০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, পর্যটন ব্যবসা নিয়ে শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক

আজই শেষ হচ্ছে চলতি মৌসুমে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রবাল দ্বীপটিতে পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ রাখা হলেও পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যার প্রভাব পড়বে পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর ফলে উদ্বিগ্ন দ্বীপের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা।

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে থাকা দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপের মায়াবী সৌন্দর্যের টানে প্রতিবছর ছুটে যান হাজারো পর্যটক। যেখানে সুনীল স্বচ্ছ জলরাশি, সারি সারি নারিকেল বাগান, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপ কিংবা পাথুরে সৈকতের অনাবিল সৌন্দর্য মোহিত করে ভ্রমণ পিপাসুদের।

এক সময় মাছ আহরণ, শামুক-ঝিনুক কিংবা প্রবাল পাথর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করা এই দ্বীপের বাসিন্দারা গত কয়েক দশকে জড়িয়েছেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়। ইতোমধ্যে দ্বীপটিতে স্থানীয় ও বাইরের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে গড়ে উঠেছে দেড় শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট। মূলত পর্যটক সমাগম ঘিরে বছরে ৫-৬ মাস আয় করেন এ দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দা। তবে চলতি মৌসুমে সরকারি নানা বিধিনিষেধের কারণে গত পহেলা ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ২ হাজার করে পর্যটক। সেই সুযোগও বন্ধ হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এতে চরম উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে দ্বীপে মানববন্ধনও করা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ উন্মুক্ত রাখার দাবিতে।

স্থানীয় রিসোর্ট মালিক আব্দুল মালেক বলেন, ‘ প্রতিবছর পাঁচ মাস জাহাজ চললেও চলতি বছর মাত্র দুই মাসের সরকার অনুমোদন দিয়েছে যেটা আমাদের দ্বীপের মানুষের বা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দুই মাসে অল্প আয় বাকি দশমাস চলা খুব কঠিন হবে।’

সীক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার কারণে আমরা কিন্তু নভেম্বরে পর্যটক নিতে পারি নাই। আমাদের দাবি ছিল নভেম্বরের প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতে অন্তত উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। ’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তমতে, নভেম্বরে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ২ হাজার পর্যটক যাওয়া এবং রাত্রিযাপনের সুযোগ রাখা হয়। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী অন্তত ৯ মাস দ্বীপে পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ থাকছে না।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ সরকারের সর্বশেষ নির্দেশনা সে অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন। যদি দ্বীপবাসী এমন কোনো চাহিদা থাকে আর তারা যদি আমাদের মাধ্যমে সরকারকে জানাতে চায় তাহলে তা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জানতে পারেন। তবে এ ব্যাপারের সরকার যে নির্দেশনা দেবে তাই আমরা বাস্তবায়ন করব।’

৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট দ্বীপটিতে বসবাস করে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৪:৪৩:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
১১৮ জন দেখেছেন

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, পর্যটন ব্যবসা নিয়ে শঙ্কা

আপডেট : ০৪:৪৩:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

আজই শেষ হচ্ছে চলতি মৌসুমে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রবাল দ্বীপটিতে পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ রাখা হলেও পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যার প্রভাব পড়বে পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর ফলে উদ্বিগ্ন দ্বীপের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা।

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে থাকা দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপের মায়াবী সৌন্দর্যের টানে প্রতিবছর ছুটে যান হাজারো পর্যটক। যেখানে সুনীল স্বচ্ছ জলরাশি, সারি সারি নারিকেল বাগান, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপ কিংবা পাথুরে সৈকতের অনাবিল সৌন্দর্য মোহিত করে ভ্রমণ পিপাসুদের।

এক সময় মাছ আহরণ, শামুক-ঝিনুক কিংবা প্রবাল পাথর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করা এই দ্বীপের বাসিন্দারা গত কয়েক দশকে জড়িয়েছেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়। ইতোমধ্যে দ্বীপটিতে স্থানীয় ও বাইরের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে গড়ে উঠেছে দেড় শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট। মূলত পর্যটক সমাগম ঘিরে বছরে ৫-৬ মাস আয় করেন এ দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দা। তবে চলতি মৌসুমে সরকারি নানা বিধিনিষেধের কারণে গত পহেলা ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ২ হাজার করে পর্যটক। সেই সুযোগও বন্ধ হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এতে চরম উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে দ্বীপে মানববন্ধনও করা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ উন্মুক্ত রাখার দাবিতে।

স্থানীয় রিসোর্ট মালিক আব্দুল মালেক বলেন, ‘ প্রতিবছর পাঁচ মাস জাহাজ চললেও চলতি বছর মাত্র দুই মাসের সরকার অনুমোদন দিয়েছে যেটা আমাদের দ্বীপের মানুষের বা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দুই মাসে অল্প আয় বাকি দশমাস চলা খুব কঠিন হবে।’

সীক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার কারণে আমরা কিন্তু নভেম্বরে পর্যটক নিতে পারি নাই। আমাদের দাবি ছিল নভেম্বরের প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতে অন্তত উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। ’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তমতে, নভেম্বরে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ২ হাজার পর্যটক যাওয়া এবং রাত্রিযাপনের সুযোগ রাখা হয়। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী অন্তত ৯ মাস দ্বীপে পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ থাকছে না।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ সরকারের সর্বশেষ নির্দেশনা সে অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন। যদি দ্বীপবাসী এমন কোনো চাহিদা থাকে আর তারা যদি আমাদের মাধ্যমে সরকারকে জানাতে চায় তাহলে তা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জানতে পারেন। তবে এ ব্যাপারের সরকার যে নির্দেশনা দেবে তাই আমরা বাস্তবায়ন করব।’

৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট দ্বীপটিতে বসবাস করে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ।