পাবনায় বালু উত্তোলনের উৎসব, রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব

প্রশাসনের কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুরে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তির নেতৃত্বে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ চলছে। নদীর তীর ঘেষে বালুর উত্তোলনের ফলে হুমকিতে কৃষকদের শত শত বিঘা ফসলি জমি। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন কর্মযজ্ঞ চললেও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কোনো তৎপরতা পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রশাসনের এক শ্রেনীর কর্মকর্তা এই বালি উত্তোলনে সহায়তা করছে। এর সঙ্গে তথাকথিত কতিপয় মিডিয়াকর্মি জড়িত বলে চাউড় আছে।
স্থানীয় ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরতারাপুর ইউনিয়নের দিঘী গোয়াইলবাড়ি এলাকায় পদ্ম নদীতে একাধিক পয়েন্ট করে এই বালু উত্তোলন চলছে। একেবারে নদীর তীর ঘেষে তাদের কর্মকান্ড চলছে। পাহারা বসিয়ে প্রতিদিন একাধিক ভেকু মেশিন দিয়ে অর্ধশতাধিক ট্রাকের মাধ্যমে বালু উত্তোলন চলছে। এসব বালুর বোঝায় ট্রাকগুলো চলে যাচ্ছে ইউনিয়ন ছাড়িয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্থে। প্রতিদিন সেখান থেকে ৫-১০ লাখ টাকার বালু বেচাকেনা চলছে, যার সিংহভাগ চলে যায় সংশ্লিষ্ট সকল মহলের পকেট।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আগের এখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন চলছিল। বালু উত্তোলনের ফলে কয়েক মাস আগে গর্তে পড়ে তিন শিশু মারা গেলেও তারা কর্মকাণ্ড থামানো যায়নি। গত ৫ আগস্ট পরবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা পালিয়ে গেলে হাল ধরেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এসব জমি বেশিরভাগই ব্যক্তি মালিকানাধীন, নদী ভাঙনে নদী গর্ভে চলে যায়। কিন্তু জমির মালিকদের নানা হমকি দিয়ে তাদের নিষেধ উপেক্ষা করেই এসব কর্মকাণ্ড চলছে।
এসব কর্মকান্ডে চরতারাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান শেখ রহমত আলী এবং বিএনপির কর্মী এহসানুল হক বাবনের নাম উঠে আসলেও তারা অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে বাবন বলেন, ‘এই ইস্যুতে আমার কোনো কমেন্টে নেই। বালুর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনারা প্রশাসনকে বলেন তারা বন্ধ করে দিক।’ আর শেখ রহমত আলী বলেন, ‘আমি বালু উত্তোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি চরতারাপুরে রাজনীতি করি, চেয়ারম্যান ছিলাম এবং সাবেক সভাপতি ছিলাম এজন্য কেউ নাম বলতে পারে, কিন্তু আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। এব্যাপারে প্রশাসন আমার কোনো কথা শোনে না।
এ বিষয়ে পাবনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। এটা এসিল্যান্ডের বিষয়। আমরা খবর পেলে এসিল্যান্ড মহোদয়কে বলি। আপনারা একটু এসিল্যান্ডকে বলেন। তিনি আমাদের বললে আমরা প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট করবো।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পাবনা সদর ভূমি সহকারী কমিশনার মুরাদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই তবে দেখি খোজখবর নিচ্ছি। তবে অন্য একটি সুত্র জানায় পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম বলে প্রতিনিধিন বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বাখ//আর