০১:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা অতিথি 

বিশেষ প্রতিবেদক
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদের  হল রুমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে  আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেনকে পুরস্কার বিতরণ করতে দেখা গিয়েছে।  সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এমন একটা ছবি ফেসবুকে দেখা মিলে। এ নিয়ে ফেসবুক ও সাধারণ মানুষের মূখে মূখে সমালোচনা ঝড় বইছে।
উপজেলা পরিষদের মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেরাত প্রতিযোগিতা, ইসলামী সঙ্গীত ও মেহেদী ডিজাইন স্কিল (শুধুমাত্র মেয়ে) প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
যানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে তারুণ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  হয়। পরে বিচারকদের মাধ্যমে প্রতি গ্রুপ থেকে সাতজন করে মোট ২১ জনকে ক্রেস্ট, সনদ ও আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করতে দেখা যায় ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেনকে। পুরষ্কার দেবার সময় অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের ওই নেতার পাশে স্টেজে আলফাডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রইস উদ্দিন সহ  মো. মুআজের নামের আরেক যুবককে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন-অর রশীদ, আলফাডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মুসফিক, রজিন ইসলাম, মো. মনিরুল, মাছুরা রহমান, মো. তালহা, তাসনিমসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
রইস উদ্দিন আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের ৮ নং মিঠাপুর পৌর সদরের বাসিন্দা, তিনি নিজেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একজন নেতা দাবি করে ইতিমধ্যে একটি কথিত কমিটি গঠন করে  এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ৷ ৫ই আগষ্টের  আগে রইসকে  আলফাডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী আন্দলোনের কোন কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এমনকি তাদের এই অনুমদিত কমিটির ব্যাপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে মোনায়েম খানের এই উপস্থিতিতে জন মনে ক্ষোভের দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে রইস উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আলফাডাঙ্গা টিম রবিবার উপজেলা হল রুমে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেখানে আমরা আওয়ামিলীগের নেতাকে দাওয়াত করিনি, অভিভাবক হিসাবে অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন। আপনারা সাংবাদিকরা এ ঘটনাকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করবেন না।
ফরিদপুরে ৫ আগস্টের আগে টানা আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করা এবং  আওয়ামিলীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের হামলার শিকার হওয়া একাধিক ছাত্র প্রতিনিধি সূত্রে যানা যায় এমন কোন কমিটি তারা আদৌ আলফাডাঙ্গা সহ ফরিদপুর জেলায় কোথাও নেই এবং বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামেও এদের কোন অংশ গ্রহণ নেই।
ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি সোহেল রানা জানান, যেহেতু জেলা কমিটি হয়নি সুতরাং এ কমিটির ব্যাপারে আমরা কিছু জানিনা তবে যারা এমন কাজ করেছে তারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামিলীগের দোসরদের প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে আওয়ামিলীগ নেতা মোনেয়েম খান আলফাডাঙ্গা থানায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেড়া এবং কটুক্তি করা নিয়ে একটি মিথ্যা  মামলা দিয়ে বহু মানুষকে ফাসিয়ে জেল খাটিয়েছিলো। তাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে স্টেজে পুরষ্কার দিতে দেখে সাধারণ শিক্ষার্থী সহ সকলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০২:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৭৯ জন দেখেছেন

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা অতিথি 

আপডেট : ০২:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদের  হল রুমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে  আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেনকে পুরস্কার বিতরণ করতে দেখা গিয়েছে।  সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এমন একটা ছবি ফেসবুকে দেখা মিলে। এ নিয়ে ফেসবুক ও সাধারণ মানুষের মূখে মূখে সমালোচনা ঝড় বইছে।
উপজেলা পরিষদের মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেরাত প্রতিযোগিতা, ইসলামী সঙ্গীত ও মেহেদী ডিজাইন স্কিল (শুধুমাত্র মেয়ে) প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
যানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে তারুণ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  হয়। পরে বিচারকদের মাধ্যমে প্রতি গ্রুপ থেকে সাতজন করে মোট ২১ জনকে ক্রেস্ট, সনদ ও আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করতে দেখা যায় ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেনকে। পুরষ্কার দেবার সময় অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের ওই নেতার পাশে স্টেজে আলফাডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রইস উদ্দিন সহ  মো. মুআজের নামের আরেক যুবককে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন-অর রশীদ, আলফাডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মুসফিক, রজিন ইসলাম, মো. মনিরুল, মাছুরা রহমান, মো. তালহা, তাসনিমসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
রইস উদ্দিন আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের ৮ নং মিঠাপুর পৌর সদরের বাসিন্দা, তিনি নিজেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একজন নেতা দাবি করে ইতিমধ্যে একটি কথিত কমিটি গঠন করে  এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ৷ ৫ই আগষ্টের  আগে রইসকে  আলফাডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী আন্দলোনের কোন কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এমনকি তাদের এই অনুমদিত কমিটির ব্যাপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে মোনায়েম খানের এই উপস্থিতিতে জন মনে ক্ষোভের দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে রইস উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আলফাডাঙ্গা টিম রবিবার উপজেলা হল রুমে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেখানে আমরা আওয়ামিলীগের নেতাকে দাওয়াত করিনি, অভিভাবক হিসাবে অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন। আপনারা সাংবাদিকরা এ ঘটনাকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করবেন না।
ফরিদপুরে ৫ আগস্টের আগে টানা আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করা এবং  আওয়ামিলীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের হামলার শিকার হওয়া একাধিক ছাত্র প্রতিনিধি সূত্রে যানা যায় এমন কোন কমিটি তারা আদৌ আলফাডাঙ্গা সহ ফরিদপুর জেলায় কোথাও নেই এবং বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামেও এদের কোন অংশ গ্রহণ নেই।
ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি সোহেল রানা জানান, যেহেতু জেলা কমিটি হয়নি সুতরাং এ কমিটির ব্যাপারে আমরা কিছু জানিনা তবে যারা এমন কাজ করেছে তারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামিলীগের দোসরদের প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে আওয়ামিলীগ নেতা মোনেয়েম খান আলফাডাঙ্গা থানায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেড়া এবং কটুক্তি করা নিয়ে একটি মিথ্যা  মামলা দিয়ে বহু মানুষকে ফাসিয়ে জেল খাটিয়েছিলো। তাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে স্টেজে পুরষ্কার দিতে দেখে সাধারণ শিক্ষার্থী সহ সকলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বাখ//আর