০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অবৈধ ইটভাটার মাটি রাখতে কৃষকের ১৬শ কলাগাছ কর্তন : ১০ দিনেও মেলেনি প্রতিকার

অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাটার জন্য পদ্মানদীর পাড় ও কৃষি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। সেই মাটি স্তুপ করে রাখতে দখল করা হয়েছে ভাটার পাশে থাকা কৃষকের ৩ বিঘা জমি। কেটে ফেলা হয়ে জমিতে থাকা ফলন্ত ১৬শ কলাগাছ। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ১০ দিন পার হলেও কোথাও থেকে পাওয়া যায়নি প্রতিকার। কিংবা আইনি সহযোগি। এই কারণে এখন অবৈধ দখলদার ইটভাটার মালিক ও তার স্বজনদের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে হুমকি। মিমাংসায় রাজি না হলে করা হবে এলাকা ছাড়া। এমন হুমকি ও ভয়ভীতিতে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন মো. হান্নান মোল্লা (৫২) নামের এক কৃষক।
এই চিত্র পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যঞ্চল লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মানিকমোড়স্থ পদ্মানদীর তীরবর্তি স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল মোল্লার ইটভাটায়।
লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কামালপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত ইসলাম মোল্লার ছেলে মো. জহুরুল মোল্লা তার মানিকমোড় এলাকার ইটভাটায় জন্য পদ্মানদী থেকে মাটি কাটছে। ৪-৫ টি ড্রাম ট্রাকে করে পদ্মানদী থেকে ইটভাটার জন্য মাটি আনা হচ্ছে। সেই মাটি রাখতে প্রতিবেশি মৃত খবির উদ্দিন মোল্লার ছেলে কৃষক হান্নান মোল্লার খাজনা নিয়ে কলাচাষ করা তিন বিঘা জমি দখল করা হয়েছে। জমিতে থাকা দুই হাজান কলাগাছের মধ্যে ১৬শ কলাগাছ কলাসহ কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানেই মাটি রাখা হচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে কলাগাছগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
স্কেভেটর ভাড়া করে আনা স্থানীয় আব্দুল মজিদ জানান, জমি কার তা জানি না। জহুরুল মোল্লা ও তার ছেলে কলাগাছ সরিয়ে জায়গা পরিস্কার করতে বলেছেন আমরা তাই করছি।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. হান্নান মোল্লা জানান, জমিটি স্থানীয় আনিছ বিশ্বাসের নিকট থেকে তিন বছরের জন্য খাজনা নিয়ে গত বছর কলাগাছগুলো লাগিয়ে ছিলেন। এতে তার প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
হান্নান মোল্লার অভিযোগ এই বিষয়ে এক সপ্তাহ আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস ও ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে এসেছি। কিন্তু সেখান থেকে কোন প্রতিকার পায়নি। এই কারণে প্রভাবশালী জহুরুল মোল্লাসহ তার লোকজন নানা রকম ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছে। বিষয়টি মিমাংসা করে নেওয়া জন্য চাপ প্রদান করছে। প্রশাসন থেকে আইনি কোন সহযোগিতা না পেলে নিরুপায় হয়ে হয়তো মিমাংসা বসতে হবে।
এবিষয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কলাগাছ কেটে জমি দখলকারী জহুরুল মোল্লার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। তবে তার ছেলে আল আমিন মোল্লা জানান, ইটভাটার জন্য জমিটি আমাদের খুবই প্রয়োজন ছিলো। তাই জায়গাটি নেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে বলে দাবী করেন আল আমিন মোল্লা।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম শহীদ জানান, অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
বাখ//আর