‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ গাজীপুরে ৮৩ জন গ্রেপ্তার

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুর জেলা পুলিশ এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দের তথ্যে জানা যায়, “অপারেশন ডেভিল হান্টে” গাজীপুরে মোট ৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানায় ৪০ জন এবং মহানগরের আট থানায় ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) অতিরিক্ত কশিশনার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) তাহেরুল হক চৌহান জানান, গাজীপুর মহানগরের আট থানায় মোট ৪৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মহানগরের সদর মেট্রো সদর থানায় ১৬ জন, পূবাইল থানায় দুইজন, কোনাবাড়ি থানায় দুইজন, কাশিমপুর থানায় তিনজন, বাসন থানায় আটজন, গাছা থানায় পাঁচজন, টঙ্গী পূর্ব থানায় একজনসহ সর্বমোট ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের পরিচয় জানা যায়নি।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. চৌধুরী যাবের সাদেক বলেন, “শনিবার রাতভর অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি), সেনাবাহিনী এবং র্যাব তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।”
শ্রীপুর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) সূজন কুমার পণ্ডিত জানান, শনিবার রাতে উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতিসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন, শ্রীপুর উপজেলার মিলন আহমেদ (৪৫), কাওরাইদ ইউনিয়নের হালিম উদ্দিন (৬০), তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের মেহেদী হাসান বাপ্পি (২৮), ৬ নং ওয়ার্ডের স্বপন শাজাহান (৩৮), উজিলাব গ্রামের আহমদ হোসেন মোল্লা, মাটিয়াগাড়া গ্রামের মজিবুর রহমান, বরমী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী সজিব (২৭), ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (২ নং ওয়ার্ড) লাকচতল গ্রামের আবু ইউসুফ (২৪), গোসিংগা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি (৩ নং ওয়ার্ড) বাউনীর আব্দুল আল মামুন (৫৯), মাওনা ইউনিয়নের বেতজুরি গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন (৩৫)।
এদিকে, কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, উপজেলা মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন টোক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম হোসেন, রায়েদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন, কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য শাহাদাত হোসেন, চেরাগ আলীর ছেলে ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, সদর উপজেলা মোট ৯ জন, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, উপজেলার মোট তিনজন এবং কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন জানান, উপজেলায় মোট থানায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ দলীয় বিভিন্ন পদধারী নেতাও আছেন।
এর আগে, রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) তাহেরুল হক চৌহান জানান, গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকের পৈতৃক বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১৮ জনসহ মোট ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তাদেরকে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আ ক ম মোজাম্মেল হকের পৈতৃক বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১৮ জনকে এবং চলমান অভিযানে আরো ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাখ//আর