০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যর্থতা নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জো বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এক ঝাঁক ব্যর্থতা নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চারবছর আগে শপথ নেয়ার পর আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এ অঞ্চলের সংকট সমাধান করলেও, ক্ষমতার বেশিরভাগ সময়জুড়ে ছিলেন যুদ্ধের ডামাডোলে। রাশিয়া-ইউক্রেন ও হামাস-ইসরাইল যুদ্ধই বিতর্কিত করে ফেলে বাইডেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। যার ইতি টানতে হয় ডেমোক্র্যাটদের বিপুল ভোট পরাজয়ের মাধ্যমে।

নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রবেশ যতটা জাঁকজমকপূর্ণ ততটাই জৌলুসহীন বাইডেনের বিদায়। ব্যর্থতার গ্লানিতে নুয়ে পড়বে বাইডেনের ৫০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হয়তো বিষয়টি তার ধারণারও বাইরে ছিল।

বিশ্বের কঠিন এক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন জো বাইডেন। যখন কিনা মহামারি করোনায় দাপটে ভুগছে বিশ্ব। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখাতে হয়েছে তাকে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও সুরাহা করেছেন আফগানিস্তান সংকটের। ক্ষমতা গ্রহণের পরই দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঝুলে থাকা আফগানিস্তানের সংকট নিরসন করেন বাইডেন প্রশাসন। যা তার পূর্বসূরি অনেক প্রেসিডেন্ট এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দিয়ে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করলেও বিশ্বের আরেক প্রান্তে বাঁধিয়েছেন লঙ্কাকাণ্ড। ন্যাটোতে যোগ দেয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পেছনেও বাইডেনের উসকানিকেও দায়ী করেন অনেকেই।

যদিও ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র ১১ ঘণ্টা আগে মধ্যপ্রাচ্যের আগুনে পানি ঢেলে গেছেন বাইডেন। বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকরে বেশ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তার এ সফলতায় ভাগ বসিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বাইডেনের এসব ব্যর্থতার পাশাপাশি রয়েছে বড় কিছু সফলতাও। অভিবাসন নীতি সহজ করে মার্কিন মুল্লুকে প্রবেশের সুযোগ দেয়া ছিল বাইডেনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও যুবকদের জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান তৈরি ছিল তার প্রশাসনের লক্ষ্য।

তকে ৪ বছরে বিশ্বকে অস্থির করে তোলার অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে ডেমোক্র্যাট পার্টি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের কাছে হেরে যান কামালা হ্যারিস।

যদিও বাইডেনের বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্রে তারা ভালো কাজের বীজ বপন করে গেছে। যার সুফল আগামীতে ভোগ করবে মার্কিনিরা। সোমবার বিদায়ী ভাষণে এই মন্তব্য করেন তিনি।

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সফল হয়েছি। মজবুত অর্থনীতি রেখে যাচ্ছি। কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য বৈষম্যহীন রাষ্ট্র রেখে যাচ্ছি।’

সফলতা-ব্যর্থতা যাই হোক প্রেসিডেন্ট হিসেবে একরাশ হতাশা নিয়ে রাজনৈতিক জীবন থেকে বিদায় নিচ্ছেন জো বাইডেন। তবে রেখে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটদের জন্য অদম্য সাহস আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৬:০৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৭৩ জন দেখেছেন

ব্যর্থতা নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জো বাইডেন

আপডেট : ০৬:০৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

এক ঝাঁক ব্যর্থতা নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চারবছর আগে শপথ নেয়ার পর আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এ অঞ্চলের সংকট সমাধান করলেও, ক্ষমতার বেশিরভাগ সময়জুড়ে ছিলেন যুদ্ধের ডামাডোলে। রাশিয়া-ইউক্রেন ও হামাস-ইসরাইল যুদ্ধই বিতর্কিত করে ফেলে বাইডেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। যার ইতি টানতে হয় ডেমোক্র্যাটদের বিপুল ভোট পরাজয়ের মাধ্যমে।

নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রবেশ যতটা জাঁকজমকপূর্ণ ততটাই জৌলুসহীন বাইডেনের বিদায়। ব্যর্থতার গ্লানিতে নুয়ে পড়বে বাইডেনের ৫০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হয়তো বিষয়টি তার ধারণারও বাইরে ছিল।

বিশ্বের কঠিন এক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন জো বাইডেন। যখন কিনা মহামারি করোনায় দাপটে ভুগছে বিশ্ব। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখাতে হয়েছে তাকে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও সুরাহা করেছেন আফগানিস্তান সংকটের। ক্ষমতা গ্রহণের পরই দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঝুলে থাকা আফগানিস্তানের সংকট নিরসন করেন বাইডেন প্রশাসন। যা তার পূর্বসূরি অনেক প্রেসিডেন্ট এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দিয়ে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করলেও বিশ্বের আরেক প্রান্তে বাঁধিয়েছেন লঙ্কাকাণ্ড। ন্যাটোতে যোগ দেয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পেছনেও বাইডেনের উসকানিকেও দায়ী করেন অনেকেই।

যদিও ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র ১১ ঘণ্টা আগে মধ্যপ্রাচ্যের আগুনে পানি ঢেলে গেছেন বাইডেন। বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকরে বেশ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তার এ সফলতায় ভাগ বসিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বাইডেনের এসব ব্যর্থতার পাশাপাশি রয়েছে বড় কিছু সফলতাও। অভিবাসন নীতি সহজ করে মার্কিন মুল্লুকে প্রবেশের সুযোগ দেয়া ছিল বাইডেনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও যুবকদের জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান তৈরি ছিল তার প্রশাসনের লক্ষ্য।

তকে ৪ বছরে বিশ্বকে অস্থির করে তোলার অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে ডেমোক্র্যাট পার্টি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের কাছে হেরে যান কামালা হ্যারিস।

যদিও বাইডেনের বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্রে তারা ভালো কাজের বীজ বপন করে গেছে। যার সুফল আগামীতে ভোগ করবে মার্কিনিরা। সোমবার বিদায়ী ভাষণে এই মন্তব্য করেন তিনি।

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সফল হয়েছি। মজবুত অর্থনীতি রেখে যাচ্ছি। কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য বৈষম্যহীন রাষ্ট্র রেখে যাচ্ছি।’

সফলতা-ব্যর্থতা যাই হোক প্রেসিডেন্ট হিসেবে একরাশ হতাশা নিয়ে রাজনৈতিক জীবন থেকে বিদায় নিচ্ছেন জো বাইডেন। তবে রেখে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটদের জন্য অদম্য সাহস আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।