০২:৩৪ অপরাহ্ন, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরের গদখালীর ফুলচাষের জনক শেরআলী সরদার আর নেই

রাফিউল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
সকলের প্রিয় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী-পানিসারা এলাকার ফুলচাষের জনক শেরআলী সরদার আর নেই। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ৭৫বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারনে নিজবাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)।
মরহুম শের আলী সরদার ১৯৫০ সালে পানিসারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ওই গ্রামের মৃত-আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে। মরহুম শের আলী সরদার ১৯৮২সালে তিনিই প্রথম গদখালী-পানিসারা এলাকায় ফুল চাষ শুরু করেন। সেই পানিসারা-গদখালীতে বর্তমানে দেশের ফুলের চাহিদার ৭০ভাগ উৎপাদন হয়। ফলে গদখালীকে বর্তমানে ফুলের রাজধানী বলা হয়।
মরহুম শেরআলী সরদার মাত্র এক বিঘা জমিতে ফুলের চাষ দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। তার হাত ধরেই যশোরের ঝিকরগাছার পানিসারা ফুলের রাজ্য হিসাবে গড়ে উঠতে শুরু করে। যশোরকে ফুলের রাজধানী হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন মরহুম শেরআলী সরদার।
ফুল প্রেমিক শেরআলী সরদার মৃত্যুকালে ২স্ত্রী, ২পুত্র, ৩কন্যা, নাতী-নাতনীসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্খী ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। এদিন শেরআলী সরদারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গদখালী, পানিসারা, নাভারন ইউনিয়নের হাড়িয়া মোড় এলাকায় দিনভর হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিন জোহরবাদ পানিসারা গ্রামের নিজ বাড়িতে প্রথম জানাজা ও আসরবাদ হাড়িয়া ফুল মোড়ের মসজিদ সংলগ্ন দ্বিতীয় জানাজা শেযে নিজের তৈরী মসজিদের পাশে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়েছে। জানাজায় যশোর জেলা প্রশাসকের পক্ষে মরহুম শেরআলী সরদারের মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছে ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাভিদ সারওয়ার।
এছাড়া মরহুমের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসভবনে ছুটে যান এবং পৃথক জানাজায় অংশগ্রহণ করেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা এলাহ টিপু, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন, জেলা প্রশাসকের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার, ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কশিমনার ভুমি নাভিদ সারওয়ার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুন্নবী মুরাদ, কাজী আব্দুস সাত্তার, পৌর বিএনপির সভাপতি রুহুল আমীন সুজন, পানিসারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মীর আব্দুর রকিব, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আবুল খায়ের, গদখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তবিবর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপনন সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম, গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে মরহুম শেরআলী সরদারের মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার প্রেরিত শোক বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, যশোর জেলার ফুলের রাজ্যে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে বানিজ্যিক ভাবে ফুলচাষের প্রথম উদ্যোক্তা শেরআলী সরদার মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর ভাবে মর্মাহত ও শোকাহত।
শোক বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শেরআলী সরদার ঝিকরগাছা উপজেলা পানিসারা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একজন উদ্যোক্তা, পরিশ্রমী, নিষ্টাবান এবং সফল ফুলচাষি হিসেবে এলাকায় সমাদৃত ছিলেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয় তিনি যশোর জেলায় উন্নত প্রজাতির গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস ও জারবেরাসহ নানা প্রজাতির ফুলের চাষ শুরু করে স্থানীয় চাষিদের ফুল চাষে উদ্বোদ্ধ করেন এবং গদখালীকে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে রুপান্তরে অনবদ্য ভুমিকা পালন করেছেন বলেও শোক বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৮:০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৯৬ জন দেখেছেন

যশোরের গদখালীর ফুলচাষের জনক শেরআলী সরদার আর নেই

আপডেট : ০৮:০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সকলের প্রিয় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী-পানিসারা এলাকার ফুলচাষের জনক শেরআলী সরদার আর নেই। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ৭৫বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারনে নিজবাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)।
মরহুম শের আলী সরদার ১৯৫০ সালে পানিসারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ওই গ্রামের মৃত-আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে। মরহুম শের আলী সরদার ১৯৮২সালে তিনিই প্রথম গদখালী-পানিসারা এলাকায় ফুল চাষ শুরু করেন। সেই পানিসারা-গদখালীতে বর্তমানে দেশের ফুলের চাহিদার ৭০ভাগ উৎপাদন হয়। ফলে গদখালীকে বর্তমানে ফুলের রাজধানী বলা হয়।
মরহুম শেরআলী সরদার মাত্র এক বিঘা জমিতে ফুলের চাষ দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। তার হাত ধরেই যশোরের ঝিকরগাছার পানিসারা ফুলের রাজ্য হিসাবে গড়ে উঠতে শুরু করে। যশোরকে ফুলের রাজধানী হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন মরহুম শেরআলী সরদার।
ফুল প্রেমিক শেরআলী সরদার মৃত্যুকালে ২স্ত্রী, ২পুত্র, ৩কন্যা, নাতী-নাতনীসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্খী ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। এদিন শেরআলী সরদারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গদখালী, পানিসারা, নাভারন ইউনিয়নের হাড়িয়া মোড় এলাকায় দিনভর হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিন জোহরবাদ পানিসারা গ্রামের নিজ বাড়িতে প্রথম জানাজা ও আসরবাদ হাড়িয়া ফুল মোড়ের মসজিদ সংলগ্ন দ্বিতীয় জানাজা শেযে নিজের তৈরী মসজিদের পাশে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়েছে। জানাজায় যশোর জেলা প্রশাসকের পক্ষে মরহুম শেরআলী সরদারের মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছে ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাভিদ সারওয়ার।
এছাড়া মরহুমের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসভবনে ছুটে যান এবং পৃথক জানাজায় অংশগ্রহণ করেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা এলাহ টিপু, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন, জেলা প্রশাসকের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার, ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কশিমনার ভুমি নাভিদ সারওয়ার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুন্নবী মুরাদ, কাজী আব্দুস সাত্তার, পৌর বিএনপির সভাপতি রুহুল আমীন সুজন, পানিসারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মীর আব্দুর রকিব, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আবুল খায়ের, গদখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তবিবর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপনন সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম, গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে মরহুম শেরআলী সরদারের মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার প্রেরিত শোক বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, যশোর জেলার ফুলের রাজ্যে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে বানিজ্যিক ভাবে ফুলচাষের প্রথম উদ্যোক্তা শেরআলী সরদার মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর ভাবে মর্মাহত ও শোকাহত।
শোক বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শেরআলী সরদার ঝিকরগাছা উপজেলা পানিসারা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একজন উদ্যোক্তা, পরিশ্রমী, নিষ্টাবান এবং সফল ফুলচাষি হিসেবে এলাকায় সমাদৃত ছিলেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয় তিনি যশোর জেলায় উন্নত প্রজাতির গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস ও জারবেরাসহ নানা প্রজাতির ফুলের চাষ শুরু করে স্থানীয় চাষিদের ফুল চাষে উদ্বোদ্ধ করেন এবং গদখালীকে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে রুপান্তরে অনবদ্য ভুমিকা পালন করেছেন বলেও শোক বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।
বাখ//আর