০৮:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাঁথিয়ায় পেঁপে চাষে লাভবান কৃষক

জালাল উদ্দিন, সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়া। তার স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন ও দুই সন্তানদের নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন তিনি। পেশায় তিনি একজন ভালো ও পরিশ্রমী কৃষক। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি জমি লিজ দেওয়ার ব্যবসা করেন। তার বড় ছেলের বয়স পনের বছর এবং দ্বিতীয় ছেলের বয়স ছয় বছর। বড় ছেলে ৭ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে এবং ছোট ছেলে স্কুলে ভর্তি হয়নি। তিনি ৪০ হাজার টাকা খরচ করে পেঁপের চাষ করে ১লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন।

জানা গেছে,পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন(পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিট কৃষি খাতের আওতায় প্রোগ্রামস ফর পিপলস ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি)কর্তৃক বাস্তবায়িত বেড়া শাখার আওতায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়।

নান্নু মিয়া প্রতিবছরই লোকাল জাতের মরিচ, গো-খাদ্য ঘাস ও পুঁইশাকসহ শাকসবজি চাষ করতেন। একদিন সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন তিনি। কর্মকর্তা তাকে পিপিডি’র সম্পর্কে জানান এবং প্রথম অবস্থায় করমজা পূর্বপাড়া মহিলা সমিতিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি ভর্তি হন। এরপর তাকে উচ্চমূল্যের ফল,সবজি এবং পেঁপে চাষের জন্য বলা হলে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নান্নু মিয়ার বাড়িতে দুইটি গরু আছে। এরপর সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর মাধ্যমে তাকে উন্নত ও আধুনিক জাতের পেঁপে (টপলেডী) জাতের ৩০০টি চারা,জৈব ও রাসায়নিক সার,জৈব বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়। এছাড়া তাকে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়।পেঁপে চাষের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসাবে পুঁইশাকের আবাদ করেছিলেন তিনি। নান্নু মিয়া দুই লক্ষ পাঁচ হাজার টাকার পাকা ফল হিসাবে পেঁপে এবং সাথী ফসল হিসাবে পুঁইশাক বাজারে বিক্রি করেন। চাষ করতে তার মোট খরচ হয়েছিলো ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার নীট লাভ হয় ১ লক্ষ ৬৫হাজার টাকা।

নান্নু মিয়া বলেন,এই নতুন ধরনের ফসল এর আগে কখনও আবাদ করিনি। এই ধরণের ফসল অধিক নিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ, দ্রæত ফল ধরে। সবজি এবং ফল দুই হিসাবেই খাওয়া ও বিক্রি করা যায়। তবে পাকা ফলের বাজার মূল্য অনেক বেশী।পাকা ফল শরীরের জন্য অনেক উপকার। পরবর্তীতে তিনি পিপিডি’র সংস্থার সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরী করেন এবং সেখান থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণ নিয়ে তিনি কৃষি কাজ করেন। বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে খুব সুখে শান্তিতে জীবন-যাপন করছেন বলে তিনি জানান।

পিপিডির কৃষি কর্মকর্তা অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, করমজা পূর্বপাড়া বায়া গ্রামে দিন দিন পেঁপে চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে। তবে কৃষকরা শুধুমাত্র সবজি হিসাবে পেঁপে চাষ করছে। কিন্তু বর্তমানে টপলেডী জাতের পেঁপে পাকাফল ও সবজি দুই হিসাবেই বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:০৮:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
১২২ জন দেখেছেন

সাঁথিয়ায় পেঁপে চাষে লাভবান কৃষক

আপডেট : ০৭:০৮:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়া। তার স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন ও দুই সন্তানদের নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন তিনি। পেশায় তিনি একজন ভালো ও পরিশ্রমী কৃষক। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি জমি লিজ দেওয়ার ব্যবসা করেন। তার বড় ছেলের বয়স পনের বছর এবং দ্বিতীয় ছেলের বয়স ছয় বছর। বড় ছেলে ৭ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে এবং ছোট ছেলে স্কুলে ভর্তি হয়নি। তিনি ৪০ হাজার টাকা খরচ করে পেঁপের চাষ করে ১লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন।

জানা গেছে,পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন(পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিট কৃষি খাতের আওতায় প্রোগ্রামস ফর পিপলস ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি)কর্তৃক বাস্তবায়িত বেড়া শাখার আওতায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়।

নান্নু মিয়া প্রতিবছরই লোকাল জাতের মরিচ, গো-খাদ্য ঘাস ও পুঁইশাকসহ শাকসবজি চাষ করতেন। একদিন সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন তিনি। কর্মকর্তা তাকে পিপিডি’র সম্পর্কে জানান এবং প্রথম অবস্থায় করমজা পূর্বপাড়া মহিলা সমিতিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি ভর্তি হন। এরপর তাকে উচ্চমূল্যের ফল,সবজি এবং পেঁপে চাষের জন্য বলা হলে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নান্নু মিয়ার বাড়িতে দুইটি গরু আছে। এরপর সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর মাধ্যমে তাকে উন্নত ও আধুনিক জাতের পেঁপে (টপলেডী) জাতের ৩০০টি চারা,জৈব ও রাসায়নিক সার,জৈব বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়। এছাড়া তাকে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়।পেঁপে চাষের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসাবে পুঁইশাকের আবাদ করেছিলেন তিনি। নান্নু মিয়া দুই লক্ষ পাঁচ হাজার টাকার পাকা ফল হিসাবে পেঁপে এবং সাথী ফসল হিসাবে পুঁইশাক বাজারে বিক্রি করেন। চাষ করতে তার মোট খরচ হয়েছিলো ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার নীট লাভ হয় ১ লক্ষ ৬৫হাজার টাকা।

নান্নু মিয়া বলেন,এই নতুন ধরনের ফসল এর আগে কখনও আবাদ করিনি। এই ধরণের ফসল অধিক নিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ, দ্রæত ফল ধরে। সবজি এবং ফল দুই হিসাবেই খাওয়া ও বিক্রি করা যায়। তবে পাকা ফলের বাজার মূল্য অনেক বেশী।পাকা ফল শরীরের জন্য অনেক উপকার। পরবর্তীতে তিনি পিপিডি’র সংস্থার সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরী করেন এবং সেখান থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণ নিয়ে তিনি কৃষি কাজ করেন। বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে খুব সুখে শান্তিতে জীবন-যাপন করছেন বলে তিনি জানান।

পিপিডির কৃষি কর্মকর্তা অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, করমজা পূর্বপাড়া বায়া গ্রামে দিন দিন পেঁপে চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে। তবে কৃষকরা শুধুমাত্র সবজি হিসাবে পেঁপে চাষ করছে। কিন্তু বর্তমানে টপলেডী জাতের পেঁপে পাকাফল ও সবজি দুই হিসাবেই বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

বাখ//এস