০২:৫৭ অপরাহ্ন, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে গভীর রাতে মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে এএসআই সোহেল রানা : পুলিশ এসে উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে পুলিশের এক এএসআইকে পেয়ে লাঠিপেটা করেছেন স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বুধবার সকালে ওই এএসআই নগরের মতিহার থানা হেফাজতে ছিলেন। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ওই এএসআইয়ের নাম সোহেল রানা। তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লার এক নারীর ঘরে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে লাঠিপেটা করা হয়। মারধর করা হয় ওই নারীকেও।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা ওই নারী এবং এএসআইকে নানা জেরা করছেন। জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোও হচ্ছে। ওই নারীকে এ সময় বলতে দেখা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর।’ আর এএসআই সোহেল রানাকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি কলমা করে বিয়ে করেছি।’
জেরার মুখে তিনি বলেন, তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। এই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলতে থাকেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদই হয়নি। ওই নারী বলতে থাকেন, স্বামীকে তিনি মুখে মুখে তালাক দিয়েছেন।
স্থানীয় আবু কালামের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। তাকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে অল্পবয়সী কয়েকজন লাঠি দিয়ে এএসআইকে পেটায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল মতিহার থানা এলাকায়। এএসআই সোহেল রানা মতিহার থানায় আছে। বিস্তারিত পরে বলব।’
মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, এএসআই সোহেল রানা থানা হেফাজতে আছেন। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
তবে ওই নারীর সঙ্গে এএসআইয়ের বিয়ে কিংবা বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালানোর বিষয়ে ওসি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
তিনি জানান, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি। তার বাড়ি ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চলে যান। স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না।
ওসি বলেন, ওই নারীর স্বামী যখন জেলে ছিলেন তখন এএসআই সোহেল রানা তিনটি অটোরিকশা কেনেন। অটোরিকশাগুলো সোহেল তার পূর্বপরিচিত ওই নারীর তত্ত্বাবধানে রাখেন। ওই নারীর ভাই এবং অন্য চালকেরা অটোরিকশাগুলো চালান।
ওসি আরও বলেন, সোহেল রানা মাঝে মাঝে ওই নারীর কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিয়ে আসতেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি ভাড়ার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। তখন ওই নারীর স্বামী স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসলেই কী ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলেও জানান ওসি।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৩:১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৯৬ জন দেখেছেন

রাজশাহীতে গভীর রাতে মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে এএসআই সোহেল রানা : পুলিশ এসে উদ্ধার

আপডেট : ০৩:১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রাজশাহীতে এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে পুলিশের এক এএসআইকে পেয়ে লাঠিপেটা করেছেন স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বুধবার সকালে ওই এএসআই নগরের মতিহার থানা হেফাজতে ছিলেন। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ওই এএসআইয়ের নাম সোহেল রানা। তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লার এক নারীর ঘরে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে লাঠিপেটা করা হয়। মারধর করা হয় ওই নারীকেও।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা ওই নারী এবং এএসআইকে নানা জেরা করছেন। জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোও হচ্ছে। ওই নারীকে এ সময় বলতে দেখা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর।’ আর এএসআই সোহেল রানাকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি কলমা করে বিয়ে করেছি।’
জেরার মুখে তিনি বলেন, তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। এই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলতে থাকেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদই হয়নি। ওই নারী বলতে থাকেন, স্বামীকে তিনি মুখে মুখে তালাক দিয়েছেন।
স্থানীয় আবু কালামের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। তাকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে অল্পবয়সী কয়েকজন লাঠি দিয়ে এএসআইকে পেটায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল মতিহার থানা এলাকায়। এএসআই সোহেল রানা মতিহার থানায় আছে। বিস্তারিত পরে বলব।’
মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, এএসআই সোহেল রানা থানা হেফাজতে আছেন। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
তবে ওই নারীর সঙ্গে এএসআইয়ের বিয়ে কিংবা বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালানোর বিষয়ে ওসি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
তিনি জানান, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি। তার বাড়ি ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চলে যান। স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না।
ওসি বলেন, ওই নারীর স্বামী যখন জেলে ছিলেন তখন এএসআই সোহেল রানা তিনটি অটোরিকশা কেনেন। অটোরিকশাগুলো সোহেল তার পূর্বপরিচিত ওই নারীর তত্ত্বাবধানে রাখেন। ওই নারীর ভাই এবং অন্য চালকেরা অটোরিকশাগুলো চালান।
ওসি আরও বলেন, সোহেল রানা মাঝে মাঝে ওই নারীর কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিয়ে আসতেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি ভাড়ার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। তখন ওই নারীর স্বামী স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসলেই কী ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলেও জানান ওসি।
বাখ//আর