০৮:৪২ অপরাহ্ন, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণশৌচাগার দখল করে গরুর হাঁড়গোড় ও গোবরের স্তুপ দুর্গন্ধে দুই শতাধিক শিশু

চিতলমারী প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজার। বাজারের শহীদ মিনার এলাকায় শিশুদের সুশিক্ষা দিতে গড়ে ওঠে সেমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল আদর্শ শিশু বিদ্যা নিকেতন। বিদ্যালয়টি বহু পুরানো। বিদ্যালয়ের পাশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের একমাত্র কেন্দ্রীয় মহাশশ্মান। যেখানে অত্র অঞ্চলের হিন্দুদের মৃত্যুর পর সৎকার করা হয়। শশ্মানটিও বহু পুরানো।

শশ্মানের পাশে এ এলাকার মানুষের কথা ভেবে এই বিদ্যালয় ও শশ্মানের মাঝে ফাঁকা জায়গায় সরকারি ভাবে একটি গণশৌচাগার নির্মান করা হয়। নির্মানের পর মানুষ এটি কিছুদিন ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে কিছু প্রভাবশালী মাংস বিক্রেতা (কসাই) ওটিকে দখল করে তার মধ্যে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় স্তুপ করে রাখছে এবং স্কুলের জানালা সংলগ্ন জায়গায় ভূড়ির গোবর ও বর্জ্য ফেলছে।

এ বর্জ্যরে দুর্গন্ধে প্রায় দুই শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী চরম ভোগান্তি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরদিকে, মহাশশ্মানের পাশে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় স্তুপ করে রাখায় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু মাংস বিক্রেতারা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এভাবেই বর্ণনাদেন বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী অভিভাবকেরা।

এ ব্যাপারে খাসির মাংস বিক্রেতা আলাউদ্দিন জানান, গরুর মাংস বিক্রেতা আবু সাইদ, জাফর ও কামরুল ওখানে জবাইকৃত গরুর হাড়গোড় রাখে।
গরুর মাংস বিক্রেতা আবু সাইদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পানির অভাব ও নষ্টের কারণে গণশৌচাগারটি এখন আর ব্যবহৃত হয় না। তাই আমরা পরিবেশের কথা ভেবে ওর মধ্যে হাঁড়গোড় রেখে বন্ধ করে রেখেছি।’

শিশু শিক্ষার্থী আল রাফি, নিষাদ মুন্সি, জেরিন, শাওন ও আবরার আমিন জানায়, যখন ওনারা স্কুলের জানালার পাশে ভুড়ির কাঁচা গোবর স্তুপ করে ফেলায় তখন দুর্গন্ধে তাদের নাড়ি-ভুড়ি মোচড়ায় ওঠে। রুমে ক্লাস করা দুর্বিসহ হয়ে পড়ে।

আদর্শ শিশু বিদ্যা নিকেতনের অধ্যক্ষ সুখময় ঘরামী জানান, হাড়গোড় ও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এতে শিশুরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
চিতলমারী কেন্দ্রীয় মহাশশ্মানের সভাপতি অনুপম সাহা জানান, তাঁরা দিনের পর দিন মহাশশ্মানের পাশে এভাবে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় ও বর্জ্য স্তুপ করে রাখছে। এতে স্থানীয় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৮:৪৬:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৯২ জন দেখেছেন

গণশৌচাগার দখল করে গরুর হাঁড়গোড় ও গোবরের স্তুপ দুর্গন্ধে দুই শতাধিক শিশু

আপডেট : ০৮:৪৬:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজার। বাজারের শহীদ মিনার এলাকায় শিশুদের সুশিক্ষা দিতে গড়ে ওঠে সেমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল আদর্শ শিশু বিদ্যা নিকেতন। বিদ্যালয়টি বহু পুরানো। বিদ্যালয়ের পাশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের একমাত্র কেন্দ্রীয় মহাশশ্মান। যেখানে অত্র অঞ্চলের হিন্দুদের মৃত্যুর পর সৎকার করা হয়। শশ্মানটিও বহু পুরানো।

শশ্মানের পাশে এ এলাকার মানুষের কথা ভেবে এই বিদ্যালয় ও শশ্মানের মাঝে ফাঁকা জায়গায় সরকারি ভাবে একটি গণশৌচাগার নির্মান করা হয়। নির্মানের পর মানুষ এটি কিছুদিন ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে কিছু প্রভাবশালী মাংস বিক্রেতা (কসাই) ওটিকে দখল করে তার মধ্যে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় স্তুপ করে রাখছে এবং স্কুলের জানালা সংলগ্ন জায়গায় ভূড়ির গোবর ও বর্জ্য ফেলছে।

এ বর্জ্যরে দুর্গন্ধে প্রায় দুই শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী চরম ভোগান্তি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরদিকে, মহাশশ্মানের পাশে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় স্তুপ করে রাখায় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু মাংস বিক্রেতারা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এভাবেই বর্ণনাদেন বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী অভিভাবকেরা।

এ ব্যাপারে খাসির মাংস বিক্রেতা আলাউদ্দিন জানান, গরুর মাংস বিক্রেতা আবু সাইদ, জাফর ও কামরুল ওখানে জবাইকৃত গরুর হাড়গোড় রাখে।
গরুর মাংস বিক্রেতা আবু সাইদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পানির অভাব ও নষ্টের কারণে গণশৌচাগারটি এখন আর ব্যবহৃত হয় না। তাই আমরা পরিবেশের কথা ভেবে ওর মধ্যে হাঁড়গোড় রেখে বন্ধ করে রেখেছি।’

শিশু শিক্ষার্থী আল রাফি, নিষাদ মুন্সি, জেরিন, শাওন ও আবরার আমিন জানায়, যখন ওনারা স্কুলের জানালার পাশে ভুড়ির কাঁচা গোবর স্তুপ করে ফেলায় তখন দুর্গন্ধে তাদের নাড়ি-ভুড়ি মোচড়ায় ওঠে। রুমে ক্লাস করা দুর্বিসহ হয়ে পড়ে।

আদর্শ শিশু বিদ্যা নিকেতনের অধ্যক্ষ সুখময় ঘরামী জানান, হাড়গোড় ও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এতে শিশুরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
চিতলমারী কেন্দ্রীয় মহাশশ্মানের সভাপতি অনুপম সাহা জানান, তাঁরা দিনের পর দিন মহাশশ্মানের পাশে এভাবে জবাইকৃত গরুর হাঁড়গোড় ও বর্জ্য স্তুপ করে রাখছে। এতে স্থানীয় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

বাখ//এস