০১:৫১ অপরাহ্ন, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একুশে পদক পাচ্ছেন ‘অভ্রর মেহেদী হাসান

স্টাফ রিপোর্টার

‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’— এমন একটি ট্যাগলাইন আজকাল অনেকেরই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ চালু করলেই পর্দায় দেখতে পাওয়া যায়। লাইনটি ‘অভ্র’ নামের একটি সফটওয়্যারের স্বাগত বার্তা। বিশ্বায়নের এই যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা ভাষায় লেখতে পারার জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার ‘অভ্র’ কিবোর্ড। আর এটির আবিষ্কারক একজন চিকিৎসক, যার নাম মেহেদী হাসান খান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে ২০২৫ সালের একুশে পদক পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একুশে পদক প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

অভ্র উদ্ভাবনের ফলে খুব সহজেই ভার্চুয়ালি বাংলা ভাষায় লেখালেখি করতে পারছেন অনেকে। কিন্তু দীর্ঘসময় মেহেদী হাসানের এই অবিস্মরণীয় অবদান নিয়ে আলোচনা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।

মেহেদী হাসান খান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। ২০০৩ সালের বইমেলায় বায়োস নামক একটি সংগঠনের প্রদর্শনী দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মেহেদী হাসান। তখনই তার মনে উদ্ভব হয় একটি সহজতর বাংলা লেখার সফটওয়্যার তৈরির চিন্তা।

শুরুর দিকে, ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার না থাকায় তিনি নিজেই একটি সমাধান তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।

প্রথমে মাইক্রোসফট ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেন। কিন্তু সেটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। অবশেষে, ক্লাসিক ভিজ্যুয়াল বেসিকের ওপর ভিত্তি করে নতুন একটি সংস্করণ তৈরি করেন, যা বাংলা লেখার জন্য আদর্শ হয়ে ওঠে।

এক স্বাধীনতা দিবসে, ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো অভ্র কী-বোর্ড উন্মুক্ত করা হয়। একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ওমিক্রনল্যাব থেকে এটি মুক্তি দেয়া হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে অভ্র।

উল্লেখ্য, অভ্র কী-বোর্ডের জন্য ২০১১ সালে মেহেদী হাসান খান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বেসিস পুরস্কার পান। এবার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক দেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৭:৪১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১০০ জন দেখেছেন

একুশে পদক পাচ্ছেন ‘অভ্রর মেহেদী হাসান

আপডেট : ০৭:৪১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’— এমন একটি ট্যাগলাইন আজকাল অনেকেরই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ চালু করলেই পর্দায় দেখতে পাওয়া যায়। লাইনটি ‘অভ্র’ নামের একটি সফটওয়্যারের স্বাগত বার্তা। বিশ্বায়নের এই যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা ভাষায় লেখতে পারার জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার ‘অভ্র’ কিবোর্ড। আর এটির আবিষ্কারক একজন চিকিৎসক, যার নাম মেহেদী হাসান খান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে ২০২৫ সালের একুশে পদক পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একুশে পদক প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

অভ্র উদ্ভাবনের ফলে খুব সহজেই ভার্চুয়ালি বাংলা ভাষায় লেখালেখি করতে পারছেন অনেকে। কিন্তু দীর্ঘসময় মেহেদী হাসানের এই অবিস্মরণীয় অবদান নিয়ে আলোচনা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।

মেহেদী হাসান খান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। ২০০৩ সালের বইমেলায় বায়োস নামক একটি সংগঠনের প্রদর্শনী দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মেহেদী হাসান। তখনই তার মনে উদ্ভব হয় একটি সহজতর বাংলা লেখার সফটওয়্যার তৈরির চিন্তা।

শুরুর দিকে, ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার না থাকায় তিনি নিজেই একটি সমাধান তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।

প্রথমে মাইক্রোসফট ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেন। কিন্তু সেটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। অবশেষে, ক্লাসিক ভিজ্যুয়াল বেসিকের ওপর ভিত্তি করে নতুন একটি সংস্করণ তৈরি করেন, যা বাংলা লেখার জন্য আদর্শ হয়ে ওঠে।

এক স্বাধীনতা দিবসে, ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো অভ্র কী-বোর্ড উন্মুক্ত করা হয়। একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ওমিক্রনল্যাব থেকে এটি মুক্তি দেয়া হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে অভ্র।

উল্লেখ্য, অভ্র কী-বোর্ডের জন্য ২০১১ সালে মেহেদী হাসান খান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বেসিস পুরস্কার পান। এবার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক দেয়া হচ্ছে।