব মরদেহের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ফিলিস্তিনি জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চলছে।

১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এই ইস্যু মধ্যপ্রাচ্যকেও উত্তপ্ত করেছে। অবশেষে গত রোববার চুক্তি কার্যকর হয়। হামাসের হাতে জিম্মি তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯০ জন ফিলিস্তিনি।

ফিলিস্তিনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিসেসের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘আমরা ১০ হাজার শহীদের সন্ধান করছি, যাদের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। কমপক্ষে ২৮৪০টি মরদেহ গলে গেছে এবং তাদের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় ধাক্কা ছিল। মানুষ হতবাক। তাদের ঘরবাড়িতে যা ঘটেছে, ধ্বংস, সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি ভূমিকম্প বা বন্যার মতো নয়, যা ঘটেছে তা ধ্বংসের যুদ্ধ।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর পরই ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রাণহানি ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে।

গাজার বাসিন্দা এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যুদ্ধবিরতি বহাল রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোমবার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আটজন ইসরায়েলি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

যুদ্ধের পর গাজা পুনর্নির্মাণের জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে। এ মাসে প্রকাশিত জাতিসংঘের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নে দেখা গেছে, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের পর অবশিষ্ট ৫ কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ অপসারণে ২১ বছর সময় লাগতে পারে এবং ১.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

গত বছরের জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ভাঙা বাড়িগুলো পুনর্নির্মাণে কমপক্ষে ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, তবে এটি বহু দশক ধরে চলতে পারে।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০১:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৭০ জন দেখেছেন

গাজায় ধ্বংসস্তূপে চাপা মরদেহের খোঁজে চলছে তল্লাশি

আপডেট : ০১:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফিরে এসেছেন বাসিন্দারা। প্রায় পুরো এলাকা এখন ধ্বংসস্তূপ হয়ে আছে। বহু মানুষের খোঁজ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে অনেক মরদেহ। এসব মরদেহের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ফিলিস্তিনি জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চলছে।

১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এই ইস্যু মধ্যপ্রাচ্যকেও উত্তপ্ত করেছে। অবশেষে গত রোববার চুক্তি কার্যকর হয়। হামাসের হাতে জিম্মি তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯০ জন ফিলিস্তিনি।

ফিলিস্তিনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিসেসের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘আমরা ১০ হাজার শহীদের সন্ধান করছি, যাদের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। কমপক্ষে ২৮৪০টি মরদেহ গলে গেছে এবং তাদের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় ধাক্কা ছিল। মানুষ হতবাক। তাদের ঘরবাড়িতে যা ঘটেছে, ধ্বংস, সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি ভূমিকম্প বা বন্যার মতো নয়, যা ঘটেছে তা ধ্বংসের যুদ্ধ।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর পরই ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রাণহানি ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে।

গাজার বাসিন্দা এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যুদ্ধবিরতি বহাল রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোমবার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আটজন ইসরায়েলি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

যুদ্ধের পর গাজা পুনর্নির্মাণের জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে। এ মাসে প্রকাশিত জাতিসংঘের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নে দেখা গেছে, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের পর অবশিষ্ট ৫ কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ অপসারণে ২১ বছর সময় লাগতে পারে এবং ১.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

গত বছরের জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ভাঙা বাড়িগুলো পুনর্নির্মাণে কমপক্ষে ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, তবে এটি বহু দশক ধরে চলতে পারে।